গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, আমরা এ পর্যন্ত ৪০ জন আহতকে সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককে পাঠিয়েছি উন্নত চিকিৎসার জন্য। কখনও টাকার দিকে তাকাইনি। আমরা যখন দায়িত্ব নিই তখন জানতাম না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কোথায় পাওয়া যায়। কিন্তু তড়িৎ গতিতেই এই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে আহতদের বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আমরা তাদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দিতে চেষ্টা করেছি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ডাক্তার এনে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রথম দিন বিকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক কার্য অধিবেশন শেষে ডিসিদের এসব কথা বলেছেন বলে জানান তিনি। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আজ জেলা প্রশাসকরা নানা রকম প্রশ্ন করেছেন। বিশেষ করে হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ সংক্রান্ত নানা সমস্যার কথা। সেসব সমস্যার মধ্যে কিছু কিছু সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা মনে হয়েছে সেটা হলো প্রতিরোধমূলক কিছু করা উচিত। এই যে হাইপার টেনশন, ডায়াবেটিস হচ্ছে এগুলোর কারণগুলো কী? কীভাবে হয়, মানুষকে কীভাবে সচেতন করতে পারি।
তিনি বলেন, ট্যোবাকো নিয়ে কী করতে পারি, ছোট ছোট বাচ্চারা ই-সিগারেটে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। সেগুলোকে আমরা কীভাবে প্রতিরোধ করতে পারি। আমাদের সেসব বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে।
নূরজাহান বেগম আরও বলেন, আহতদের কিছুটা অসন্তুষ্টি আছে, সেটা এক শতাংশও হবে না। যখন এক থেকে তিন সপ্তাহ বিছানায় পড়ে থাকে তখন তো একটা ট্রমা যায়। তারা গত ছয় মাস ধরে পা ভেঙ্গে, চক্ষু হারিয়ে বসে আছে। ফলে তাদের ট্রমাটা ওইভাবে চিহ্নিত করতে পারছি না। তবে এটা আস্তে আস্তে কমে যাবে। তাদের রিহেবিলিটেশন করার পরিকল্পনাও রয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যদের সমন্বয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা যদি আমরা করতে পারি তাহলে এগুলো আর থাকবে না।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে আমরা যা পেয়েছি তা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের মধ্যে কিছু জায়গায় অসঙ্গতি যেমন- জনবল, অবকাঠামো আছে কিন্তু কার্যক্রম নেই, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে সমস্যার কথা তারা বলেছেন। কিছু কিছু জায়গায় মেডিক্যাল কলেজের চাহিদা আছে, সেগুলো করার কথা বলেছেন। স্বাস্থ্যখাতে বৈষম্য দূর মন্ত্রণালয় একা করতে পারবে না, এখানে আমরা তাদের সাহায্য চেয়েছি। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, জেলা প্রশাসন এবং বিভাগীয় কমিশনার যদি সক্রিয়ভাবে সাহায্য করেন তাহলে আরেকটু ভালো স্বাস্থ্যসেবা আমরা দিতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, পাঁচ হাজার চিকিৎসক আমাদের প্রাথমিক স্তরেই প্রয়োজন। এছাড়া বিশেষজ্ঞ পদ এবং আধুনিক হাসপাতালের আমাদের পদের প্রয়োজনীয়তা আছে। পদ সৃষ্টি করার আর্থিক সিস্টেম একটি লম্বা প্রক্রিয়া। কিন্তু ইতোমধ্যে আমরা পাঁচ হাজার পদ সৃজনের কাজ শুরু করেছি। এই পদ যদি সৃষ্টি করে দিতে পারি তাহলে সমস্যার উত্তরণ হবে।