X
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪
৩০ বৈশাখ ১৪৩১

রোয়ানুর আঘাতে উপকূল লণ্ডভণ্ড, নিহত ২৫

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২১ মে ২০১৬, ১৬:১৯আপডেট : ২২ মে ২০১৬, ১৪:৪৬

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানার পর উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করেছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ছে এই ঘূর্ণিঝড়। এ ঝড়ের প্রভাবে খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর বেশিরভাগ গ্রাম চার থেকে পাঁচ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। প্রচণ্ড দমকা ও প্রবল বৃষ্টিপাতে এ পর্যন্ত ২৫ ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে শনিবার চট্টগ্রামে ১২ জন, নোয়াখালীতে ৩ জন, ফেনীতে ১ জন, ভোলায় ৩ জন, কক্সবাজারে ৩ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন ও পটুয়াখালীতে আরও ১ জন নিহত হন। এছাড়াও রবিবার পটুয়াখালীতে আহত আরেক বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
রোয়ানু কবলিত নোয়াখালীর উপকূল এলাকা

অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধস, নৌকাডুবি, ঘর চাপা, গাছ চাপা ও দেয়াল চাপা পড়ে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

আবহাওয়া অধিদফতরের দুপুর ১২টার বুলেটিনে জানানো হয়েছে, উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ শনিবার দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১০০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে চট্টগ্রামের কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে এবং এরই মধ্যে উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ দুপুরে ছিল ঘণ্টায় ৬২ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে সাত নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রয়েছে। এছাড়াও উপকূলীয় জেলাগুলো এবং সাগরসংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলোতেও সাত নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রয়েছে। তবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এদিকে, রোয়ানু ঝড়ের প্রভাবে এরই মধ্যে সাগরবর্তী গ্রামগুলো ৪ থেকে ৫ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে গেছে। কুতুবদিয়া উপজেলার বেশিরভাগ অঞ্চল এ মুহুর্তে পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

আমাদের চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে, রোয়ানু’র প্রভাবে শনিবার সকাল থেকেই চট্টগ্রাম মহানগরীসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রবল দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে এরই মধ্যে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, শাহ আমানত বিমানবন্দর ও কর্ণফুলী ইপিজেড-এর কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। বেশকিছু এলাকায় গাছপালা উপড়ে গেছে। এদিকে ঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতে সীতাকুণ্ডে পাহাড় ধসে দুই ব্যক্তি ও ষোলশহর এলাকায় প্রবল বাতাসে উড়ে আসা ইটের আঘাতে আরেক পথশিশু নিহত হয়েছে।

সীতাকুণ্ডের জঙ্গলছলিমপুরে পাহাড় ধসে নিহতরা সম্পর্কে মা ও ছেলে। এরা হচ্ছেন কাজলা বেগম (৫০) ও তার ছেলে মো. বেলাল (১০)।

সীতাকুণ্ড মডেল পুলিশ স্টেশনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। একটি টিনশেড বাড়ির ওপর পাহাড় ভেঙে পড়ে কাজলা বেগম (৫০) ও তার ছেলে মো. বেলাল (১০) মারা যান। কাজলা বেগমের স্বামী রফিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা।

সকালে ঘুম থেকে উঠে পরিবারটিকে মটিপাচা অবস্থায় দেখে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয় বলে জানান সীতাকুণ্ড মডেল পুলিশ স্টেশনের সাব ইন্সপেক্টর মো. বেলায়েত উল্লাহ।

পৃথক ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১টার দিকে চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকার কাছে কর্ণফুলী-বাখরাবাদ গ্যাস অফিসের পেছনে। ঝড়ো বাতাসে ওই এলাকার একটি টিন শেড বাড়ি থেকে একটি ইট খুলে রাস্তায় পড়লে তা রকিব (১০) নামে এক পথশিশুর মাথায় আঘাত করে। গুরুতর আহতাবস্থায় অন্যরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

পাঁচলাইশ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল বাশার শিশুটি আহত হওয়ার খবর বাংলা ট্রিবিউনকে জানান। তবে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক জাহাঙ্গীর আলম।    

বাঁশাখালী উপজেলায় ৬ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামসুজ্জামান। জানা যায় বাঁশখালীর ছরুয়ায় একজন ও খানখানাবাদ উপজেলায় অবশিষ্ট পাঁচজন মারা গেছেন। গাছ ও দেয়ালচাপাসহ বানের পানিতে ডুবে এসমস্ত নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

রোয়ানুর প্রভাবে দিনভর বৃষ্টি

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরে ঝড়ে তাণ্ডবে গাছচাপা পড়ে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম আনারুল উল্লাহ (৫৫)।জেলার উত্তর তেওয়ারিগঞ্জে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাজ্জাদুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, হাতিয়া উপজেলার বয়ারচরের আলীবাজারে ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছচাপায় নিহত হয়েছেন মা মিনারা বেগম(৩১) ও মেয়ে রোমানা বেগম(১০)। সেইসঙ্গে হাতিয়ার জাহাজমারায় বানের পানিতে ডুবে মাহফুজা বেগম নামে অপর এক নারী মারা গেছেন। তার স্বামীর নাম সালাউদ্দিন। মৃত্যুর বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।

কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় দুইজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। দুপুর ১টার দিকে কুতুবদিয়ায় মাটির দেয়াল ধসে যাওয়ায় চাপা পড়ে মোহাম্মদ ইকবাল (২৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত ও উত্তাল সাগরে নৌকা উল্টে ফজলুল হক (৫০) নামে আরেক ব্যক্তি ভেসে গেছেন। এছাড়াও জলোচ্ছ্বাসে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন।

এছাড়াও ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে শতাধিক ঘর–বাড়ি বিধ্বস্ত ও গাছ-পালা উপড়ে গেছে। উপদ্রুত এলাকাগুলো থেকে স্থানীয়দের সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন।

ভোলা প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ে সেখানে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

নিহতরা হলেন, উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের শশিগঞ্জ গ্রামের রেখা বেগম (৩৫) ও একই এলাকার আকরাম (১৪)।

সাগরসংলগ্ন মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। সেখানে স্বাভাবিকের চেয়ে ২/৩ ফুট উচ্চতায় নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে । ভোলার ১৮টি চরের লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র আনা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক সেলিম উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন ।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সিপিপি উপপরিচালক মো. সাহাবুদ্দিন  জানান, শনিবার ভোর ৪টার দিকে তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ে ঘর চাপা পড়ে আকরাম গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৬টায় তার মৃত্যু হয়। রেখা বেগমকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। এছাড়া অন্তত ১০ জন আহত হন।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালীর দশমিনায় ঝড়ের কবলে বসতঘর চাপা পড়ে নয়া বিবি (৫২) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত নয়া বিবি দশমিনা সদর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামের বসিন্দা। ওই গ্রামে আরও অন্তত ১৫টি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানান ইউএনও। এদিকে, জেলার দুমকি উপজেলার উত্তর পাঙগাশিয়া গ্রামে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে রোয়ানু ঝড়ে ঘরের ওপরে গাছ পড়ে গুরুতর আহত হন কল্পনা রানী দাস (৭০)। রবিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তার। দুমকির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান এ কথা স্বীকার করেছেন।

কক্সবাজারের রোয়ানু-দুর্গতরা যাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে

বরগুনা প্রতিনিধি জানান, বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে নদ-নদীতে জোয়ারের পানির চাপ বেড়ে গেছে। এর ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙে বরগুনা সদর, তালতলী, আমতলী, বামনা ও পাথরঘাটার প্রায় ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের পানি ঢুকে ওই এলাকার বাড়ি-ঘর, কৃষি জমি ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। প্লাবিত এলাকার মানুষ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার বুড়িরচরের সোনাতলা, নলটোনা ইউনিয়নের নলটোনা, ছোটবালিয়াতলী, কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া, আয়লাপাতাকাট ইউনিয়নের বৈকালীন বাজার সংলগ্ন বেড়িবাধ ভেঙে গেছে। প্লাবিত গ্রামগুলো হচ্ছে, বরগুনা সদর উপজেলার মাঝের চর, ডেমা গুলিশাখালী, মানিকখালী, লবনগোলা, নাপিতখালী, পূর্ব বুড়িরচর। ঢলুয়া ইউনিয়নের নলী বন্দরের উত্তর পাশে বেরিবাঁধ ভেঙে নলী গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ডালভাঙা এলাকায় বেরিবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় দক্ষিণ ডালভাঙ্গা ও মাছখালী গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বান্দরগাছিয়া স্লুইস গেট না থাকায় ওই এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও, বেতাগী উপজেলার- দক্ষিণ কালিকাবাড়ি, আলিয়াবাদ, উত্তর কালিকাবাড়ি, ভোড়া, বেতমোড়, উত্তর বেতাগী, কেওয়াবুনিয়া, ঝোপখালী প্লাবিত হয়েছে।

আমতলী উপজেলার- বৈঠাকাটা, কুলুর চর, পূর্ব চিলা, পশ্চিম চিলা, উত্তর তক্তাবুনিয়া। এছাড়াও আমতলী পৌরসভার আম্মুয়ার চর পানিতে তলিয়ে গেছে।

তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভেঙে খোটকারচর, তেতুলবাড়িয়া, নলবুনিয়া, আশারচর, সখিনা ও আমখোলা এবং পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের কাকচিড়া, গুদিঘাটা, কালিকাবাড়ি, সিংরাবুনিয়া, বাইনচটকি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলি এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। তবে আবহাওয়া বৈরি হওয়ায় এলাকা পরিদর্শন করা যায়নি। আবহাওয়া ভালো হলে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ করা হবে। ভাঙনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরিদর্শনের পর এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড় 'রোয়ানু'র প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোর পাশাপাশি হওয়ায় চাঁদপুরও ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের নদী তীরবর্তী এলাকায় জরুরি মাইকিং করা হয়েছে। নদী তীরবর্তী চাঁদপুরের চার উপজেলা তথা চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় জরুরি সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসক। নদী তীরবর্তী এবং চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র এবং সাইক্লোন সেন্টারগুলো।

আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁদপুরে ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানাবৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। চাঁদপুর নৌ বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নদী পথে লঞ্চসহ সকল নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে গতকাল বিকেল থেকে চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে কোনও লঞ্চ ছেড়ে যায়নি এবং সন্ধ্যা থেকে ঢাকা সদরঘাট থেকেও কোনও লঞ্চ ছেড়ে আসেনি।

জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মণ্ডল জানান, জেলার ১০৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলা উপজেলা ছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরায় পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, শ্যামনগর উপজেলায় আইলাবিধ্বস্ত দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় রোয়ানুর প্রভাবে পাউবো বেড়ি বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে স্থানীয় গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জসহ উপকুলীয় ইউনিয়নগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সকল নদীতে প্রবল জোয়ার সৃষ্টি হয়। দুপুর ১টা নাগাদ জোয়ারের পানি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। এরই মধ্যে শুক্রবার  থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত এক টানা বৃষ্টি হয়।

উপকূলের সব কয়টি ইউনিয়নের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। এসব জায়গায় গাবুরা, পদ্মপুকুর ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্রের হাজার হাজার পরিবার ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আতঙ্কে আশ্রয় নিয়েছে।

সিপিপির সদস্যরা সারা রাত জেগে কাজ করে উপকূলের প্রায় ১৩ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে এনেছে। দুর্যোগের প্রাথমিক ধাক্কা আমরা কাটিয়ে উঠেছি। জেলা প্রশাসনের দফতরে পর্যাপ্ত টাকা বা চাল রয়েছে যা প্রয়োজনে আমরা সরবরাহ করবো। রোয়ানু মোকাবেলায় সিপিপি সদস্যরা সব সময় কাজ করছে এবং সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন:

'রোয়ানু' এখন উপকূলে, ৭ নম্বর সতর্কতা সংকেত 

বাগেরহাটে আশ্রয়কেন্দ্রে সাত হাজার অধিবাসী

১৬ জেলে নিয়ে পিরোজপুরে ট্রলার নিখোঁজ

রোয়ানুর প্রভাবে প্লাবিত চট্টগ্রাম, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ

কক্সবাজারে দুজনের মৃত্যু, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত

দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত রোয়ানু

 

 

/টিএন/এইচকে/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রাজধানীতে ট্রেনে কাটা পড়ে কিশোরের মৃত্যু
রাজধানীতে ট্রেনে কাটা পড়ে কিশোরের মৃত্যু
বাংলাদেশকে কাছে টানতে যখন ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই তৎপর
বাংলাদেশকে কাছে টানতে যখন ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই তৎপর
একই দিনে মনিকা ও সাগরিকার হ্যাটট্রিক
একই দিনে মনিকা ও সাগরিকার হ্যাটট্রিক
রানী হামিদকে ছাড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন আলো
রানী হামিদকে ছাড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন আলো
সর্বাধিক পঠিত
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
আমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
বাংলা ট্রিবিউনের দশম বর্ষপূর্তিআমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী হয়?
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী হয়?