২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস, বিশেষত ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৈদেশিক উৎস ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে বাজেট ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৯৯ হাজার কোটি টাকার চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ বেশি।
সোমবার (২ জুন) টেলিভিশনে প্রচারিত একটি পূর্ব ধারণকৃত বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।
বাজেট উপস্থাপনায় জানানো হয়, আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঘাটতির ৪৭ শতাংশ পূরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। গত অর্থবছরে এ হার ছিল ৪৪ শতাংশ।
অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (১২ মে পর্যন্ত) সরকারের নিট ব্যাংকঋণের পরিমাণ ছিল ৫৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা, যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৫৬.৬৮ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চলতি অর্থবছরের শেষে নিট ঋণ নির্ধারিত সীমার মধ্যেই থাকবে।
অপরদিকে, বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বৈদেশিক উৎস থেকে ৯৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে— যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকার চেয়ে প্রায় ৮.২ শতাংশ কম।
জাতীয় সঞ্চয়পত্র থেকেও সরকারের ঋণ গ্রহণ পরিকল্পনায় কাটছাঁট করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরে এ খাত থেকে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১০.৭ শতাংশ কম।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। এটি দেশের ৫৪তম এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রথম বাজেট।