X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

২১ আগস্টের ঘটনা রাজনীতিতে বাড়িয়েছে অবিশ্বাস

এমরান হোসাইন শেখ
২১ আগস্ট ২০২০, ০৯:০০আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২০, ০৯:০০

গ্রেনেড হামলা একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি কালো অধ্যায়। বিশ্বে গণতন্ত্র চর্চাকারী যে কোনও রাষ্ট্রে  বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এ ধরনের বর্বর হামলার নজির বিরল। তৎকালীন বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রধানসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচালিত ওই ন্যাক্কারজনক ঘটনা দেশের রাজনীতিতে এক ধরনের স্থায়ী ‘অবিশ্বাসের’ জন্ম দিয়েছে। আর এই ক্ষত নষ্ট করে দিয়েছে রাজনীতির পারস্পরিক ন্যূনতম বোঝাপড়ার জায়গাটিও। মতপার্থক্য থাকলেও দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যে আগে  যে ধরনের সমঝোতার সম্পর্ক চলে আসছিল ২১ আগস্টের নৃশংস ঘটনার পর তা দৃশ্যত আর অবশিষ্ট নেই। বরং ঘটনার পরম্পরায় অবিশ্বাস বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার আগে ও পরের রাজনৈতিক ঘটনাবলী পর্যালোচনা করে এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলাপ করে এ জাতীয় তথ্য পাওয়া গেছে।

বিএনপি নেতৃত্বধানী চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হিংসার দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় আয়োজিত জনসমাবেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে সন্ত্রাসের শিকার হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। হামলার ধরন ও প্রচণ্ডতা থেকে এটাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, শেখ হাসিনা ও তার দলের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করাই ছিল ওই গ্রেনেড হামলা ও গুলিবর্ষণের উদ্দেশ্য। ভাগ্যগুণে নারকীয় গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেও আইভি রহমানসহ দলের ২২ নেতাকর্মী এবং তার দেহরক্ষীসহ মোট ২৪  নিহত হন। অভিযোগ আছে, ওই ঘটনার পর দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী  সেই রোমহর্ষক আলামত নষ্ট করে ফেলে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় ‍পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রত্যক্ষ মদতে ওই ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও  ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে হেন কোনও কাজ নেই, যা করেনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সাজানো হয় ‘জজ মিয়া নাটক’। এমনকি সংসদে দাঁড়িয়ে ভেনিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তোলা হয় খোদ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই।

পরে অবশ্য ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে তদন্তপূর্বক বিচার কাজ শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে নিম্ন আদালত গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দিয়েছে। এতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। রায়ে সরকারের কয়েকটি সংস্থার কয়েকজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি রায়ের পেপারবুক হাইকোর্টে এসেছে।

দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ২১ আগস্টের ঘটনার পূর্বাপর রাজনৈতিক অবস্থান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নানা বিষয়ে মতের অমিল থাকলেও গ্রেনেড হামলার আগে পর্যন্ত এই দুই দলের মধ্যে কিছুটা হলেও ইতিবাচক বোঝাপড়া ছিল। কিন্তু গ্রেনেড হামলার পর থেকে ক্রমান্নয়ে ওই বোঝাপড়ায় ঘাটতি তৈরি করে এবং তখন থেকে পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে— যেন একজন আরেকজনের নামই শুনতে চান না। অবশ্য রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে অবিশ্বাসের রাজনীতির সূত্রপাত ঘটেছে পচাঁত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার সময় থেকেই।

আশির দশকের  রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ-বিএনপি এক কাতারে দাঁড়িয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। ওই সময়ে দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে একসঙ্গে  বৈঠক করতেও দেখা গেছে। স্বৈরাচারের পতনের পরবর্তী গণতান্ত্রিক সরকারের সময় ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দুই দল একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও ওই সময়ে অনুষ্ঠিত তিনটি সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের রায় কার্যত প্রত্যেকেই মেনে নিয়েছে। এই সময় দুই নেত্রীকে সন্তানদের বিয়ের অনুষ্ঠানসহ একে অপরের পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যায়। তবে, পরবর্তীতে এ ধরনের সৌজন্যতা আর দেখা যায়নি। সর্বশেষ খালেদা জিয়া ২০০৯ সালের মে মাসে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া মারা গেলে সুধা সদনে যান সান্ত্বনা দিতে। অপরদিকে ২০১৫ খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটে যান খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে। তবে, নিরাপত্তাকর্মীরা খালেদা জিয়ার অফিসের গেট খোলেননি। এমনকি শেখ হাসিনা সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেও কেউ সৌজন্যতা দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেননি। ঘটনার সময় সেখানে বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা উপস্থিত থাকলেও তারা ভেতর থেকে বেরই হননি। সারাদেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দিয়ে বাসার পরিবর্তে রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থানকারী খালেদা জিয়া তখন ছেলে মারা যাওয়ার পরও চলমান আবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেননি। এর আগে ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর নির্বাচন ইস্যুতে সমঝোতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই খালেদা জিয়াকে ফোন দিলেও সৌজন্যমূলক ব্যবহার পাননি। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে সংলাপের জন্য গণভবনে আহ্বান জানালেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে।

এদিকে ১৯৯১ সাল থেকে প্রতিবছর ১৭ অক্টোবর সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সেনাকুঞ্জে দুই নেত্রীর মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ হলেও পরবর্তীতে তা কমতে থাকে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর খালেদা জিয়া সশস্ত্র বাহিনীর অনুষ্ঠানে যাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি ২০১২ সালের পরে আর সশস্ত্র বাহিনীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। ওই বছর তিনি সশস্ত্র বাহিনীর অনুষ্ঠানে গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি তার। এর আগে ২০০৯ সালে গেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার মুখোমুখি দেখা হয়। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে সংসদে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে একে অপরের অবিশ্বাসের রাজনীতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, একজন কোনও সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না।  অপরজন কোনও ভালো কাজেরও প্রশংসা করতে পারেন না। দুই দলের মধ্যে সম্পর্ক এমনই তিক্ত পর্যায়ে রূপ নিয়েছে যে, বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংক্রমণের মতো জাতির ক্রান্তিকালেও তারা মতপার্থক্য ভুলে জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারছেন না, বরং এই সময়কালেও তারা পরস্পর দোষারোপে ব্যস্ত রয়েছেন।

এসবের পরেও দুই নেত্রীর মধ্যে ঈদ উৎসব এবং বাংলা নববর্ষে পরস্পরের মধ্যে শুভেচ্ছা কার্ড বিনিময়ের সংস্কৃতি চালু ছিল। তবে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনও শুভেচ্ছা কার্ড তাকে দেননি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে— ‘একজন প্রধানমন্ত্রী কোনও সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন না।’ অপরদিকে কারান্তরীণ থাকায় খালেদা জিয়ার পক্ষে কার্ড দিয়ে বা অন্যকোনও উপায়ে শুভেচ্ছা জানানোর সুযোগ নেই।

অবশ্য দুই দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মৃত্যুতে শোক জানানো বা জানাজায় অংশ নেওয়ার সৌজন্যতা কিছুটা এখনও অবশিষ্ট আছে বলে দেখা যায়।

দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক অবিশ্বাস সৃষ্টি হওয়ার বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  ‘একটি দেশের রাজনীতিতে বিরোধী দল থাকবে, সরকারি দল থাকবে। আদর্শ ও দর্শন দিয়ে বহু রাজনৈতিক দল তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও একটি বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে দেশ চলবে। ২১ আগস্টের গেনেড হামলা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ওই বোঝাপড়ার জায়গাটিকে পঙ্গু করে দিয়েছে।’

১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আসার পরে কিছুটা হলেও বিশ্বাসের রাজনীতি থাকলেও ২১ আগস্ট তা নষ্ট করে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মটো হলো ব্যক্তিগত ও দলীয় মতপার্থক্য থাকলেও রাজনৈতিকভাবে দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করা। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্য থাকলেও একটি সম্পর্ক নিয়ে পরস্পর চলছিল। তারা এক সঙ্গে কাজও করছিল। কিন্তু ২১  আগস্ট তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপরে বড় ধরনের কুঠারাঘাত করা হলো। পেছন থেকে এমনভাবে ছুরি মারা হলো— যাতে দল দুটির মধ্যে পরস্পর বিশ্বাসের জায়গা থাকলো না। কারণ, একটি দলের প্রধানসহ শীর্ষ নেতৃত্বকে মেরে ফেলার চেষ্টা হলে বিশ্বাসের জায়গা তো থাকার কথাও না। এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতির জগৎ থেকে আস্থার বিষয়টি একেবরেই হারিয়ে গেছে।’

২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে দলের শীর্ষ নেতাসহ  হত্যার চেষ্টা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর আলামত নষ্ট করা, জজ মিয়া নাটক করে মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা আমরা দেখেছি। তবে রায়ে আমরা দেখলাম— তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা। এর অর্থ সরকারের সম্পৃক্ততা। কেউ স্বেচ্ছায় হোক ও অনিচ্ছায় হোক তাদের সম্পৃত্ততার অর্থ হলো রাষ্ট্র এর পেছনে সরাসরি জড়িত। রাষ্ট্র পরিচালিত সন্ত্রাসী ঘটনা পারিচালনা এটা চিন্তাই করা যায় না। যে দলটির প্রধানসহ শীর্ষ নেতাদের হত্যায় গ্রেনেড হামলা হয়, সেই দলের কর্মীদের অন্যদের বিশ্বাস করার তো কোনও কারণ থাকতে পারে না।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের ঘটনা। এই ঘটনাকে হালকাভাবে দেখার কোনও সুযোগ নেই। গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরস্পরের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে,  তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ওই ঘটনার পর থেকে বর্তমান রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে এটা দেখতে পাই। অবিশ্বাসের রাজনীতি এমন যায়গায় চলে গেছে যে, এক নেত্রীর সন্তান মারা যাওয়ার পর অন্য নেত্রী  সান্ত্বনা দিতে গেলে দরজা পর্যন্ত খোলেন না। একজন আরেকজনের অধীনে নির্বাচন করতে চান না। এমনকি একে অপরের ভালো কাজেরও প্রশংসা করতে চান না। সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার খবর পরদিন দৈনিক ইত্তেফাকে, ছবি সংগৃহীত আমরা এখনও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখতে চাই মন্তব্য করে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক বিবেচনায় না দেখে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে করে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। সব দলের উচিত হবে ঐক্যবদ্ধভাবে একটা অবস্থানে আসা, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। কারণ, রাজনীতিবিদরাই আমাদের পথ দেখাবেন। তাদের ওপরই আমরা আস্থা রাখতে চাই। রাজনীতিবিদরাই আমাদের জাতিকে নেতৃত্ব দেবেন। এই গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে অবিশ্বাস বলি আর কালো অধ্যায় বলি, ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা চাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনও একই ধরনের মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্যে যতই বিরোধিতা করুক না কেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভেতরে ভেতরে একটি বোঝাপড়া থাকে। সংসদীয় গণতন্ত্র এ রকম বোঝাপড়ার মধ্য দিয়েই অতিবাহিত হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনীতিতে বোঝাপড়ার জায়গাটি নষ্ট করেছে। আর ২১ আগস্ট বোঝাপড়ার কফিনে শেষ পেরেকেটি মেরে দিয়েছে।’

২১ আগস্টকে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে কালো অধ্যায় আখ্যায়িত করে এই ইতিহাসবিদ বলেন, ‘২১ আগস্ট ছিল ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতা। তদন্ত কমিশন গঠন করে ১৫ আগস্টের ঘটনার নেপথ্যের নায়কদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে ২১ আগস্ট দেখতে হতো না। আর নেপথ্যের নায়কদের যতদিন চিহ্নিত করা সম্ভব না হবে, ততদিন এ ধরনের ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাবে।’

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আসামি ধরতে গিয়ে ৩ পুলিশ আহত
আসামি ধরতে গিয়ে ৩ পুলিশ আহত
কৃষকের মুখে হাসি কপালে চিন্তার ভাঁজ
কৃষকের মুখে হাসি কপালে চিন্তার ভাঁজ
টিভিতে আজকের খেলা (৫ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৫ মে, ২০২৪)
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
সর্বাধিক পঠিত
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ