X
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
৩০ বৈশাখ ১৪৩১

‘বাংলাদেশ এগিয়েই যেতে থাকবে’

সাদ্দিফ অভি
১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ০৯:০০আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ২১:৩৮

জাতীয় স্মৃতিসৌধ

৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অর্জিত বাংলাদেশের ৪৯তম বিজয় দিবস আজ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ক্ষণগণনা শুরু হলো এইসঙ্গে। আর মাত্র ৩৬৪ দিনের অপেক্ষা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দেখেছিল স্বাধীন এক রাষ্ট্রের স্বপ্ন। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে সেই রাষ্ট্র এগিয়ে চলছে উদ্যম গতিতে। এই রাষ্ট্রের আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ আজ এক উজ্জ্বল পরিচিতি।

পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি লাভ হয়েছিল মহান বিজয়ের এই দিনে। বাঙালি জাতির জন্য এক অনন্য স্মৃতিবিজড়িত দিন ১৬ ডিসেম্বর। এদিন স্মরণ করা হবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, যাদের আত্মত্যাগে জন্ম নিয়েছিল বাংলাদেশ নামক এক ভূখণ্ডের। দেশকে স্বাধীন করার জন্য বাঙালি জাতিকে পাড়ি দিতে হয়েছে এক দীর্ঘ পথ। পশ্চিম পাকিস্তানিদের চরম নিপীড়ন, শোষণ আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে, যার যা কিছু আছে তা নিয়েই সংগ্রামের পথ দেখান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দরাজ কণ্ঠে হুংকার দিয়ে বলেছিলেন –‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকহানাদার বাহিনী। বাঙালির পাল্টা জবাবে যুদ্ধ স্থায়ী হয় ৯ মাস। দীর্ঘ ৯ মাসের এই সংগ্রামে প্রাণ হারায় ৩০ লাখ শহীদ। ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানো এবং দেশের বিপুল ক্ষতিসাধন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বাঙালি। ১৯৭১ সালের এই দিনে রমনা রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করেছিল হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে ‘বাংলাদেশ’। লাল-সবুজ পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরে বিজয়ী বাঙালিরা। সেই পতাকা উঁচিয়ে চলছে প্রগতির পথে বাঙালির অভিযাত্রা। প্রগতির পথ ধরে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ, আর বাংলাদেশের অদম্য এগিয়ে চলার স্বপ্ন দেখছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা।

দেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর লগ্নে নিজ নিজ চিন্তা এবং বাংলাদেশের কাছে তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন সমাজের বিশিষ্টজনেরা। বাংলাদেশের সংবিধান চারটি মূলনীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হচ্ছে- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

ভাষাবিদ এবং শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ রাষ্ট্র সম্পর্কে সংবিধানে যে চারটি মূলনীতি দেওয়া আছে সেই অনুযায়ী যেন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ে উঠতে পারে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

নাট্যজন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম মনে করেন, অন্ধবিশ্বাসের দিকে না ঝুঁকে তরুণদের নিজেদের মেধা-মনন দিয়ে বিচার করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি মাঠে নামছে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে। তারা যে ইস্যুকে কেন্দ্র করে নামছে তা নয়, তার উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে আমরা যে সরকার গঠন করেছি, দেশকে পরিচালনা করা হচ্ছে, সেটাকে পাল্টে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দেশে পরিণত করা। এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আমাদের জয়যুক্ত হতে হবে। দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রত্যাশা, আমাদের সন্তান এবং তাদের সন্তান যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলার মাটিতে বসবাস করতে পারে সেই পথ প্রশস্ত করা।

তিনি আরও বলেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছাকাছি চলে গেছে। সেই উন্নয়নের সুফল কারা পাবে সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে।

তরুণদের উদ্দেশ্যে হাসান ইমাম বলেন, মানুষ এগিয়েছে নিজের বুদ্ধি আর মেধা দিয়ে। একসময় মানুষ বন্যপ্রাণীর মতো ছিল, তারা আজকে শুভ জাতিতে পরিণত হয়েছে মেধা এবং মনন দিয়ে। আমরা যেন কোনও অন্ধবিশ্বাস না করি, আমরা নিজের বুদ্ধি দিয়ে বিশ্লেষণ করে যাতে কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে পারি।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা আশা করবো, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এবং স্বাধীনতার যে সূর্য উদিত হয়েছে সেটা আমরা বলবৎ রাখবো, যাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে এবং বিশ্বদরবারে স্থান করে নিতে পারবে। সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা আশা করি নিশ্চয়ই জাতি তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, তরুণদেরও সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। শিক্ষক এবং অভিভাবক যারা আছেন তারা যেন তরুণদের সেভাবে তৈরি করেন। যাতে করে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই পৃথিবীতে একটি উচ্চ স্থান দখল করতে পারে।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন রাষ্ট্রের বিরোধিতা করে যারা কার্যক্রম চালায় তারা মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমি একেবারেই স্বাধীন, মুক্ত, নারী অধিকার, শিশু অধিকার সবকিছুর প্রতিষ্ঠা দেখতে চাই। সেখানে এই ঘাতকরা থাকবে না। এরকম একটি দেশই চাই। সম্ভব না এটা, অসম্ভব একটি কল্পনা কিন্তু স্বপ্ন তো দেখতে হবে যেটা আগামীতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খুব ভালো একটা ফিজিক্যাল উন্নয়ন হয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু আমি মনে করি আমাদের অন্য জায়গাগুলোতে সরকারের এখন নজর দেওয়া উচিত। শিক্ষার দিক দিয়ে মাদরাসা শিক্ষায় নজর দেওয়া উচিত। এই উন্নয়নের মহাসড়ক ধরেই কিন্তু রাজাকার আলবদররা আমাদের ওপর গাড়ি চাপিয়ে আসবে। সুতরাং উন্নয়নে একটি দ্বিমুখী ব্যাপার আছে।

/এফএএন/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সিট দখল নিয়ে সংঘর্ষ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
সিট দখল নিয়ে সংঘর্ষ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
চীন সফরে গেছেন তিন বাম দলের নেতারা
চীন সফরে গেছেন তিন বাম দলের নেতারা
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
রিজার্ভ ডে সংকট: দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফাইনাল!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপরিজার্ভ ডে সংকট: দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফাইনাল!
সর্বাধিক পঠিত
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
আমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
বাংলা ট্রিবিউনের দশম বর্ষপূর্তিআমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী হয়?
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী হয়?