বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ ভোট প্রত্যাশা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে ইইউ-কে আশ্বস্ত করেছে।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ইইউ প্রতিনিধিরা এ আশা ব্যক্ত করেছেন। এদিন বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির অগ্রগতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জোটের রাষ্ট্রদূতরা বৈঠক করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে।
এ বৈঠকে ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে সুইডেন, স্পেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, ফ্রান্স ও জার্মানির মিশনপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে ইইউ রাষ্ট্রদূত জানান, সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি ও অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইইউভুক্ত রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তার টিম খোলামেলা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ‘নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে আমরা সামগ্রিক বিষয় জেনেছি। আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। প্রত্যাশা করি, পুরো বিশ্বও এটি দেখতে চায়।’
ইসির সঙ্গে বিদ্যমান পরিবেশ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি ‘না’ বলে মন্তব্য করেন।
পরে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, ইইউভুক্ত রাষ্ট্রদূতদের ৯ জনের প্রতিনিধিদল এসেছিলেন। ইইউ প্রতিনিধিরা এর আগেও একাধিকবার এসেছেন। সহসাই তাদের একটা এক্সপার্ট ইলেকশন টিম আসবে বলে জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে তাদের চার জনের এক্সপার্ট (ইলেকশন অবজারভার টিম) এসে গেছেন। তারা দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছেন। এরইমধ্যে আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে গেছে। এটা তো তারা জানতেন না, তারা আগেও এসেছেন। আমাদের কী কী অগ্রগতি হয়েছে তা জানিয়েছি।
গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে ইইউ প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘আমরা আগের মতো স্পষ্ট করে বলেছি—আমরা নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার, পিসফুল অ্যান্ড ক্রেডিবল যাতে হয়, সেটা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা তাদের জানিয়েছি, আমাদের নির্বাচন কমিশনাররা দুই সপ্তাহ ধরে জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে গেছেন। তারা প্রশাসন ও জনগণকে এ বিষয়গুলো অবহিত করছেন। যাতে প্রশাসন স্থানীয়ভাবে তাদের সব শক্তিকে সমন্বিত করে, যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনটা নিশ্চিত হয়।’
ইসির অবস্থানে ইইউ সন্তুষ্ট বলে বলে মনে করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের বক্তব্যে যত দূর বুঝেছি সন্তুষ্ট হয়েছেন। আমরা আমাদের যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, একটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা আইনগত ও সাংবিধানিকভাবে বাধ্য, সেটা খুব স্পষ্ট করে তাদের বুঝিয়েছি, আগেও বুঝিয়েছি। আমার বিশ্বাস আমাদের এ সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা, এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।’
রাজনৈতিক বিষয়ে কমিশন নিজেদের সম্পৃক্ত করবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন সিইসি। হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘পলিটিক্যাল সাইডটা আমরা বলেছি, রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি কোনও মতবিরোধ, বিভেদ, বিভাজন থাকে—সেখানে কোনোভাবেই আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না। আমরা নিজেরা সেখানে সম্পৃক্ত হতে পারি না।’