X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খাদ্য নিরাপত্তায় যা করছে সরকার

জামাল উদ্দিন
১৫ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:১১আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:৩৩

 





গুদামে সংরক্ষিত খাদ্য শস্য

দুর্যোগে ও পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন করে বেশ কিছু উদ্যোগ ও কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে এরইমধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (প্রশাসন) নেতৃত্বে সংস্থা প্রধান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সমন্বয়ে মনিটরিং কমিটি এবং অতিরিক্ত সচিবের (বাজেট ও অডিট) নেতৃত্বে মনিটরিং সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এই খাদ্য নিরাপত্তার আওতায় শুধুমাত্র ধান, চাল ও গম সংরক্ষণের বিষয়টি রয়েছে।




খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্য ধারণ ক্ষমতা ২৭ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং রূপকল্প-২০২১ এর সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে আধুনিক খাদ্য গুদাম ও সাইলো নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করায় বর্তমানে দেশে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্য সংরক্ষণের বিদ্যমান ধারণক্ষমতা প্রায় ২১ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। আরও প্রায় ৫ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার আধুনিক খাদ্য গুদাম ও সাইলো নির্মাণের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রকল্প বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এছাড়া খাদ্যশস্যের সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়ানো এবং বিদ্যমান গুদামের ধারণ ক্ষমতা বজায় রাখতে নতুন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সারাদেশে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দেড় লাখ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন খাদ্য গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ৮টি বিভাগে ৫৪টি জেলার ১৩১টি উপজেলায় নতুন এক হাজার মেট্রিক টনের ৪৮টি ও ৫০০ মেট্রিক টনের ১১৪টি খাদ্য গুদাম নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আছে। এরইমধ্যে এই প্রকল্পের ৮২ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
দুর্যোগে এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে দেশে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে খাদ্য মজুত ক্ষমতা বাড়াতে ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ’ প্রকল্পটি প্রায় দুই হাজার কোটি ব্যয়ে জানুয়ারি ২০১৪ থেকে ২০২০ মেয়াদে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। দেশের ৮টি কৌশলগত স্থান- চট্টগাম, আশুগঞ্জ, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মধুপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল এবং মহেশ্বরপাশায় ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার ৮টি আধুনিক স্টিল সাইলো (গুদাম) নির্মাণ করা হবে। এরইমধ্যে এগুলোর ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের দুর্যোগপ্রবণ ১৯ জেলার ৬৩ উপজেলায় ৫ লাখ পারিবারিক সাইলো বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
সারাদেশে পুরাতন খাদ্য গুদাম মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণেও একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রায় ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ থেকে ২০২১ মেয়াদে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পটির আওতায় দেশের ৬২ জেলার ২১৪ উপজেলায় খাদ্য অধিদফতরের ২৩৭ স্থাপনায় প্রায় ৩ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার ৫৫০টি খাদ্য গুদাম মেরামত ও ২০টি নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
নিরাপদ খাদ্যের জন্য বাংলাদেশে খাদ্য সুরক্ষার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া হয় একটি প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ৫ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া নিরাপদ খাদ্য আইন বাস্তবায়নের জন্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নতুন উন্নয়ন প্রকল্প ও কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সারাদেশে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ২০০টি প্যাডিসাইলো (ধানের গুদাম) নির্মাণ করা হবে। খাদ্যশস্যের পুষ্টিমান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “প্রিমিক্স কার্নেল মেশিন ও ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্পটি এরইমধ্যে একনেকে পাস হয়েছে।
এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশন এসডিজি ম্যাপিং তৈরি করেছে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। জিরো হাঙ্গার বা ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অতি দরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু রয়েছে। সরকারি পর্যায়ে খাদ্য গুদামের ‘ফুড লস’ কমানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে।
দুর্যোগে ও সংকটে খাদ্যপণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লোকজন মনে করেন খাদ্যপণ্য মানেই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। পেঁয়াজও আমাদের। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আমরা শুধু নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে আমরা সকল খাদ্যের মালিক। যাকে আমরা বলি ফুড সেফটি। এখানে আমরা সব ফুডে আছি। আরেকটা হচ্ছে ফুড সিকিউরিটি। দু’টো ভিন্ন জিনিস। এই ফুড সিকিউরিটিতে থাকে দানাজাতীয় খাদ্যশস্য চাল ও গম। এ দু’টোতে আছি। আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করি। সরকার যে কার্যপ্রণালী বিধিমালা করেছে সেখানে কোন মন্ত্রণালয় কী কাজ করবে সেটা বলা আছে। বাজারে কীভাবে চাল ও গম পর্যাপ্ত করা যায় সেই কাজটা আমরা করি। সেজন্য নানা উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। সেগুলোর কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। যথাসময়ে সেসব কাজ শেষ হবে বলেও মনে করেন তিনি।

 

/ জেইউ/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী মিডফিল্ডারকে নিয়ে দুঃসংবাদ
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী মিডফিল্ডারকে নিয়ে দুঃসংবাদ
টেবিলে রাখা ‘সুইসাইড নোট’, ফ্ল্যাট থেকে দম্পতির মরদেহ উদ্ধার
টেবিলে রাখা ‘সুইসাইড নোট’, ফ্ল্যাট থেকে দম্পতির মরদেহ উদ্ধার
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ