পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, আর কোনও বন্য প্রাণী হারাতে চাই না। পাঠ্যবই ও এর বাইরে বন্য প্রাণী ও এদের আবাসস্থল সংরক্ষণে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে দেশব্যাপী ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়েছে। নানা কারণে আজ পরিবেশ সংকটাপন্ন। বন্য হাতির দল থেকে শুরু করে পাখি, এমনকি সাগরের তলদেশের প্রাণীরা হুমকির মুখে। গত ১০০ বছরে দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়েছে ৩১ প্রজাতির বন্য প্রাণী।
তিনি বলেন, বন্য প্রাণীর বিলুপ্তি ও বিপদাপন্ন হওয়ার ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য, যা মানুষের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বন্য প্রাণী ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করা এখন অপরিহার্য। তাই সব পেশার মানুষের এগিয়ে আসার পাশাপাশি কিশোর-কিশোরীদেরও সচেতন করতে ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়াড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ‘স্মার্ট তারুণ্য বাঁচাবে অরণ্য’ স্লোগানে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়াড-২০২৪-এর লোগো, পোস্টার, বুকলেট এবং ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন।
মন্ত্রী বলেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাড়াতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বন অধিদফতর বিভিন্ন সময়ে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের অধীনে দেশের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওয়াইল্ডলাইফ বা বন্য প্রাণী নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়াড-২০২৪-এর রেজিস্ট্রেশন।
পরিবেশমন্ত্রী জানান, এ বছর সারা দেশে লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ৬৪টি ভেন্যুতে জেলা পর্যায়ের অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে। দুটি ক্যাটাগরিতে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সব মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কারিগরি, মাদরাসা বা সমমান পর্যায়ের যেকোনও শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজ ক্যাটাগরিতে এই অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে পারবে। জেলা পর্যায়ের বিজয়ীদের নিয়ে ঢাকায় আয়োজিত হবে জাতীয় পর্যায়ের অলিম্পিয়াড।
সাবের হোসেন বলেন, বায়ুদূষণ রোধে ঢাকার আশপাশের ইটভাটা ভাঙা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বন সংরক্ষণের পাশাপাশি বন সম্প্রসারণ করার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণে সবার সহযোগিতা চাই।
বিজয়ীদের জন্য থাকবে লক্ষাধিক টাকার পুরস্কার। ৭ মার্চ থেকে শুরু হয়ে আগামী ১০ মে পর্যন্ত www.bfdwlo.org এই ঠিকানায় গিয়ে শিক্ষার্থীরা নিবন্ধন করতে পারবে। জেলা পর্যায়ের অলিম্পিয়াড হবে ১০ মে থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত। জেলা পর্যায়ের সব অংশগ্রহণকারী ই-সার্টিফিকেট পাবে। জেলা পর্যায়ের বিজয়ীরা টি-শার্ট, বিজয়ী সার্টিফিকেট ও মেডেল পাবে।
জাতীয় পর্বের বিজয়ীরা টি-শার্ট, বিজয়ী সার্টিফিকেট ও মেডেল পাবে। জাতীয় পর্বের প্রতি ক্যাটাগরির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিজয়ী পাবে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ ও উন্নয়ন) ড. ফাহমিদা খানম, বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক গোবিন্দ রায় প্রমুখ।