পবিত্র ঈদের দিনেও বিষোদগারের রাজনীতি থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। মঙ্গলবার (২৬ মে) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) রজতজয়ন্তীর সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের এই বৈশ্বিক মহামারি শুধু বাংলাদেশে নয়, এর কারণে উন্নত দেশগুলো আজ নাস্তানাবুদ পরিস্থিতির শিকার। সেখানে মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। বেলজিয়ামের মতো দেশে মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশ। ব্রিটেনে ১৪, আমেরিকায় ৬, ভারতে ৩ দশমিক ২, পাকিস্তানে ২ শতাংশের বেশি, আর বাংলাদেশে এ হার ১ দশমিক ৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যদি খুবই খারাপ হতো, তাহলে মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের মতো আরও বেশিই হতো।’
মহামারি মোকাবিলায় ঐক্য দরকার উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ মহামারির জন্য বিশ্বের কোনও দেশই প্রস্তুত ছিল না। সব দেশে মহামারি মোকাবিলায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা চলছে। অন্য দেশে বিরোধী দল পরামর্শ দিচ্ছে, কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা করছে না। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ঈদের দিনেও বিএনপি সমালোচনা আর বিদ্বেষের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।’
ড. হাছান বলেন, ‘‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ঈদের নামাজ পড়ে তাদের ভাষায় ‘জিয়াউর রহমানের মাজারে’ দোয়া করে সরকারের প্রতি বিষোদগার করেছেন। আমি মির্জা ফখরুল সাহেবসহ যারা এ ধরনের সমালোচনা করছেন, তাদেরকে বলবো—এখন বিষোদগারের সময় নয়, আসুন আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করি।’’
ডিআরইউ’র ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে সংগঠনের সব সদস্যকে অভিনন্দন জানান মন্ত্রী। করোনা পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের জন্য করোনা টেস্টের পরীক্ষা বুথ স্থাপন, সুরক্ষা সামগ্রী সংগ্রহ ও বিতরণসহ নানা পদক্ষেপের প্রশংসা করেন তিনি।
ডিআরইউ’র মঙ্গল কামনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সবসময় সাংবাদিকদের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১১ বছরে দেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মাধ্যম তিনগুণ হওয়ার পাশাপাশি কয়েক হাজার অনলাইন সংবাদ পোর্টাল হয়েছে, যেগুলোর নিবন্ধন বিষয়ে দ্রুত কাজ চলছে।’
সহসাই অনলাইন সংবাদ পোর্টালের রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যেসব অনলাইন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে না, হীন উদ্দেশ্যে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায় ও নানা অনৈতিক কাজে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যেসব অনলাইন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে, গণমাধ্যম জগতে সত্যিকার ভূমিকা রাখছে, তারা রেজিস্ট্রেশন পাবে।’
ভুয়া সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদেরই ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বহু সময় আমাদের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়। এমন বেশ কিছু প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সমস্যা প্রতিকারে উদ্যোগ নেওয়া হয়।’
ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সহ-সভাপতি নজরুল কবীরসহ সভায় বক্তব্য রাখেন ডিআরইউ’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, রাজু আহমেদ ও মুরসালিন নোমানী প্রমুখ।