পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, অর্থনৈতিক করিডোর গঠনের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়, এ অঞ্চলের সব দেশই উপকৃত হবে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো যদি তাদের কৃষি, বনজ ও খনিজ সম্পদ বাংলাদেশে এনে প্রক্রিয়াজাত করে রফতানি করে, তাহলে উভয় দেশই লাভবান হবে। তবে এজন্য ভালো ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ অপরিহার্য।
সোমবার (২৬ মে) রাজধানীর বনানীতে শেরাটন ঢাকা হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অর্থনৈতিক করিডোর ও লজিস্টিকস উন্নয়ন: বিনিয়োগের সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স–বাংলাদেশ (আইসিসিবি) এবং এতে সহায়তা দেয় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
অধ্যাপক মাহমুদ বলেন, করিডোর গঠনের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় নতুন প্রকল্প নেওয়া সম্ভব নয়, আগের সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোতেই বরাদ্দ দেওয়া হবে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১ হাজার ২০০ উন্নয়ন প্রকল্প চলছে এবং এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে প্রায় পুরো বরাদ্দ ব্যয় হচ্ছে।
তিনি বলেন, অনেকে অভিযোগ করছেন যে শিক্ষা বা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে না, বরং অবকাঠামো খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বাস্তবে সরকার পুরানো প্রকল্পগুলোর ত্রুটি খুঁজে সংশোধন করছে এবং খরচ কমিয়ে সেগুলো শেষ করতে চাচ্ছে। আমরা কোনও সড়ক বা সেতু প্রকল্প মাঝপথে বন্ধ করে নতুন প্রকল্প শুরু করতে পারি না।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমাদের এখন টানেল আছে, কিন্তু সেখানে এখনও কোনও অর্থনীতি গড়ে ওঠেনি। অথচ সরবরাহের সম্ভাবনা বিশাল। আমরা চাই এই সক্ষমতাকে অর্থনীতির জোগানে কাজে লাগাতে।
তিনি বলেন, আমাদের রয়েছে মানবসম্পদ, আর্থিক সম্পদ, ঋণদাতা, অংশীদার ও অবকাঠামো। এই মুহূর্তে আমাদের অবস্থা ষাটের দশকের কোরিয়ার চেয়ে ভালো। এখন প্রয়োজন একটি কার্যকর দল, যারা আলাদা টেবিলগুলোকে সমন্বয় করে একত্রে কাজ করাতে পারবে।
সেমিনারে সরকারি কর্মকর্তা, অর্থনীতিবিদ, বিনিয়োগকারী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা করিডোর উন্নয়নের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।