আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। নির্বাচন প্রসঙ্গে একটি গণমাধ্যমকে তিনি জানান, এ বিষয়ে তার অবস্থান আগের মতোই। দেশের ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণের অধিকার একটি নির্বাচিত সরকারেরই রয়েছে।
বুধবার (২২ মে) ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে অফিসার্স অ্যাড্রেসে নির্বাচনের বিষয়টি স্পষ্ট করেন তিনি। নির্বাচন ছাড়াও আরও অন্যান্য বিষয় নিয়েও কথা বলেন সেনাপ্রধান। এই বিষয়গুলোর মধ্যে করিডর, বন্দর, সংস্কারসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। ঢাকায় অবস্থানরত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন। অন্যান্য অঞ্চলে থাকা কর্মকর্তারা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
এ সময় সেনাপ্রধান মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর–সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর বিষয়ে সিদ্ধান্ত কেবল নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে এবং তা বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হতে হবে। এখানে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। যাই করা হোক না কেন, রাজনৈতিক ঐকমত্যের মাধ্যমে সেটা হতে হবে।’
‘মব ভায়োলেন্স’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা আক্রমণের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সেনাবাহিনী এখন আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। সংঘবদ্ধ জনতার নামে বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতা আর সহ্য করা হবে না।’
এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে দেওয়া নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনা ও বিতর্কের বিষয়েও কথা বলেছেন ওয়াকার-উজ-জামান।
সংস্কার প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, কী সংস্কার হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনও পরামর্শ বা আলোচনা করা হয়নি।
তবে তিনি এটাও বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব।’
সামনে ঈদুল আজহা। মানুষ যেন নিরাপদে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদ্যাপন করতে পারে, সে ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়েছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে আবারও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই এমন কোনও কার্যকলাপে যুক্ত হবে না, যা জাতীয় সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর। তিনি সব পর্যায়ের সেনাসদস্যদের নিরপেক্ষ থাকার এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন।