পুরান ঢাকাকে নিরাপদ করতে এবং এখান থেকে অবৈধ রাসায়নিক গোডাউন সরাতে যা দরকার হবে সরকার তাই করবে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেছেন, পুরান ঢাকায় অনেক অবৈধ রাসায়নিক গোডাউন আছে। মানুষ আর রাসায়নিক একত্রে থাকার কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়। তাই আমরা শ্যামপুরে একটি অস্থায়ী রাসায়নিক গোডাউন নির্মাণ করেছি। এর আগে আমরা টঙ্গিতেও অস্থায়ী গুদাম স্থাপনা করে দিয়েছি। এসব স্থানে ব্যবসায়ীরা ভাড়া দিয়ে সরাসরি ব্যবসা করতে পারবেন। এছাড়া মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে আরেকটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে সরকার শুধু জমি দেবে। আর ব্যবসায়ীরা সেই জমিতে নিজেদের মতো করে স্থাপনা করে নিতে পারবে।
রবিবার (৪ জুন) রাজধানীর শ্যামপুরে অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান দেশের সব মানুষ ভালো থাকুক। তার নির্দেশেই মানুষকে নিরাপদ রাখতে শ্যামপুরের গোডাউন নির্মাণ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের এই গুদাম ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এটি ব্যবহার করুন। আপনাদের জানমালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা চাই ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে। পুরান ঢাকার রাসায়নিক দ্রব্যগুলো স্থানান্তর করতে এই গুদামঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি আশা করবো রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন হবে। ব্যবসায়ীদের মতামত এখানে নিতে হবে। রাসায়নিক গুদামগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে।
তিনি বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাসায়নিক পণ্যর সব দোকানের মালামালগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে। তবে এই নীতিমালা যেন ব্যবসায়ী বান্ধব হয়। এখানে তারা গুদামে আসবেন, সে ক্ষেত্রে কিন্তু তাদের এখানেও বিনিয়োগ করতে হবে। তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, উৎসাহী হন। কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও যেন তাদের এখানে আসতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এমনভাবে যেন কোনও নীতিমালা করা না হয়, যাতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, পুরান ঢাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরের লক্ষ্যে রাজধানীর পুরান ঢাকার শ্যামপুরে ৬ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৪টি অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।