X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

চাঁদাবাজির অভিযোগে এশিয়ানের শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৫ জানুয়ারি ২০২১, ২৩:১৪আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ২৩:৩৭

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিভিন্ন মন্ত্রী ও এমপি’র নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে দু’টি আলাদা মামলা দায়ের করেছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। 

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১৭ জানুয়ারি প্রক্টর মোবারক হোসেন (পিটিশন নং- ৩৬/২১) এবং গত ২০ জানুয়ারি সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এম. আনিছুর রহমান (পিটিশন নং- ৪৭/২১) মামলা দুটি দায়ের করেন। 

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের পক্ষে তাদের আইনজীবী ফয়সাল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক আ স সামছ জুগলুল হোসেন মামলা দুটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এবং সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং উপাচার্যের নামে অপপ্রচার এবং মানহানিকর তথ্য প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে।’ 

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন রাজনীতিকের  নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ১৫ জানুয়ারি এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বিএসএস (অনার্স) ইন গভর্নমেন্ট অ্যান্ড পলিটিকস প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী মো. শামীম আহমেদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ফারুক আহমেদের সই করা চিঠিতে কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা তিন কর্মদিবসের মধ্যে জানাতে বলা হয়।

প্রক্টরের দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়,আসামি শামীম আহমেদ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের একজন ছাত্র। পরবর্তীতে তার বিভিন্ন অপকর্মের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সতর্ক করে। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে শামীম আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় এবং উপাচার্যের চরিত্র হননের চেষ্টা করেন। তার নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ‘শামীম আহমেদ’ এবং বেনামে ফেক আইডি ব্যবহার করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন। এতে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং উপাচার্যের সুনামসহ বিভিন্ন রকম ক্ষতি হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, গত বছর ২৫ অক্টোবর শামীম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন— ‘জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকুন।এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ নিন। ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না। হি হি হি হি।’   এরপর গত বছর ২৭ নভেম্বর শামীম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, ‘এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদেক ও মামুনুলকে গ্রেফতার করতে হবে।’

প্রক্টর মোবারক হোসেন মামলার অভিযোগে বলেন, ‘এতে তার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে এবং আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।’

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এম. আনিছুর রহমানের দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করেও এ প্লাস দেওয়ার জন্য বিভাগীয় শিক্ষকদের ওপর অব্যাহতভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। এতে শিক্ষকরা সম্মত না হওয়ায় শামীম আহমেদ ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অপপ্রচারে লিপ্ত হন।

ড. এম. আনিছুর রহমান জানান, মো. শামীম আহমেদের বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার পশ্চিম জালিয়াঘাটায়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীর ৩ নম্বর রোডের বি ব্লকে থাকেন।  তিনি বরগুনার মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং কারিগরি বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকায় এসে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হন। প্রকৃত অর্থে কোনও গণমাধ্যমের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। অন্যের লেখা ও সহায়তায় ‘শেখ হাসিনা ও ঘুরে দাঁড়ানোর বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি বইয়ের লেখক দাবি করে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা বাজি করেন শামীম। ’

ড.  আনিছুর রহমান জানান বলেন, ‘ধারা ফাউন্ডেশন নামে একটি ভূঁইফোড় সংগঠন গড়ে তোলেন  শামীম । প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দোহাই দিয়ে ওই বইয়ের ওপর সেমিনার আয়োজনের নামে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে থাকেন। সম্প্রতি এশিয়ান ইউনিভার্সিটির কাছ থেকে মোবাইল ফোনে ফান্ড দাবি করেছেন বইটির নতুন সংস্করণের জন্য।’

অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে এশিয়ানের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী শামীম আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।  মামলার অভিযোগ সত্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি পত্রিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি তুলে ধরেছি। সে কারণেই আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করার কোনও প্রমাণ নেই। অথচ শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের অভিযোগ করেছে।’  শামীম আহমেদ বলেন, ‘আমি কখনও ধূমপান করিনি, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগে বলা হয়েছে— আমি নাকি মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী।  আমার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে, আমি তার প্রতিবাদ জানাই।  আদালতে এই অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব নয়। বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে শিবিরের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা ফেসবুকে লিখেছি বলেই ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। ’/এসএমএ/এপিএইচ/

/এসএমএ/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
চট্টগ্রামে লরি চাপায় মৃত্যু বেড়ে তিন
রাজধানীতে রিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
রাজধানীতে রিকশাচালকের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, স্বামীর লাশ উদ্ধার
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া, স্বামীর লাশ উদ্ধার
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?