রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুই শিক্ষার্থী লামিশা ইসলাম ও নাহিয়ান আমিন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মৃত্যুতে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা শোকসন্তপ্ত। তাই এমন অযাচিত ও নৃশংস দুর্ঘটনায় আর কোনও প্রাণ যেন না হারায়, সেই আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
শনিবার (২ মার্চ) বেইলি রোডের আগুনে নিহত দুই শিক্ষার্থীসহ অন্যদের স্মরণে বুয়েট ক্যাম্পাসে দোয়া মাহফিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন।
মানববন্ধনে বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারসহ শিক্ষকদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। দোয়া মাহফিল শেষে বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন পালন করেন।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের ১৪ দফা দাবি
তাদের দাবিগুলো হলো—বেইলি রোডের অগ্নিদুর্ঘটনার মতো সব অসাবধানতাজনিত দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে; এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে; সব বাণিজ্যিক ও অন্যান্য ভবনে বিল্ডিং কোডসহ জরুরি সব কোড অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে কোনও কোড অমান্যকারী বা ঝুঁকিপূর্ণ বিল্ডিং ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া যাবে না; প্রতিটি ভবনের জন্য রাজউক থেকে দেওয়া নিরাপত্তা লাইসেন্স মেনে চলতে হবে এবং নিয়মিত মনিটর করতে হবে; বিল্ডিং কোড সম্পর্কে জানার জন্য দক্ষ জনবল এবং সেই দক্ষ জনবলের জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকতে হবে; গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডারগুলো একটি ভবনের প্রবেশের বা প্রস্থানের পথে/স্থানে রাখা যাবে না। গ্যাস সিলিন্ডারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকিপূর্ণ যেকোনও পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে হবে; প্রতিটি বাণিজ্যিক ভবনের অগ্নিব্যবস্থাপনা সিস্টেম নিয়মিত পরিদর্শন করতে হবে।
সব ভবনে অগ্নিনির্বাপণের জন্য জরুরি সামগ্রী এবং মার্কিং ও চিহ্ন যাতে সব সময় থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে; প্রতিটি বাণিজ্যিক কার্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পাবলিক ওয়েলফেয়ার সেন্টারগুলায় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের ব্যবহার ও প্রশিক্ষণ এবং ফায়ার ড্রিল বাধ্যতামূলক করতে হবে; প্রতিটি ভবনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক এবং প্রশস্ত ইমার্জেন্সি এক্সিটের ব্যবস্থা করতে হবে এবং নিরাপদভাবে প্রস্থান করার ব্যবস্থা রাখতে হবে; ইমার্জেন্সি এক্সিট ও সিঁড়িগুলো ফাঁকা, পরিষ্কার ও ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় রাখতে হবে, যাতে যেকোনও জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবহার করা যায়; ভবন ব্যবহারের প্রকৃতি (যেমন, আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক)। কোনও প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ ও অনুমোদন ছাড়া পরিবর্তন করা যাবে না; একই ভবনে স্বল্প জায়গা নিয়ে বানানো বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে; জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গাগুলো নিজ দায়িত্বে এড়িয়ে চলতে হবে।