X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মহার্ঘ ভাতা নাকি ইনক্রিমেন্ট?

শফিকুল ইসলাম
১৫ মে ২০২৩, ১৩:৩৪আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:১৪

এবারের বাজেটে কী থাকছে সরকারি কর্মচারীদের জন্য? মহার্ঘ ভাতা নাকি ইনক্রিমেন্ট? এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সরকারি কর্মচারীরা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন—মহার্ঘ ভাতা নয়, তারা ইনক্রিমেন্ট চান। অপরদিকে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—এবারের বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা- কমচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা থাকছে না। 

সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল যেন বিষয়টি বিবেচনায় নেয়—এমন অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।  

২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে শতকরা প্রায় ৪০ শতাংশ। সরকারি কর্মচারীদের প্রতি বছর বার্ষিক একটি ইনক্রিমেন্ট হিসেবে বেতন বেড়েছে মাত্র ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা। অথচ টাকার অঙ্কে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা বা তারও বেশি।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, সরকারকে ২০১৮ সালের সুপারিশ অনুযায়ী, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতিসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আপাতত তিনটি ‘বিশেষ ইনক্রিমেন্ট’ ও ‘নবম পে-কমিশন’ গঠনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিতে হবে। কারণ, বর্তমান বেতন স্কেলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের বাজেট আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের শেষ বাজেট। তাই এটাকে নির্বাচনি বাজেটও বলা যায়। ৮ বছর পর এবারের বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরস জন্য নতুন কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে সব মহলে আলোচনা হচ্ছে। তবে নতুন পে-স্কেল নয়, মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি নিয়ে চলছে এই আলোচনা। অনেকের ধারণা, নিবার্চনি বছরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য হয়তো কোনও সুখবর থাকতে পারে। সরকারপ্রধান হয়তো আলাদাভাবে সেটি ঘোষণা করবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কর্মচারীদের জন্য কোনও ঘোষণা আসতে পারে। সেটি হয়তো এখনই বলতে চাইছে না সরকার। বাজেটের কোনও একটি খাতে মহার্ঘ ভাতার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা হয়তো থোক বরাদ্দ হিসেবে রেখে দিতে পারে সরকার। বাজেটের পর আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসের দিকে হয়তো এ ব্যাপারে ঘোষণা দেবে সরকার। এর আগে যে কয়টি পে-স্কেল ও মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে, তা বাজেটের ঘোষণার দুই-তিন মাস পর ঘোষণা করা হয়। তবে ঘোষণা যে মাসেই হোক না কেন, ১ জুলাই থেকে তা কার্যকর করা হবে।

ব্যাখ্যা হিসেবে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বাজেটে এ খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা হয় না। অন্য কোনও একটি খাত থেকে এনে থোক বরাদ্দ  দেওয়া হবে।

এদিকে বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি বলেছে, তারা মহার্ঘ ভাতা নয়, ইনক্রিমেন্ট দাবি করছেন। সচিবালয়ে কর্মরত প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা মহার্ঘ ভাতা চান না। তারা চান, বছরে কমপক্ষে তিনটি ইনক্রিমেন্ট। তারা বলছেন, সরকারের দেওয়া পে-স্কেলের সঙ্গে মহার্ঘ ভাতা সমন্বয় হওয়ায় তারা এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে মহার্ঘ ভাতা এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কোনও উপকারে আসে না। এ কারণে ইনক্রিমেন্ট সুবিধা চেয়ে ইতোমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ২০১৯ ও ২০২১ সালে একাধিক আবেদন করেছেন তারা।

সুবিধাবঞ্চিত এই কর্মচারীদের ভাষ্য— এ পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে শতকরা প্রায় ৪০ শতাংশ। সরকারি কর্মচারীদের প্রতিবছর একটি বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট হিসেবে বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ৫০০ টাকা থেকে একহাজার টাকা। অথচ টাকার অঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা, বা তারও বেশি। এ ছাড়া বর্তমান বেতন স্কেলে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড সুবিধা না থাকায় কম বেতনভুক্ত কর্মচারীদের জীবন পরিচালনা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ বেতন-ভাতা নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি মন্ত্রিসভা কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সেই আলোকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০১৭ সালের মে মাসে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মহোদয়কে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি বেতন সুবিধাদি বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি সুপারিশমালা ২০১৮ সালের শেষের দিকে অর্থ বিভাগে পাঠায়। প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হলেও আজও তা কার্যকর হয়নি। ফলে আর্থিক সুবিধাবঞ্চিত হওয়ায় আমাদের অনেক কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে।’

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক সংকটের মুখে কৃচ্ছ্র সাধনসহ পাঁচ নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্যসব নির্দেশের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিবি) বাস্তবায়নের হার বাড়াতে মনিটরিং, বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ধরে রাখা, হুন্ডি প্রতিরোধ করে বৈধপথে রেমিট্যান্স বাড়ানো এবং গ্রামীণ উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া।  সম্প্রতি গণভবনে অনুষ্ঠিত বাজেট সংক্রান্ত বৈঠকে এসব নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বৈঠকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘভাতা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের সার সংক্ষেপ ওই সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গণভবন সূত্র।

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আজ খুলছে সরকারি অফিস
ঈদের ছুটি বাড়ছে না
সর্বশেষ খবর
গরমে মরে যাচ্ছে শাকসবজি গাছ, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা চাষিদের
গরমে মরে যাচ্ছে শাকসবজি গাছ, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা চাষিদের
টিভিতে আজকের খেলা (৩০ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৩০ এপ্রিল, ২০২৪)
রাজশাহীতে গরমে নাকাল প্রাণিকুল, মারা যাচ্ছে পাখি
রাজশাহীতে গরমে নাকাল প্রাণিকুল, মারা যাচ্ছে পাখি
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র বরখাস্ত
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র বরখাস্ত
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়