X
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চেক প্রতারণার মামলা ঝুলে থাকে বছরের পর বছর

বাহাউদ্দিন ইমরান
২১ এপ্রিল ২০২২, ১০:০০আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১০:০০

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সোমা। ১০ লাখ টাকার চেক প্রতারণার অভিযোগে এক বন্ধুর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে মামলা করেন। সেই মামলা এখনও ঝুলে আছে। মামলার একেকটি ধাপ পার হতে লেগে যাচ্ছে ছয় থেকে ৯ মাসের মতো। এক পর্যায়ে জবানবন্দি দেন সোমা। তাকে বিবাদী পক্ষের আইনজীবী জেরা করতে চাইলে ফের তারিখ পড়ে সাত মাস পরে।

চেক প্রতারণার মামলায় সোমার মতো অসংখ্য ভুক্তভোগী পড়েন পাল্টা ভোগান্তিতে। সৃষ্টি হয় মামলা জট। আবার মামলা চালাতে গিয়ে বাড়ে ভুক্তভোগীর খরচও।

নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট-১৮৮১ এর ১৩৮ ধারার অধীনে চেক প্রতারণার মামলা হয়। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে শুধু যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ মামলার বিচার করেন। 

উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি চেকের মামলায় তিনটি বিষয় বিবেচনা করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (চেক ইস্যুর ছয় মাসের মধ্যে) চেকটি ব্যাংকে নগদায়নের জন্য উত্থাপন করে প্রত্যাখ্যান হয়েছে কিনা, নির্দিষ্ট সময়ে বিবাদিকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কিনা এবং সঠিক সময়ের মধ্যে মামলা করা হয়েছে কিনা।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. জে. আর. খান রবিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দেওয়ানি মামলায় মামলা মুলতবির বিষয়ে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু ফৌজদারি মামলার বিচারের মুলতবির সময়সীমা নির্দিষ্ট নেই। ফলে এসব মামলায় দীর্ঘসূত্রিতা ঘটে।

তিনি আরও বলেন, আগে দায়রা জজ/অতিরিক্ত দায়রা জজ/যুগ্ম দায়রা জজ এ সব মামলার বিচার করলেও হাইকোর্ট বিভাগের একটি রায়ে শুধু যুগ্ম দায়রা জজ কর্তৃক এ সব মামলা বিচার্য্য হয়ে আসছে। মামলার আধিক্যের কারণেই লম্বা তারিখ পড়ে। কোনও মামলায় শুনানির জন্য বছরে দেখা যায় একটি মাত্র তারিখ ধার্য হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অবাক হওয়ার বিষয় হলো চেকের মামলা ১৩৮ ধারা অনুসারে খুবই সুনির্দিষ্ট। অথচ একেকটি মামলায় ৯ মাস পরের তারিখও পড়ে।

‘একটি মামলা শেষ হতে ৫/৬ বছরও লেগে যায়। এরপর জজ কোর্ট থেকে মামলা যাবে হাইকোর্টে। এভাবে প্রায় ১০ বছরও যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এত বছর পর মামলা করে বাদি টাকা পাবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে যারা চেক নিয়ে প্রতারণা করছে তারা এ দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগ নিচ্ছে।’

চেক প্রতারণার মামলা নিষ্পত্তিতে কোর্ট সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে মত রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির।

ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল্লাহ আবু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আগে বেশি সংখ্যক কোর্টে মামলা চলতো। এখন শুধু যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চেক প্রতারণার মামলার বিচার হয়।

‘মামলার সংখ্যাও এত বেশি যে নিষ্পত্তিতে সময় চলে যাচ্ছে। কোর্ট সংখ্যা বাড়ানোর আলোচনা চলছে। সরকার থেকে আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের মধ্যে আলোচনা চলছে।’

তিনি আরও বলেন, শুধু কোর্ট বাড়ালেই হবে না। বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের বসার জন্য স্থান সঙ্কুলান করে তবেই কোর্ট বাড়াতে হবে।

/এফএ/
সম্পর্কিত
আমির হোসেন আমুর খালাতো ভাই ডা. রাহাত কারাগারে  
ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ
ইশরাকের মেয়র পদে শপথ আটকাতে আপিলে যাবেন রিটকারী
সর্বশেষ খবর
দুই ঘণ্টা পর সাগরে ফিরে গেলো আহত ডলফিনটি
দুই ঘণ্টা পর সাগরে ফিরে গেলো আহত ডলফিনটি
বিএনপি উৎপাদন ও উন্নয়নে বিশ্বাসী: নজরুল ইসলাম খান
বিএনপি উৎপাদন ও উন্নয়নে বিশ্বাসী: নজরুল ইসলাম খান
জার্মানিতে ছুরি হামলায় ১৭ জন আহত, নারী আটক
জার্মানিতে ছুরি হামলায় ১৭ জন আহত, নারী আটক
চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় চলছে ব্যাপক কর্মব্যস্ততা
ঈদুল আজহায় ট্রেনযাত্রাচট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় চলছে ব্যাপক কর্মব্যস্ততা
সর্বাধিক পঠিত
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাসনিম জারা ও উমামার ফেসবুক পোস্ট
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাসনিম জারা ও উমামার ফেসবুক পোস্ট
অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, মরদেহে ছুরিকাঘাত
অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, মরদেহে ছুরিকাঘাত
গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ সেনাবাহিনীর
গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ সেনাবাহিনীর
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে বিমানবন্দরে নামা মাত্রই আ.লীগ নেতা গ্রেফতার, দাবি স্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে বিমানবন্দরে নামা মাত্রই আ.লীগ নেতা গ্রেফতার, দাবি স্ত্রীর
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না: বিশেষ সহকারী
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না: বিশেষ সহকারী