নিজেদের বাসস্থান ফিরে পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর সিটি পল্লীর বাসিন্দারা। রবিবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন পল্লীর ২৩০টি পরিবারের বাসিন্দারা।
মানববন্ধনে বাসিন্দাদের প্রতিনিধি আলী হোসেন পলাশ বলেন, ‘প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আমাদের ১৯৯০ সালে ১ নম্বর সিটি পল্লীতে থাকার জায়গা দিয়েছেন। আমরা সেখানে দীর্ঘ ৩৪ বছর যাবত বসবাস করে আসছি। হঠাৎ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আমাদের বিনা নোটিশে সেখান থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে, আমাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। আমরা আজকে আট মাস ধরে রাস্তায় বসবাস করছি। মেয়র বলেছিলেন— আমাদের পুনর্বাসন করবেন, তিনি এটি মাথায় রেখেছেন। কিন্তু কেউ আমাদের কোনও খোঁজ-খবর নেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষ, কেউবা ভিক্ষা করে বা অন্যের বাসায় কাজ করে অথবা গার্মেন্টসে চাকরি করে। আমাদের কেউ ঘর ভাড়া দিতে চায় না। আমাদের মানুষ ঘৃণার চোখে দেখে, আমরা এখন এতই তুচ্ছ। এখন মেয়র মহোদয়ের কাছে আমাদের একটাই দাবি— আমাদের সিটি পল্লীতে পুনর্বাসন করা হোক। আমরা খুব কষ্টে জীবনযাপন করছি। আমাদের জন্ম ৪৯ নং ওয়ার্ডে, আমরা সেখানেই থাকতে চাই।’
‘আমরা এখন ওই ভাঙা জায়গাতেই থাকি। কেউ কেউ ভাড়া বাসায় থাকতেছে। অনেকে ফ্লাইওভারের নিচে ঘুমায়। আবার অনেকে ওই ভাঙা জায়গাতেই কাগজ, পলিথিন দিয়ে ডেরা তৈরি করে থাকছে। রাস্তায় রান্না করে, রাস্তায়ই খায়, রাস্তায়ই ঘুমায়’, যোগ করেন তিনি।
মানববন্ধনে সিটি পল্লীর আরেক বাসিন্দা সুমি আক্তার বলেন, ‘আমাদের আজ এমন অবস্থা যে, আমরা নর্দমার থেকেও জঘন্য। আমাদের থাকার জায়গা নাই। আমরা চাই আমাদের থাকার জায়গা ফেরত দেওয়া হোক।’
মানববন্ধনে সিটি পল্লীর উচ্ছেদ হওয়া শতাধিক বাসিন্দা অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ঢাকার সায়দাবাদ, ধলপুরের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে সিটি পল্লী অবস্থিত। গৃহহীন কয়েকশ মানুষ সেখানে বসবাস করতেন। চলতি বছর ২ ফেব্রুয়ারিতে তাদের সিটি পল্লী ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেয় সিটি করপোরেশন। কেরানীগঞ্জে তাদের পুনর্বাসন করার কথাও জানানো হয়েছিল।