মুগদা জেনারেল হাসপাতালে শুধু বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভির সাংবাদিককে নয়, বরং গোটা সাংবাদিক সমাজকেই লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক নেতারা। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। দোষীদের বিচার না হওয়ায় বিভিন্ন সময় পুলিশসহ সন্ত্রাসীদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন সাংবাদিকরা।’ বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘আমরা সংবাদকর্মী’ ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) মুগদা জেনারেল হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আরটিভির সাংবাদিক সোহেল রানা ও ক্যামেরা পারসন নাজমুল হোসেন সায়মনের ওপর হামলা হয়। হাসপাতালের দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য সংগ্রহের সময় তাদের ওপর ওয়ার্ড বয় আসিফ ও সায়মনসহ বেশ কয়েকজন হামলা চালায়।
এ ঘটনায় সরকারি এই হাসপাতালের পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খানের পদত্যাগ ও দুই ওয়ার্ড বয়কে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক সমাজ।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার বলেন, ‘মুগদা হাসপাতালে এর আগে পাঁচ দিন বিদ্যুৎ ছিল ও পানি ছিল না। এমন অব্যবস্থার মধ্য দিয়ে একটা হাসপাতাল কীভাবে চলে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে গরীব রোগীরা চিকিৎসা নিতে যায়। সেখানে যদি অনিয়ম হয় তাহলে মানুষের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
হাসপাতালের অনিয়ম তুলে ধরা সাংবাদিকদের কাজ। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে প্রশ্ন তোলেন এই সাংবাদিক নেতা।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি সাখাওত হোসেন বাদশা বলেন, সাংবাদিকদের যেভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে তাতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সুযোগ কোথায়। তিনি বলেন, সাংবাদিক নেতারা আজ সরকার ও রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। কিন্তু সাংবাদিক সমাজে কেউ লাঞ্ছিত হলে তার পক্ষ নিচ্ছেন না। যে কারণে এমন হামলা হচ্ছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কথা বলতে গেলে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। অনিয়ম না থাকলে কেন বাধা দেবে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
মানববন্ধন থেকে জানানো হয় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেবে। এরপরে কোনও সমাধান না হলে আন্দোলনের ডাক দেবে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সদস্য খান মামুন প্রমুখ।