X
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২

আয়ের আশায় ঢাকায় দৃষ্টিহীন মনোয়ারা

আসাদ আবেদীন জয়
৩০ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩১আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৯:৩১

এই শহরে স্বল্প আয়ের কিংবা ভাসমান মানুষগুলোর জীবনের গল্প ভিন্নরকম। অন্য সব মানুষের মতো তারাও প্রতিদিন জেগে ওঠেন। কিন্তু তাদের জীবনের প্রতিটি দিনই সংগ্রামের, প্রতিদিন নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই করতে হয়। স্বপ্ন নিয়ে অনেকেই আসে শহরে। কেউ স্থায়ীভাবে বসবাস করতে, কেউবা আসে নিজের চাহিদাগুলো পূরণ করতে। স্বপ্ন আর পাওয়া না পাওয়ার লড়াইয়ে চলতে থাকে তাদের জীবন।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও স্টেডিয়াম সংলগ্ন মার্কেট এলাকা সরেজমিনে ঘুরে কথা হয় এমনই কিছু মানুষের সঙ্গে।

মনোয়ারা বেগম, বয়স ৬০। চোখে দেখতে পান না। বাড়ি ফরিদপুরে। রোজার শুরুতে ঢাকায় এসেছেন উপার্জনের আশায়। পরিবারে তার কেউ নেই। স্বামী মারা গেছে অনেক আগেই। বছর দুয়েক হলো তার একমাত্র ছেলেও স্ট্রোক করে মারা যায়। দৃষ্টিশক্তি না থাকায় কোনও কাজও কর‍তে পারেন না। তাই মানুষের সাহায্য নিয়েই চলছে তার জীবন-জীবিকা।

মানুষের সাহায্য করা টাকা ও খাবার দিয়ে চলে আমেনা খাতুনের জীবন

মনোয়ারা বলেন, পৃথিবীতে আমার স্বামী-সন্তান কেউই নেই। ফরিদপুরে বোনের বাড়িতে থাকি। ওরাই সব করে। কিন্তু নিজে কিছু করতে পারি না এটা নিজের কাছেই খারাপ লাগে, তাই রোজায় ঢাকায় আসছি। যদি কিছু উপার্জন হয়। আবার কেউ যদি দুই-একটা শাড়ি দেয় ওইটা দিয়া বছর চালায় নেয়া যাইবো। এখন রোজাও রাখতে পারি না।  ইফতারের সময় বায়তুল মোকাররম থেকে ইফতার দেয়, ওইটাই খাই। আর সারাদিন মানুষ যেই সাহায্য দেয়, ওই টাকা দিয়া খাবার কিনা খাই। ঈদের পরে বাড়ি ফিরা যামু।

ভ্যানচালক মো. ওহিদুল্লাহ বায়তুল মোকাররম মার্কেটে মালামাল পরিবহনের কাজ করেন। তিনি বলেন, ভ্যান চালাইয়া রোজা রাখা অনেক কষ্টের। তাও রাখি, রোজা তো আর মিস দেওয়া যাবে না। মার্কেটে বেচা-কেনা কম, তাই মালামালও বেশি টানতে পারি না। সকাল থেকে ভ্যান নিয়ে বইসা আছি, এখনও কোনও কাজ পাই নাই। ইফতারের সময় হলে আমরা কয়েকজন এক সাথে মিলে ইফতার করি। মসজিদ থেকে সবসময় ইফতার পাওয়া যায় না। তাই সবাই মিলা এই জায়গায় টাকা উঠায়া ইফতার করি, আর নাইলে বাসায় চলে যাই। পরিবারের সাথে ইফতার করি, টাকাও বাইচা যায়। এসময় তিনি দুঃখ নিয়ে বলেন, সরকার যদি জিনিসপত্রের দাম কমাইতো, আমাগো মতো মানুষের জন্য অনেক উপকার হইতো।

বয়সের ভরে নুয়ে পড়া আমেনা খাতুনের বয়স আশি। এখনও রোজা রাখেন বলে জানান তিনি। বাড়ি তার নেত্রকোনা। ঢাকায় থাকেন স্টেডিয়াম মার্কেটের করিডোরে। এই করিডোরেই তার দিন-রাত কাটে। মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে চলে তার জীবন। সেহরি-ইফতার চলে এই স্টেডিয়াম মার্কেট সংলগ্ন এলাকায়। সবাই মিলে টাকা দিয়ে সেহরি আর ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়। এভাবেই তার জীবন চলে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

 

/এমএস/
সম্পর্কিত
সাবেক এমপি শিল্পী মমতাজ গ্রেফতার
রাজধানীতে আ.লীগের আরও ৪ নেতা গ্রেফতার
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
সর্বশেষ খবর
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নৌ পথে ঈদযাত্রা ও পশুবাহী নৌযান নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ: অতিরিক্ত আইজিপি
নৌ পথে ঈদযাত্রা ও পশুবাহী নৌযান নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ: অতিরিক্ত আইজিপি
থাইল্যান্ডে গেছেন মির্জা ফখরুল
থাইল্যান্ডে গেছেন মির্জা ফখরুল
যুক্তরাজ্যের নতুন অভিবাসন নীতির তীব্র সমালোচনা: নার্স, বিশ্ববিদ্যালয় ও এমপিদের শঙ্কা
যুক্তরাজ্যের নতুন অভিবাসন নীতির তীব্র সমালোচনা: নার্স, বিশ্ববিদ্যালয় ও এমপিদের শঙ্কা
সর্বাধিক পঠিত
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
আ.লীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতার আত্মসমর্পণ
আ.লীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতার আত্মসমর্পণ
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
পাকিস্তানে ভারত হামলা করলে সহায়তা করবে বালুচ লিবারেশন আর্মি
পাকিস্তানে ভারত হামলা করলে সহায়তা করবে বালুচ লিবারেশন আর্মি