খাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট অনিরাপদ এবং হৃদরোগের অন্যতম কারণ। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। বাংলাদেশেও ট্রান্সফ্যাটের কারণে বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগ বিশেষ করে হৃদরোগে মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। ট্রান্সফ্যাটমুক্ত খাদ্য নিশ্চিতকরণে ‘খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১’ পাস করা হলেও এখনও তা কার্যকরী হয়নি। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রবিধানমালাটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট, হৃদরোগ ঝুঁকি এবং করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)।
ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল (পিএইচও), যা ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত। সাধারণত বেকারি পণ্য, প্রক্রিয়াজাত ও ভাজা পোড়া স্ন্যাক্স এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সড়কসংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে ডালডা ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ ওয়েবিনারে বলেন, ‘ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালাটির বাস্তবায়নে আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছি। কোম্পানিগুলোর কিছু প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা আছে। তবে আমরা আশা করছি, শিগগিরই এটির বাস্তবায়ন শুরু করতে পারবো।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘খাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটের সঙ্গে কেবল হৃদরোগ নয়, নানা ধরনের ক্যানসারেরও সম্পৃক্ততা রয়েছে। প্রবিধানমালার বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে আমাদের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে।
২০২৩ সালে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল ট্রান্সফ্যাট এলিমিনেশন প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারতসহ বিশ্বের ৪৩টি দেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সর্বোত্তম নীতি বাস্তবায়ন করলেও, বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে রয়েছে।’
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন– কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞার কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।