X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ছয় মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আসকের উদ্বেগ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৩ জুলাই ২০২৩, ২০:১৬আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৩, ২০:৪৬

গত ছয় মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, বেআইনি আটকের অভিযোগ, রহস্যজনক নিখোঁজ, সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন ও নিপীড়ন, সীমান্তে হত্যা, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বহুল আলোচিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। জানুয়ারি (২০২৩) থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি।

এসব বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সংগঠনটি বলছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা জরুরি। অন্যথায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায়। মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনা বাড়তে থাকে। নাগরিকের সব ধরনের মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দ্রুততার সঙ্গে নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে আসক।

আলাল উদ্দিন

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতারের পর পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আলাল উদ্দিন (৫০)। স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রাজধানীর বাউনিয়ায় ৫ জুন রাতে এক নারী খুনের ঘটনায় বাড়ির দারোয়ান আলাল উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ১০ জুন তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। সেখান থেকে ১৬ জুন সন্ধ্যায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। স্বজনদের অভিযোগ, ডিবি হেফাজতে নির্যাতনের কারণে আলাল মারাত্মক আহত হন এবং পরে মারা যান।

সুলতানা জেসমিন

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র‌্যাব) হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা ছিল বিদ্যমান আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করার আরেকটি অন্যতম উদাহরণ, জানায় আসক। প্রতিবেদনে তারা বলে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বেআইনি আটক ও নির্যাতনের অভিযোগগুলোর যথাযথ প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্ট ধারণা বাড়ছে।

আবুল কাশেম

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে র‌্যাবের গুলিতে আবুল কাসেম (৬৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও র‌্যাবের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। আসক জানায়, এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা কিংবা নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা উদঘাটনে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে পরিবার ও স্বজনদের পক্ষ থেকে।

সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানি

গত ছয় মাসে ১১৯ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় সর্বাধিক ২৯ জন এবং চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলার প্রতিটিতে ৮ জন করে সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

সাংবাদিক গোলাম রব্বানী

৭১ টিভির জামালপুর জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর গত ১৪ জুন রাতে তার পেশাগত দায়িত্ব শেষে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় এবং ব্যাপক মারধর করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ জুন তার মৃত্যু হয়। সাংবাদিকের ওপর এ ধরনের হামলাকে ‘অত্যন্ত ন্যক্কারজনক’ বলে উল্লেখ করে আসক। তারা বলে, পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রভাব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী, জবাবদিহি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকাকে সংকুচিত করে তোলে। সাংবাদিকের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা আগেও ঘটেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে গত দুই যুগে একজন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার বা শাস্তি নিশ্চিত করা যায়নি। গত ছয় মাসে কমপক্ষে ১১৯ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সাংবাদিক শামসুজ্জামান

প্রতিবেদনে আসক বলে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা হামলা মামলার শিকার হচ্ছেন। বিশেষত প্রথম আলোর সাভার প্রতিনিধি শামসুজ্জামানকে সিআইডি পরিচয়ে ভোর রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং দিনভর তাকে আটকের ঘটনা সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায়োগিক আচরণ যে অসঙ্গত ও বেআইনি তা প্রতীয়মান হয়েছে। এ ধরনের অমানবিক আচরণের অভিযোগ সাতক্ষীরা জেলায় কর্মরত সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে আটকের সময়ও পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছিল। রঘুনাথ খাঁকে আটকের পর পুলিশ দিনভর অস্বীকার করে প্রায় ৯ ঘণ্টা পরে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখায়। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের মামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিরোধ করে তুলতে প্ররোচিত করবে। এ ধরনের পদক্ষেপ প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত করবে, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে গত ছয় মাসে দায়ের করা ২৪টি মামলা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই ২৪টি মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৬০। এরমধ্যে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার হয়েছে ২৬ জন। এই ২৪টি মামলার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করার দায়ে রয়েছে ৫টি মামলা। যেখানে আসামি করা হয়েছে ৫ জনকে এবং তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জনকে।

হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি অবস্থায় জানাজায়

হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় বাবা-মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুর ও গাজীপুর জেলায়। আসক বলছে, রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কিংবা সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার কারণে যারা আটক বা গ্রেফতার হচ্ছেন, তাদের প্রতি এ ধরনের আচরণ শিষ্টাচারবহির্ভূত ও মানবাধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থি। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদে স্পষ্টত বলা আছে, বিচার বা দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না, কিংবা নিষ্ঠুর অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ডান্ডাবেড়ি পরানো সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনারও ব্যত্যয় ঘটেছে।

রাজনৈতিক সহিংসতা

আসকের হিসাবে, গত ছয় মাসে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মোট ১৭৯টি। এতে নিহত হয়েছেন ১৪ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৪২২ জন। ঢাকা জেলায় ৭টি ঘটনায় ১৯২ জন আহত হয়েছেন। বরিশাল জেলায় ১০টি ঘটনায় ১৩৯ জন আহত হয়েছেন। এরপর রয়েছে নারায়ণগঞ্জ। যেখানে ৯টি ঘটনায় ১ জন নিহত এবং ১১৯ জন আহত হয়েছেন। রাজনৈতিক সহিংসতায় নরসিংদী জেলায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। 

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে মৃত্যু

গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী গত ছয় মাসে দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ৬ জন নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের মধ্যে ৪ জন পুলিশের হাতে এবং ২ জন র‌্যাবের হাতে নিহত হয় বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ

গত ছয় মাসে পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগ অনুযায়ী, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ৬ জনকে অপহরণ করার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ৬ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বরাবরের মতো এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই ৬ জনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেআইনি আটক এবং আটকের পর দেশের প্রচলিত আইন অনুসরণ না করে (২৪ ঘণ্টার অধিক সময় পরে ও এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত হেফাজতে রেখে) গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে পরিবার ও স্বজনরা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।

সীমান্ত হত্যা

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে গত ছয় মাসে কমপক্ষে ১১ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে বলেও জানায় সংগঠনটি। একইভাবে আহত হয়েছে ১৪ জন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কার্যকরী উদ্যোগ হিসেবে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোয় রাতে যৌথ টহল পরিচালনার ব্যাপারে উভয় পক্ষ (বিজিবি ও বিএসএফ) সম্মত হয়েছিল। এছাড়া, আন্তসীমান্ত অপরাধ বন্ধের জন্য দুই বাহিনী পরস্পরের মধ্যে তাৎক্ষণিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রয়োজনে যৌথ অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে একমত হয়েছিল। এমনকি, ২০২২ সালের জুলাইয়ে ঢাকায় সীমান্ত সম্মেলনে সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে দুই দেশ পুনরায় একমত হওয়ার পরেও এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন

আসকের হিসাব অনুযায়ী, গত ছয় মাসে ৫টি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩টি বাড়িঘরসহ ১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ১৫টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১ জন নিহত ও কমপক্ষে ৬২ জন আহত হয়েছে। এ হামলার ঘটনায় ১০৩টি বাড়ি ও ৩৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।  

নারীর প্রতি সহিংসতা

যৌন হয়রানি ও সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যা, পারিবারিক নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, গৃহকর্মী নির্যাতনসহ নারীর প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে।

গত ছয় মাসে যৌন হয়রানি কেন্দ্রিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১৫৪ জন নারী-পুরুষ। যাদের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন ৭৯ জন নারী ও ৭৫ জন পুরুষ। এরমধ্যে বখাটেদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন ৬১ জন, বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে সংঘাতে আহত হয়েছেন ৭২ জন। যাদের মধ্যে যৌন হয়রানির কারণে ১০ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটের হাতে ৩ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ১ জন নারী ও ২ জন পুরুষ। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৯৪ নারী।

ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২০ জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে ৩ জন নারী। এছাড়া ৬৬ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ২৫৩ জন নারী। এরমধ্যে ১৫৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৫৯ জন নারী। এছাড়া শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩৮ জন নারী। যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৭৪ জন নারী। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ৩৪ জনকে এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন নারী। এরমধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩৭ জন। এ সময়কালে ১৩ জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ধর্ষণের তথ্য বিশ্লেষণ করে আসক জানায়, দেশের প্রায় সব জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সর্বাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ঢাকায় ২৭টি। এরপরই রয়েছে নারায়ণগঞ্জে ২২, চট্টগ্রামে ১৬ এবং বগুড়ায় ১৫টি।

শিশু নির্যাতন ও হত্যা

দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ছয় মাসে ৮০৪ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ১০৯ শিশু এবং একজন ছেলে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ৪৫ শিশু, বিভিন্ন সময়ে ৮৭ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৪ শিশুর। এছাড়া ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২৭ ছেলে শিশু এবং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৫ শিশুকে।

কারা হেফাজতে মৃত্যু

ছয় মাসে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৫১ জন। এরমধ্যে কয়েদি ২৪ জন এবং হাজতি ২৭ জন। এরমধ্যে ঢাকায় কয়েদি ৯ এবং হাজতি ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজীপুরে ৮ জন কয়েদি এবং ৩ জন হাজতির মৃত্যু হয়েছে।

গণপিটুনিতে নিহত

গত ছয় মাসে গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হন মোট ২৪ জন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, খুলনা বিভাগে ১ জন, বরিশাল বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন নিহত হয়েছে।

/জেইউ/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে জাতিসংঘে সমালোচনার মুখে তালেবান
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের’ কার্যক্রমের তদন্ত চায় মানবাধিকার কমিশন
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিমার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য রয়েছে
সর্বশেষ খবর
বাড্ডায় মনজিল হত্যা: সৎমা-ভাইসহ ছয় জনের মৃত্যুদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ
বাড্ডায় মনজিল হত্যা: সৎমা-ভাইসহ ছয় জনের মৃত্যুদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ
দুই আনক্যাপড ক্রিকেটারকে নিয়ে প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপ দল 
দুই আনক্যাপড ক্রিকেটারকে নিয়ে প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপ দল 
লাশের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন ও কঙ্কাল চুরি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে রুল
লাশের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন ও কঙ্কাল চুরি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে রুল
চার মামলায় বিএনপি নেতা সোহেলের জামিন, তবে কারামুক্তি মিলছে না
চার মামলায় বিএনপি নেতা সোহেলের জামিন, তবে কারামুক্তি মিলছে না
সর্বাধিক পঠিত
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
ফালুর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট অনুমোদন
ফালুর বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট অনুমোদন
১০ দিনে ভরিতে কমলো ৮ হাজার টাকা
সোনার দাম১০ দিনে ভরিতে কমলো ৮ হাজার টাকা