X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাকে মারধরের প্রতিশোধ নিতে বড় ভাইকে খুন

রাফসান জানি
১৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:৪৯আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:৫৩

ছোট ভাই সিফাতের হাতে নিহত বড় ভাই শিহাব

মাদকাসক্ত শিহাবুল ইসলাম খান শিহাব মাসহ পরিবারের লোকজনকে মারধর করতেন প্রায়ই। সম্প্রতি তিনি তার মাকে বেধরক মারধর করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কলেজ শিক্ষার্থী ছোট ভাই সিফাত খান কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেন শিহাবকে। গত বুধবার গভীর রাতে হত্যা করা হলেও শনিবার দুপুরে শিহাবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

রবিবার তার বাবা সিরাজুল খান আদাবর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

এরপর সন্দেহভাজন হিসেবে ছোট ভাই সিফাতকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন সিফাত।

আজ  (সোমবার) আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নিজের বড় ভাইকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।

আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে  নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও জোনের এডিসি ওয়াহিদুল ইসলাম ।

তিনি বলেন,‘বড়ভাইকে হত্যা করার বিষয়টি আদালতে স্বীকার করেছেন সিফাত। শিহাব বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনকে প্রায়ই মারধর করতেন।তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন।  মেয়েদের নিয়ে বাসায় আড্ডা দিতেন। পুরোবাসা ছিল তার কাছে জিম্মি। পরিবারে তার জন্য একটা আতঙ্ক বিরাজ করতো। সম্প্রতি মাকে মারধর করায় তা সহ্য করতে না পেরে ছোট ভাই সিফাত বড় ভাই শিহাবকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। তারা দুভাই একই কক্ষে থাকতেন। পরবর্তীতে গত ১০ জানুয়ারি ভোর শিহাবকে রাতে গলা কেটে হত্যা করেন।’

মামলা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ১৪ জানুয়ারি আদাবরের প্রমিনেন্ট হাউজিংয়ে ২৪ নম্বর বিল্ডিং-এর তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট-৩ এর বাসা থেকে ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) শিক্ষার্থী শিহাবুল ইসলাম শিহাবের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ১০ জানুয়ারি ভোর রাতে হত্যাকাণ্ডের পর সিফাত বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যদের জানান। খুনের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তারা স্বপরিবারে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে চলে যান। সেখান থেকে শুক্রবার ফিরে আসেন। লাশ তখনও ওই কক্ষেই ছিল। শনিবার গন্ধ ছড়ালে তালা খুলে লাশ উদ্ধার করা হয়। এরই ফাঁকে পরিবারের সদস্যরা একটা গল্প সাজিয়ে নেন।

তারা পুলিশকে জানান, ছেলে মাদকাসক্ত ছিল। তাই বাড়ির বাইরে কোথাও গেলে তাদের সঙ্গে শিহাব যেত না। এবারও তারা মাদারীপুর গেলে তাদের সঙ্গে সে যায়নি। বাড়িতে সে একাই ছিল। শুক্রবার তারা বাসায় ফিরে এসে তার কক্ষ তালাবদ্ধ পান। শনিবার সকালে গন্ধ ছড়ালে তালা খুলে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।

লাশ উদ্ধারের দিন ঘটনাস্থলে শিহাবের মা শাহীনা সুলতানা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘মঙ্গলবার রাতে শিহাবের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছিল। এরপর বুধবার সকালে তারা একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মাদারীপুরের গ্রামের বাড়িতে চলে যান। সেখান থেকে শুক্রবার রাত ৯টায় বাসায় ফেরেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার শিহাবকে ফোন দেওয়া হলেও সে ফোন ধরেনি।’

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান জানান, ‘নিহতের বাবা সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে রবিবার মামলা করেন। সন্দেহভাজন হিসেবে ছোট ভাই সিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে,তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে নেন। পরবর্তীতে এ মামলায় সিফাতকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।’

আরজে/ এপিএইচ/

আরও পড়ুন: আদাবরে বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ