৪২৯টি ভুয়া গার্মেন্টস কারখানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওই কারখানাগুলোকে বিজিএমইএ’র ভোটার হিসেবে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে রুল জারি করা হয়েছে।
একইসঙ্গে অভিযুক্ত ভুয়া কারখানাগুলোর ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) ঠিক আছে কিনা তা যাচাইয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সহায়তা করার জন্য বলেছে হাইকোর্ট।
গার্মেন্টস মালিক ফয়সাল সামাদের দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান।
এর আগে, ৪২৯টি ভুয়া তৈরি পোশাক কারখানার অস্তিত্ব নিয়ে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ইতোমধ্যে ৬৭টি কারখানার নাম ওই নির্বাচনের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে নির্বাচনি আপিল বোর্ড। বাকি কারখানাগুলোর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন দেয় একটি পক্ষ। এফবিসিসিআই আরবিট্রশেন ট্রাইব্যুনালে গত ৩১ জানুয়ারি ভুয়া ভোটারের বিষয়ে আবেদন দেওয়া হলেও এখনও তা শুনানির জন্য আসেনি।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালের মহাসচিব বরাবর একটি তাগাদাপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ দেওয়ার পরও এ বিষয়ে কোনও শুনানি হয়নি। এমনকি এ বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা আদৌ নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়েও অভিযোগকারীকে কিছু জানানো হয়নি।
রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিজিএমইএ’র সদস্য হতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কারখানার টিআইএন নম্বর থাকতে হবে। রিটার্নও হালনাগাদ থাকতে হবে। যেসব কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলোর কারও কারও হয়তো কারখানা ছিল। তাদের অনেকে নানা কারণে ব্যবসার বাইরে আছেন।
তিনি আরও জানান, যেসব কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলো থেকে ৭০ থেকে ৮০ জনের নাম বিজিএমইএ নির্বাচনের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল বাদ দিয়েছে। এরপর সংক্ষুদ্ধ হয়ে রিটকারী এফবিসিসিআই এর ট্রাইব্যুনালে আপিল করেছেন। কিন্তু সেখানে তারা অপিল নিষ্পত্তিতে দেরি করছেন। এজন্যই রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটের প্রেক্ষিতে আদালত আজ এ আদেশ দিলেন। বিজিএমইএ বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক সংগঠন। এ সংগঠনের নির্বাহী কমিটিতে যারা যাবেন তারা যাতে বৈধ ভোটার দিয়ে নেতা নির্বাচিত হতে পারেন সেজন্য কোর্ট এসব আদেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ৯ মার্চ তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র নির্বাচন দিন ধার্য রয়েছে। নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে ভোটার তালিকা তৈরি হরা হয়। সে তালিকায় থাকা কয়েকজনের বিষয়ে সন্দেহ হলে ঘটনা সবার সামনে আসে।
এর আগে ৪২৯টি প্রতিষ্ঠানের নামে টিআইএন আছে কিনা তা পরীক্ষা করার দাবি তোলে একটি পক্ষ। তাদের অভিযোগ, সদ্য প্রকাশিত প্রাথমিক ভোটার তালিকায় থাকা ৪২৯ জনের কর প্রদানের তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি সংগঠনের নির্বাচন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর ওই ভোটারদের নাম ও করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সম্বলিত একটি তালিকাসহ আপত্তিপত্র দেওয়া হয়।