X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থাভাবে থেমে গেছে মুনতাসিরের চিকিৎসা!

তাসকিনা ইয়াসমিন
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:৫৯আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:০৫





মুনতাসির

রংপুর থেকে ঢাকায় আসার অর্থ জোগাড় করতে না পারায় থেমে গেছে কনজেনিটাল ডিজিজে আক্রান্ত শিশু মুনতাসির আহমেদের (৭) চিকিৎসা। সে এখন রংপুরে তাদের বাড়িতে আছে। মা মোমেনা খাতুন বলছেন, অর্থাভাবে ছেলের চিকিৎসা থেমে গেছে। তবে মুনতাসিরের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, ওর চিকিৎসা করাতে পরিবারেরই আগ্রহ কম।
মুনতাসিরের মা মোমেনা খাতুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ট্যাকা-পয়সা নাই। ওই ঢাকার পয়সা হামরা জোগবার দিতে পারি? তাই ঢাকা যাইবার পারি নাই। খালি ছেলেক তেল দেয়া হয়, এইটুকুই। আর কিছুই করবার পারি না।’
গত ডিসেম্বরে রংপুরের প্রাইম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. খাদিমুল ইসলাম লিপন ফেসবুকে মুনতাসিরকে নিয়ে একটি পোস্ট দেন। এরপর বেশকিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসার জন্য মুনতাসিরকে ঢাকায় নিয়ে আসে। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাজধানীর শমরিতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয়। এসময় তার চিকিৎসার পুরো দায়িত্ব নেন চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এম ইউ কবির চৌধুরী। প্রথম পর্যায়ের চিকিৎসা শেষে জানুয়ারিতে সে বাড়ি ফিরে যায়। দুইমাস পর ফলোআপে আসার কথা ছিল। কিন্তু তারা আর আসেনি।
এ প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক কাজী বাহার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মুনতাসির আসবে বলে আমি কবির স্যারের কাছে সময় নিয়েছি। তাদের আসতে বলেছি, কিন্তু আসেনি। কেন আসেনি তা তারা স্পষ্ট করে বলেনি।’
মোমেনা খাতুন বলেন, ‘মুনতাসির হাঁটতে পারে না। তাই স্কুল ভর্তি করবার পর আর যাইতে দিতে পারিনি। ছেলে স্কুলে যায় না দেখে আর ট্যাকা চাই না। একমাস স্কুল করেছিল। ডাক্তারে (লিপন) ওর স্কুলের ড্রেস, বই কিনে দিছিল। একমাসের টাকাও দিছিল। এখন স্কুলে যায় না দেখে টাকা চাই না।’
ডা. খাদিমুল ইসলাম লিপন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুই মাস পর তাদের ফলোআপ চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তারা সেভাবে রেসপন্স করেনি। যার কারণে চিকিৎসাটি থমকে গেছে। এই ছেলের রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, কিন্তু ফলোআপ চিকিৎসা ঠিকমতো না নিলে সেটি আর সম্ভব হবে না।’
মোমেনা খাতুন ছেলের রোগ সম্পর্কে বলেন, ‘মুনতাসির জন্মের পর ভালোই ছিল। তবে ছয় মাস বয়সে তার মাথায় খুশকি হয়। তার পুরো শরীরের চামড়া খুলে খুলে পড়ে। পায়ের তলার চামড়াও উঠে আসে। তার মাথার চুল কাঁচি দিয়ে ছাঁটতে হয়।’
ডা. কবির চৌধুরী রোগটি সম্পর্কে বলেন, ‘মুনতাসির ত্বকের গঠনগত সমস্যায় ভুগছে। রোগটি দূরারোগ্য। তবে নিয়ন্ত্রণ করে রাখা যাবে। অনেক সময় এই রোগ বয়ঃসন্ধিকালে ভালো হয়ে যায়।’
রংপুরের পীরগঞ্জ থানার ঠাকুরদাস লক্ষ্মীপুর গ্রামে মোমেনা খাতুনের বাড়ি। তিন বছর আগে কিনডি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন স্বামী মোস্তাফিজার। তিন সন্তান নিয়ে তার সংসার। বড় ছেলে মেহেদী হাসান গ্রাজুয়েশন করছেন। মেয়ে মিরাতুন নেসা নবম শ্রেণিতে পড়ছে।
কীভাবে সংসার চলে জানতে চাইলে মোমেনা খাতুন বলেন, ‘আল্লাহই টুকটাক করে সংসার চালাচ্ছেন।’

/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ