X
রবিবার, ১১ মে ২০২৫
২৮ বৈশাখ ১৪৩২

জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ড: উন্নত প্রযুক্তিতে যোগাযোগ রাখতো খুনিরা

জামাল উদ্দিন
২৬ মে ২০১৬, ০২:১১আপডেট : ২৬ মে ২০১৬, ১৯:৪৫

জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ড জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব তনয়ের খুনিরা একে অন্যের সঙ্গে উন্নতমানের সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান করতেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। প্রটেক্টেড টেক্সট ব্যবহারের ফলে তথ্য আদান-প্রদানের পর এক মিনিটের মধ্যেই তা মুছে যেত। প্রযুক্তির সহায়তায় সেসব মেসেজ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

খুনিদের গ্রেফতারের বিষয়েও আশাবাদী গোয়েন্দারা। রাজধানীর কলাগানে এ জোড়া খুনের ঘটনায় কুষ্টিয়া থেকে গ্রেফতার হওয়া শরিফুল ইসলাম শিহাবের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে গোয়েন্দারা এমন আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া খুনিদের শিগগিরই গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলেও মনে করছেন তারা। গোয়েন্দারা জানান, শিহাব কিলিং মিশনে অংশ না নেওয়ার দাবি করলেও খুনিদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। প্রথম দু’দফায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার তৃতীয় দফায় তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেন গোয়েন্দারা।  
গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যা পৌঁনে ছয়টার দিকে রাজধানীর কলাবাগানের উত্তর ধানমণ্ডির আছিয়া নিবাসের দ্বিতীয় তলার বাসায় ঢুকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ইউএসএআইডি’র কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান (৩৫) ও তার বন্ধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহবুব তনয়কে (২৫)। জুলহাজ সমকামীদের অধিকার-বিষয়ক সাময়িকী ‘রূপবান’-এর সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর তনয় লোকনাট্য দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে যাওয়ার সময় খুনিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা দু’টি অস্ত্রের মধ্যে শার্টার গানটি গ্রেফতার হওয়া শিহাবের বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দাদের। তবে অস্ত্রটি তার শ্বশুরবাড়ির এক নিকটাত্মীয় জুনায়েদকে প্রায় এক বছর আগে দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি। হত্যা মিশনে অংশ না নিলেও হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার বিষয়টি জানতেন বলেও গোয়েন্দাদের জানান। শিহাব গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, প্রায় দুই মাস ধরে এ জোড়া খুনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। খুনিদের সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য।

হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সমাকামিতা এবং সমকামীদের সংগঠিত করতে মূল ভূমিকা পালন করার কারণেই খুনিদের টার্গেটে ছিলেন জুলহাজ মান্নান। ঘটনার পর খুনিদের একজন যে ব্যাগ ফেলে গেছেন, সেই ব্যাগটি তদন্তে খুবই সহায়ক হিসেবে অনেক কাজে লাগছে। খুনিদের দুটি মোবাইল ফোন থেকেও তাদের অবস্থান ও যাদের সঙ্গে তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে দু’জন খুনিকে এরইমধ্যে শনাক্ত করা গেছে। একইসঙ্গে শনাক্ত করা খুনিদের অবস্থান জানারও চেষ্টা করছেন তারা।

জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তারা বিভিন্ন কৌশলে খুনিদের ধরার চেষ্টা করছেন। খুনিদের ধরতে ডিবি ও কাউন্টার টেরিরিজমের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

শিগগিরই খুনিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে সম্ভব হবে জানিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার হওয়া শিহাবের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তারা পেয়েছেন। তারা আশাবাদী অন্য খুনিদের গ্রেফতারে।

আরও পড়ুন- 

একরাম হত্যা মামলা: স্ত্রীসহ ৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

১৯ মানবতাবিরোধী অপরাধীর মামলার আদেশ ১৪ জুলাই

 

/এমএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম শক্ত হাতে দমন করা হবে’
‘নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম শক্ত হাতে দমন করা হবে’
খাগড়াছড়িতে সেনা অভিযানে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
খাগড়াছড়িতে সেনা অভিযানে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
চলে গেলেন মেলবোর্নের একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান 
চলে গেলেন মেলবোর্নের একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান 
ভাঙ্গায় রাতের অন্ধকারে তিন জনকে কুপিয়ে জখম, একজনের মৃত্যু
ভাঙ্গায় রাতের অন্ধকারে তিন জনকে কুপিয়ে জখম, একজনের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ