বিদ্রোহী গানের সুরে নজরুল যেমন মুক্তির পথ দেখাতেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তেমনি করে একই বিদ্রোহের সুরে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
শুক্রবার (১২ জুলাই) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ৬ নম্বর পূর্ব বাঙ্গরা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত বিশ্ব বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে ৬ নম্বর পূর্ব বাঙ্গরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শেখ জাকির হোসেন এবং উদ্বোধক হিসেবে সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরকার (কুমিল্লা-৩) উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মুরাদনগরের উপজেলা চেয়ারম্যান ড. আহসানুল আলম সরকার কিশোর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন এবং বিশ্ব বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাধাকান্ত সরকার উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, নজরুল স্বাধীন চেতনায় মানুষ হয়ে বাঁচবার উৎসাহ দিয়েছিল বাঙালি জাতিকে। ব্রিটিশ শাসনের জিঞ্জির ভেঙে মুক্ত আলোয় আলোকিত হওয়ার স্বপ্ন দেখেই তিনি সেদিন বিদ্রোহী কবিতা রচনা করেছিলেন। তিনি শিকল ভাঙার যে প্রচেষ্টা কবিতার মাধ্যমে নিয়েছিলেন তার ফলেই তিনি আমাদের জাতীয় কবি। এ জাতিকে মাথা তুলে দাঁড়াবার উদাহরণ হিসেবেই তিনি সারা জীবন আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
মন্ত্রী বলেন, নজরুলের বিদ্রোহের সুরে আন্দোলিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ স্বাধীনভাবে বাঁচবার সংগ্রামে সেদিন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তার কবিতায় মানুষ নিয়ে ভাবনা ছিল। বিদ্রোহী গানের সুরে নজরুল যেমন মুক্তির পথ দেখাতেন ঠিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তেমন করে একই বিদ্রোহের সুরে ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি এ দেশের মানুষের অধিকার চাই।
মন্ত্রী আরও বলেন, কবি নজরুলের পথ ধরে বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়ে গেলেন স্বাধীন সত্তায় বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাধীনভাবে স্বপ্ন দেখার অধিকার। বঙ্গবন্ধু কবি নজরুলকে হৃদয়ে এমনভাবে ধারণ করেছিলেন যে স্বাধীনতার পরে অবহেলায় পড়ে থাকা নজরুলকে খুঁজে বের করে স্বাধীন দেশে ফিরিয়ে আনলেন এবং জাতীয় কবির মর্যাদা দিলেন।
মন্ত্রী বলেন, নজরুলের যথার্থ মূল্যায়ন তখনই সম্ভব যখন আমরা আপাদমস্তক নজরুলকে চিনবো, আমরা নজরুলকে চর্চা করবো, আমাদের মননে, আমাদের সাধনায়, আমাদের মানসিকতায়, আমাদের কর্মপ্রেরণায় আমরা নজরুলকে ধারণ করবো। তাহলেই তার মূল্যায়ন আমরা সঠিকভাবে করতে পারবো। তিনি নজরুলের স্ত্রী নার্গিসের স্মৃতিবিজড়িত মুরাদনগরের এই স্থানকে ধরে রাখার উদ্দেশ্যে নজরুল-নার্গিস গবেষণাকেন্দ্র গঠনের প্রয়াস নেওয়ার আহ্বান জানান এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।