বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন উপলক্ষে ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড (বিটিবি)। চার দিনব্যাপী এই ফেস্টিভ্যাল শুরু হবে ২৭ সেপ্টেম্বর। চলবে থেকে ৩০ পর্যন্ত। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ আয়োজন করা হবে। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এর উদ্বোধন করাবেন।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে চার দিনব্যাপী ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে র্যালি হবে। বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালে এয়ারলাইন্স, হোটেল, রিসোর্ট, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ট্যুরিস্ট-ভেসেল, ট্রাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া অংশগ্রহণ করবে বিভিন্ন জেলার পর্যটন পণ্য ও সেবা প্রদানকারীরা। দেশব্যাপী পর্যটনের বিভিন্ন অফারও আয়োজন থাকবে এ উৎসবে। বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপনের জন্য আমরা প্রতি বছর নিয়মিতভাবে এ ধরণের আয়োজন করবো।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, ‘বাংলাদেশ ফেস্টিভালে হোটেল রিসোর্ট ২০টি, অঞ্চলভিত্তিক খাবারের স্টল ৭০টি, ডিস্ট্রিক্ট ব্রান্ডিংয়ের আওতায় ২৯টি জেলা, ক্রাফট স্যুভিনির ২৬টি, দুটি এয়ারলাইন্স, বিনোদন পার্ক, ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, ট্যুর গাইড, বিদেশি দূতাবাসসহ ১৬০টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। এ উৎসবে বিভিন্ন দেশের খাবারসহ বাংলাদেশের অথেন্টিক ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজন থাকবে। দেশি-বিদেশি ইউনিক ও অথেন্টিক খাবার সম্পর্কে জানার এবং উপভোগেও সুযোগ থাকবে উৎসবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে থাকবে জামতলার সাদেক গোল্লা, নকশি পিঠায় নরসিংদী জেলা, নাটোরের কাঁচা গোল্লা, কুষ্টিয়ার কুলফি, পুরান ঢাকার হাজীর বিরিয়ানি, বাকরখানি, মুক্তাগাছার মণ্ডা, চট্টগ্রামের মেজবান, খুলনার চুইঝাল, বিসমিল্লাহর কাবাব, কুমিল্লার রসমালাইসহ ৬৪টি জেলা থেকে ৭০টির বেশি ঐতিহ্যবাহী ফুড স্টল। এ উৎসবে তাঁত, জামদানি তৈরির প্রক্রিয়া দেখা যাবে। আমাদের ঐতিহ্য মসলিন পুনরুদ্ধার হওয়ার গল্প এবং মসলিন তৈরির প্রক্রিয়া প্রদর্শন করা হবে। আমাদের সবারই মসলিন দেখার অপূর্ব সুযোগ তৈরি হবে উৎসবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দর্শনার্থীদের আকর্ষণীয় ট্যুর প্লান তৈরি করতে এ উৎসব সহায়তা করবে। তারা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ইতিহাস, ঐতিহ্য, পুরাকীর্তি, পর্যটন সম্পদ সম্পর্কে জানতে পারবেন। প্রতিটি জেলার পর্যটন আকর্ষণের ছবি দেখার সুযোগ পাবেন।
বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে পর্যটক ও পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা, আবাসন, এভিয়েশন পর্যটন খাতে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা এবং পর্যটনশিল্পে নারীর অংশগ্রহণ, প্রত্নপর্যটন, খাদ্যপর্যটন, পর্যটন ও এভিয়েশন সাংবাদিকতা, প্লাস্টিক ফ্রি সেন্টমার্টিন বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। চার দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে গম্ভীরা, সিলেটের আঞ্চলিক গান, গাজী কালুর পট, পথ নাটা, বাউল গান, পুঁথি পাঠ, কাওয়ালি এবং বিশিষ্ট শিল্পীদের গানের আয়োজন।
উৎসবটি আয়োজনে আইএলও, স্পেলবাউন্ড, এয়ারলাইন্স, হোটেল, রিসোর্ট, এমিউজমেন্ট পার্ক, ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সহায়তা করছে। ফেস্টিভ্যালের টাইটেল স্পন্সর মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রাহাত আনোয়ার, পরিচালক জামিল আহমেদ প্রমুখ।