উজানে প্রবল ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী দুই দিন এই ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে দুই দিনে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এদিকে আজ শুক্রবার (১৭ জুন) দেশের তিন নদীর ৫ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। একই সময় বন্যা কবলিত হতে পারে নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি জায়গা।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, দেশের সকল প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি স্থানে মাঝারি থেকে ভারী এবং কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ সকল প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
আগামী ২৪ ঘন্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। আগামী ২৪ ঘন্টায় তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপদসীমার উপরে অবস্থান করতে পারে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি স্থানে স্বল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক আরিফুজ্জামান ভুইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, উজানে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে, এই কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। আগামী দুইদিন এই পানি আরও বাড়তে পারে। এতে পরিস্থিতি আরও কিছুটা খারাপ হতে পারে। শনি ও রবিবারের পর পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কেন্দ্র জানায়, সুরমা নদীর তিন পয়েন্টের পানি এখন বিপৎসীমার উপরে। এরমধ্যে কানাইঘাট পয়েন্টের পানি ৯৯, সিলেট পয়েন্টে পানি ২৫ এবং সুনামগঞ্জ পয়েন্টের পানি ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। এদিকে সারিগোয়ান নদীর সারিঘাট পয়েন্টের পানি ৩২ এবং সোমেশ্বরী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সিলেটের লালাখালে ২৮৩ মিলিমিটার। এছাড়া সিলেটের কানাইঘাটে ১১৫, জাফলংয়ে ১১৩, জকিগঞ্জে ৮৫, লাটুতে ৭০ এবং শেওলায় ৬৪ মিলিমিটার করে বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জে ১৮৬, ছাতকে ২০০, নীলফামারীর ডালিয়াতে ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে সর্বোচ্চ ৬৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া অরুণাচলের পাসিঘাটে ৭৩, আসামের ধুব্রি ও তেজপুরে ৬৯, আসামের গোহাটিতে ৪৯, শিলচরে ৫০, ত্রিপুরার কৈলাশহরে ৬৩, শিলংয়ে ৫০ এবং জলপাইগুড়িতে ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।