‘আমি ভালো আছি, সুস্থ আছি। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন আমি পুরোপুরি সুস্থ হতে পারি।’ শনিবার দুপুর সোয়া বারোটায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে গণমাধ্যমের সামনে সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার চাপাতির আঘাতে আহত খাদিজা আক্তার নার্গিস এসব কথা বলেন।
খাদিজা আক্তার নার্গিস আরও বলেন, ‘সেই সঙ্গে আমি স্কয়ার হাসপাতালকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই গণমাধ্যমকর্মী ভাই-বোনদের। আমি দেশবাসীকেও ধন্যবাদ জানাই।’ এর আগে হাসপাতালের কর্মীরা নার্গিসকে গণমাধ্যমের সামনে নিয়ে আসেন। এসময় নার্গিসের প্রধান চিকিৎসক নিওরো সার্জারির অ্যাসোসিয়েট কন্সালট্যান্ট ডা. এ এম রেজাউস সাত্তার ও মেডিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক ডা. মির্জা নাজিমউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
পরে স্কয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক ডা. মির্জা নাজিমউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনার সবাই জানেন এমসি কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে নৃশংসতার শিকার হতে হয়। সিলেটে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। তখন নার্গিসের যে অবস্থা তাতে তার বাঁচার সম্ভবনা ছিলো খুবই ক্ষীণ, শতকরা মাত্র ৫ শতাংশ। তারপর এখানে আমরা তার সার্জারি করি। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। তার দুই হাতেই অস্ত্রোপচার করা হয়। এখন তাকে সাভারের সিআরপিতে স্থানান্তর করা হবে। কারণ তার ফিজিওথেরাপি দরকার।’
নার্গিসের বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে মেডিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের এ পরিচালক বলেন, ‘সে এখন নিজে খেতে পারে, যেকোনও লেখা পড়তে পারে। সে ধরে ধরে হাঁটতে পারে। মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী যেহেতু তার জেনারেল নিউরোলজিক্যাল কন্ডিশন ভালো, তাই তাকে ডিসচার্জ করা এবং ভালো কোথাও রিহ্যাব ফিজিওথেরাপি দেওয়া দরকার।’
ডা. মির্জা নাজিমউদ্দিন আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তিনি নার্গিসের ব্যাপারে আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। আমরা তার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করছি।’
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নয়ন হয়েছে। তবে মানুষ এখনও অন্ধকারে আছে, তাই মিডিয়া কর্মীদের প্রতি দৃষ্টি আর্কষণ করছি, আপনারা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নের কথা তুলে ধরবেন।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন নার্গিস। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ৪ অক্টোবর ভোরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। ওই দিনই নার্গিসের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। তার অবস্থার উন্নতি হলে ১২ অক্টোবর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। নার্গিসের শ্বাসনালীতে সর্বশেষ অস্ত্রোপচার করা হয়। এ ঘটনায় তার বাদী হয়ে সিলেটের শাহপরাণ থানায় বদরুলকে আসামি করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। বদরুল হামলার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।
/জেএ/এমও/টিএন/