জাতীয় যুব পুরষ্কারপ্রাপ্ত কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা আমন্ত্রণ পেয়েছেন নেদারল্যান্ডসে আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার মেলায়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়েও ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতায় নেদারল্যান্ডসে যেতে পারলেন না তিনি। যদিও এ ঘটনা কাতার এয়ারওয়েজকে দুষছেন সোহাল রানা।
সোহেল রানা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করে কৃষি কাজ করছেন। বিশেষ করে আম নিয়ে তার উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে। ২০২১ সালে সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে জাতীয় যুব পুরষ্কার পান। গত দুই বছর আম উৎপাদন করে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে রফতানি করেছেন। বাংলাদেশের পক্ষে রাষ্ট্রীয় উপহার হিসেবেও তার আম অনেক দেশে গেছে। এই উদ্যোক্তাকে নেদারল্যান্ডসে আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার মেলায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার জন্য ভিসাও পেয়েছেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জিও এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এলওআই পেয়েছেন।
সোহেল রানা বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসের মেলায় বাগানের লেট ভ্যারাইটির কিছু আমের স্যাম্পল নিয়ে যাচ্ছিলাম বিদেশি বায়ারদের জন্য। আম রফতানি বাড়াতে অনেকের সঙ্গে বিজনেস মিটিং ছিল। আমাদের বাগানে এখনও এক মাস লেট ভ্যারাইটির আমগুলো থাকবে। নতুন নতুন জাত দিয়ে আম রফতানি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে, এই সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য সেখানে যেতে চেয়েছিলাম।’
সোহেল রানা বলেন, ‘আমি কাতার এয়ারওয়েজে ৫ আগস্টের ঢাকা-আমস্টারডাম টিকিট কিনি। ফ্লাইট ছিল ভোর ৪টা ২০ মিনিটে। ৪ আগস্ট রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসি। পাসপোর্ট, টিকিট, ভ্যাকসিন কার্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজ দেখিয়ে বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করি এবং ল্যাগেজ জমা দিয়ে ইমিগ্রেশনে যাই। ইমিগ্রেশনও হয়ে যায়। এরপর বিমানে ওঠার জন্য ৫ নং গেটে অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু কাতার এয়ারওয়েজের দায়িত্বরত স্টাফ আমার পাসপোর্ট দেখে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ করে পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস রেখে দিয়ে পাশে দাঁড়াতে বলেন। আমি তাকে জিও কপি, এলওআই, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্তির কথা বলি। তিনি শতশত যাত্রীর সামনে আমার সঙ্গে খারপ আচরণ করেন। ভিসা জালের কথা শুনে আমি ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে ছুটে আসি। তারা পুনরায় যাচাই-বাছাই করে আমাকে ভ্রমণের অনুমতি দিতে কাতার এয়ারওয়েজকে অনুরোধ করে। কিন্তু তারা না শুনে আমাকে ফেরত পাঠায়।
এ বিষয়ে কাতার এয়ারওয়েজের আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এয়ারলাইনটির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তার (সোহেল রানা) ভিসায় তারিখ ও ভিসা নম্বরের শেষের দুটি ডিজিট স্পষ্ট নয়। এ কারণে তাকে যেতে দেওয়া হয়নি। তিনি দূতাবাস থেকে এ বিষয়টি সংশোধন করলে যেতে পারবেন।’
ভিসার দুটি সংখ্যা ঝাপসা থাকার কথা স্বীকার করেছেন সোহেল রানা।