রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় লকডাউন চলাকালে মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। রাজাবাজারের আটটি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথের সাতটি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে। একটি পথ খোলা রাখা হবে স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের জন্য। আজ মঙ্গলবার (৯ জুন) রাত ১২টা থেকে এই লকডাউন শুরু হবে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা এবার দেখিয়ে দিতে চাই চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমরা মানুষকে বোঝাতে চাই, যদি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে করোনাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দেশের সব মানুষকে আমরা এটা বুঝিয়ে দেবো। এজন্য কঠোরভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
করোনার বিস্তার রোধে সরকার সাধারণ ছুটি দিয়েও কাজ হয়নি। কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন এলাকাকে রেড (লাল), ইয়েলো (হলুদ) ও গ্রিন (সবুজ) জোনে ভাগ করে লকডাউনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়।
স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, কোনও এলাকায় প্রতি এক লাখ বাসিন্দার মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০-৪০ জন হলে সেই এলাকা রেড জোন হিসেবে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। প্রতিটি এলাকা ম্যাপিং করে লকডাউন করা হবে। এটি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হবে। সফল হলে পরের সপ্তাহ থেকে সামগ্রিক পরিকল্পনা করে মাঠে নেমে পড়বেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব বিজয় তালকুদার বলেন, ‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রোগ যতদিন পর্যন্ত ছড়ানোর ক্ষমতা রাখে ততদিন লকডাউন রাখতে হবে। নরমালি তা ১৪ দিন হিসাব করা হয়। আমরা আপাতত ১৪ দিন চলাচল বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করবো। কিন্তু তারপরেও যদি দেখা যায় এটি নিয়ন্ত্রিত হয়নি তাহলে ২১ দিন পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। তবে এই সিন্ধান্ত দেবেন স্বাস্থ্য নিয়ে যারা গবেষণা করেন তারা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মূলত চারটি বিষয় দেখভাল করবো। জনগণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও সমন্বয়ের কাজও করবো। যেহেতু এখানে সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য বিভাগ, আইইডিসিআর, রাজনীতিবিদরা রয়েছেন, সবার সঙ্গে সমন্বয়ের কাজটিও আমরা করবো। এছাড়া মানুষকে ঘরে রাখার জন্য আমরা সচেতনতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মাইকিংও করবো।’
লকডাউন এলাকার ভেতরের বাসিন্দাদের জন্য দৈনন্দিন চাহিদার বিষয়টি কীভাবে ব্যবস্থা করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব দেখভাল করবে সিটি করপোরেশন। মেয়রের নেতৃত্বে স্থানীয় কাউন্সিলর ও তাদের লোকজন ব্যবস্থা করবেন। আমরা শুধু চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনের সময় এলাকা থেকে কাউকে বের হতে বা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এছাড়া এলাকার ভেতরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভ্যানে করে বিক্রি করা হতে পারে বলে জানা গেছে।