X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

উজান থেকে পানির ঢল

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
১৩ জুলাই ২০১৯, ১৩:১১আপডেট : ১৩ জুলাই ২০১৯, ১৩:৫৮

নীলফামারীতে বন্যা ভারত থেকে আসা প্রায় সব নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া প্রায় সব নদীতেই উজান থেকে আসা পানির প্রবাহ বাড়ছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেটের সব খুলে দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতে নদীগুলোর উৎসের কাছে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নদীর পানিও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধাসহ উত্তরের জেলাগুলোর লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের সব গেট

একটানা ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার (১৩ জুলাই) সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানির প্রবাহিত হচ্ছিল। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উজানের ঢল সামাল দিতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেটের (জলকপাট) সবই খুলে রাখা হয়েছে। এছাড়া তিস্তা বিপদসীমার ওপরে চলে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানের বাঁধগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।

এদিকে ঢলের পানিতে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকার প্রায় ১৫টি চর ও চরগ্রাম হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে তলিয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার পরিবারের ৭৫ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। তিস্তা ব্যারাজের সবকটি স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়েছে

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শৌলমারী বানপাড়ায় ডানতীর গ্রাম রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দা আশরাফ আলী জানান, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব আতঙ্কে আছি। এই বাঁধ ভেঙে শুধু বানপাড়ায় নয়, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের ২০ হাজারেরও বেশি পরিবারের ঘরবাড়ি তিস্তা নদীর পানিতে তলিয়ে যাবে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ‘বানপাড়া বাঁধ ৬০ মিটার পর্যন্ত ভাঙন পাওয়া গেছে। আমরা ১২০ মিটার পর্যন্ত এই ভাঙন রোধের চেষ্টা করছি। তবে এ বাঁধটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে রক্ষার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এর কাজ শুরু করা হবে।’

অপরদিকে, ডিমলা উপজেলার চরখড়িবাড়ি এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধটি তিস্তার পানির তোড়ে ভেঙে গিয়ে এলাকার দুই হাজার পরিবার নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।

লালমনিরহাটে রেড অ্যালার্ট

লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর দুই কূল ছাপিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। গত দুই দিন ধরে তিস্তার পানি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় হাতীবান্ধা উপজেলার গোড্ডিমারী ইউনিয়নে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজের উত্তর প্রান্তের ফ্লাড বাইপাস সড়কটি যে কোনও মুহূর্তে কেটে দেওয়া হতে পারে বলে জানান কর্মকর্তারা। এ কারণে তিস্তা ব্যারাজের আশপাশে এবং ফ্লাড বাইপাস সড়কটির উজানে ও ভাটিতে বসবাসকারী লোকজনসহ নদী তীরবর্তী লোকজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। একইসঙ্গে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কায় এই এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। দহগ্রামে বাড়ছে তিস্তার পানি

তিস্তায় পানি পরিমাপের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রশীদ বলেন, ‘তিস্তার পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যা ৪-৫ দিন স্থায়ী হতে পারে। পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনে ফ্লাড বাইপাসটি কেটে দিতে হতে পারে। এজন্য লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রশাসন সমন্বিতভাবে সবকিছু নিরাপদ করার চেষ্টা করছে।’

বিপদসীমার ওপরে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র

উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় চর ও দ্বীপ চরসহ নদী তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে সাতটি উপজেলার অর্ধ শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি  হয়ে পড়েছেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, শনিবার (১৩ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা নদীর পানি বাড়লেও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি (ছবি: ফোকাস বাংলা)

চিলমারীর প্রবেশ মুখে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে রমনা ইউনিয়নের হরিপুর এলাকার মহির প্রামাণিকের বাড়ির পাশের একটি সাব বাঁধ ভেঙে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজগর আলী সরকার। তিনি জানান, তার ইউনিয়নের বাসন্তিপাড়া, মাঝিপাড়া, রায়পাড়া, টোন গ্রাম, উত্তর রমনা, খেউনিপাড়াসহ অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় এসব গ্রামের বাসিন্দারা ইউনিয়নের ওয়াপদা বেরিবাঁধ, জোরগাছ ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রিয়াজুল জান্নাত মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।

কুড়িগ্রাম সদরের চর যাত্রাপুর, পোড়ারচর, কালির আলগাসহ যাত্রাপুর ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উমর ফারুখ জানান, ধরলা নদীর পানি বেড়ে তার ইউনিয়নে ধরলার উত্তর তীরবর্তী অংশের গ্রামসহ সারডোব, সাত কালোয়া, খামার হলোখানা এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কুড়িগ্রামে বন্যা

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ ভেঙে পড়েছে। চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভয়াবহভাবে পানি বাড়ছে। আমার ইউনিয়নের মশালের চর এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। এখন পর্যন্ত ইউনিয়নের প্রায় চার হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’

নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমান জানান, তার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাতটি ওয়ার্ডের সব গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। তিনি নৌকায় করে তথ্য সংগ্রহ করছেন বলে জানান এই চেয়ারম্যান।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বেড়ে কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের নদীগুলোর উৎসস্থলের ভারতীয় অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় উজানের ঢলে আগামী দুই-তিন দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।’

বাড়ছে যমুনা, করতোয়া এবং ঘাঘট নদীর পানিও

গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদের তিস্তামুখ ঘাটে পানি বেড়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা, যমুনা, করতোয়া, ঘাঘট নদীর পানিও বেড়েছে। তিস্তা ও ঘাঘট নদীর শহর পয়েন্টে পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। যেকোনও সময় কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর তীরবর্তী গাইবান্ধার চরসহ নিম্নাঞ্চলের অন্তত ২০টি গ্রাম ডুবে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। এসব এলাকার কাঁচা রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানিতে ডুবে গেছে ধানের বীজতলা, পাট, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের জমি। পানি বৃদ্ধি আর তীব্র স্রোতের কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে এরই মধ্যে চার উপজেলার অন্তত পাঁচ শতাধিক বসতভিটা ও আবাদি জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। গাইবান্ধায় বন্যা

পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার নদী তীরের অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবারের মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছেন। সবচেয়ে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, বেলকা, সদরের কামারজানি, গোঘাট, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি, উড়িয়া ও গজারিয়াতে। হুমকির মুখে রয়েছে শত শত বসতভিটা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, ফসলি জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। অনেকে তাদের সহায়-সম্পদ নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, গত কয়েক দিন ধরে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি অল্প অল্প বাড়লেও বৃহস্পতিবার থেকে পানি বৃদ্ধির হার বেড়ে গেছে। শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের তিস্তামুখ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা ও ঘাঘটের শহর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। আরও দুই-এক দিন পানি বাড়তে পারে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

ঢল আসছে উত্তর-পূর্ব দিক থেকেও

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলো দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি আসছে এবং বৃষ্টির কারণেও পানি বাড়ছে। সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি শনিবার (১৩ জুলাই) বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাবিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া জানান, শনিবার সকাল পর্যন্ত জেলার ১১টি উপজেলার ১৫ হাজার পরিবারের ৮০ হাজার লোক পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। জেলার বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর, জামালগঞ্জ, ধরমপাশা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। সুনামগঞ্জে বন্যা

সরেজমিন সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রাম পরিদর্শন করে আমাদের প্রতিনিধি জানান, গ্রামের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় মানুষের চলাচলে খুব অসুবিধা হচ্ছে। এছাড়া  প্রতিটি বাড়িতে পানি ঢোকায় গ্রামবাসী গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপদে আছেন। পানির কারণে তারা রান্না করতে পারছেন না। এ কারণে গ্রামবাসীকে শুকনো খাবার খেতে হচ্ছে।

এদিকে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কমলগঞ্জ উপজেলার পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রামপাশা এলাকায় ধলাই নদীর একটি স্থানে বাঁধ ভেঙে রামপাশা এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মনুর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও ধলাইর পানি বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমতে শুরু করেছে।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বাংলা ট্রিবিউনকে শনিবার দুপুরে বলেন, ‘টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে মনু ও ধলাই নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। তবে পানি নামতে শুরু করেছে। বন্যা মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।’ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত (ছবি: ফোকাস বাংলা)

অবিরাম বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বেড়ে বান্দরবানের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে বলে জানান বান্দরবানের মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান। সাঙ্গু নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলেও জানান তিনি। 

আগামী কয়েকদিন অব্যাহত ভারী বর্ষণের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে দেশে এরই মধ্যে বন্যা কবলিত ১০ জেলায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বন্যায় আক্রান্ত হতে পারে আরও নতুন নতুন জেলা। যেকোনও মূল্যে এই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর দফতর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কোনও অবস্থাতেই যেন বন্যায় কোনও লোক মারা না যান, খাদ্যে কষ্ট না পান বা কোনও দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক নজর রাখতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে বন্যাকবলিত এলাকায় প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন- 

পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে, তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খোলা

 
 
 
/এফএস/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা