বৃষ্টির পানি আর কোরবানির পশুর রক্ত মিশে রাজধানীতে যে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব নগরবাসীর স্বাস্থ্যেও পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এর নেতিবাচক প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে শিশুদের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, এমন এলাকাগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রিভেনটিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুরো ঢাকা শহরে এবার কোরবানির আগে-পরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণে ঢাকার বৃষ্টির পানি রক্তলাল হয়ে গেছে বলে আমরা বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পেয়েছি। এই রক্ত অল্প সময়ের মধ্যে পচে যাবে। পচে গেলেই সেখান থেকে জীবাণু জন্ম নেবে। আর এই জীবাণু পানিবাহিত রোগের বিস্তার ঘটাবে রাজধানীতে। এরমধ্যে অন্যতম হলো, টাইফয়েড, জন্ডিস, উদারাময় ইত্যাদি।’
ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, ‘মুম্বাইয়ের ভেন্ডিবাজার এলাকার ড. আসাদ নামের একজন চিকিৎসক এ ধরনের একটি গবেষণা করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, কোরবানির বর্জ্য ঠিকমতো পরিষ্কার করা না হলে এবং যেখানে-সেখানে কোরবানি দেওয়া হলে ওই অঞ্চলে ঈদের পরপরই সংক্রামক ব্যাধির বিস্তার ৩০-৩৫ ভাগ বেড়ে যায়। আমাদের দেশে এ ধরনের জরিপ না থাকলেও আমি মনে করি, এই কোরবানির সময় যেটা হলো এবং রক্তের যে বিস্তার ঘটলো, সেটার আফটার শক হিসেবে রোগবালাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।’
গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের চিকিৎসক রকিব উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই রক্তমাখা পানিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিশুরা। শিশুদের ত্বক খুবই স্পর্শকাতর। এই রক্তমিশ্রিত পানি শিশুদের শরীরে লাগলে চর্ম রোগ হওয়ার আশঙ্কা আছে। বড়রাও আশঙ্কামুক্ত নয়। তাদেরও চুলকানি, পানিফোড়ার মতো চর্মরোগ হতে পারে।’
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের নীতি বিশ্লেষক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বাংলা ট্রিবিউনক বলেন, ‘ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনের উচিৎ, যত দ্রুত সম্ভব এই জলাবদ্ধ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আমাদের মনে রাখতে হবে, এই জীবাণু পানির পাশাপাশি বাতাসেও ছড়াচ্ছে।’
/জেএ/এআরএল/