X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

তরুণীকে শিকলে বেঁধে যৌন নির্যাতন: ভিডিও যেতো বিদেশে

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০১ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৪২আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৫২

মাসুদ নামে এক আইনজীবীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এক তরুণীর। কিন্তু মাসুদের অনুপস্থিতিতে সান নামে এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় মেয়েটি। এ কারণে মাসুদ ক্ষিপ্ত হয়। প্রতিশোধ নিতে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সান ও তার বন্ধুদের দিয়ে ওই তরুণীকে শিকলে বেঁধে পৈশাচিকভাবে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালানো হয়। এতে সহযোগিতা করে সালমা নামে এক নারী। সে নির্যাতন ও বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও ধারণ করে বিদেশে অবস্থানরত মাসুদের কাছে পাঠাতো।

ওই তরুণীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ এসব তথ্য জানায়। সোমবার (১ এপ্রিল)  রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, রবিবার ( ১ এপ্রিল) রাতভর অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সান ও তার দুই বন্ধু হিমেল, রকি এবং সালমা ওরফে ঝুমুরকে গ্রেফতার  করা হয়।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন

ঘটনার বিবরণ দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ এবং পরে তারা অন্যত্র বিয়ে করায় ভুক্তভোগী তরুণী তার বড় বোনের বাসায় থাকতেন। সে সময় ভগ্নিপতির মাধ্যমে মাসুদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মাসুদের সঙ্গে লিভ টুগেটার করতেন ভিকটিম। তবে মাসুদ বেশিরভাগ সময় বিদেশে থাকতো। দেশে আসলে ওই তরুণীর সঙ্গে থাকতো। মাসুদের মাধ্যমে এক প্রবাসীর স্ত্রী সালমা ওরফে ঝুমুরের সঙ্গে পরিচয় হয় তরুণীর। এক পর্যায়ে সালমার সঙ্গে নবীনগরের ভাড়া ফ্ল্যাটে ওঠেন ওই তরুণী। যার সব খরচ বহন করতেন মাসুদ। পরে ঝুমুরের মাধ্যমে সান নামের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মাসুদ।

পরবর্তীকালে মাসুদ ভুক্তভোগী তরুণীকে শায়েস্তা করতে সানের সঙ্গে হাত মেলায়। সালমাকে টাকার প্রলোভন দিয়ে মাসুদ তার নির্দেশ মতো কাজ করায়। তরুণীর রুমে বসানো হয় গোপন ক্যামেরা। বিভিন্ন সময় সান ও তার বন্ধু হিমেল ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার দৃশ্য গোপনে ধারণ করে পাঠাতো মাসুদের কাছে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ভিডিও পাঠানো হয়।

ডিসি তেজগাঁও আরও বলেন, গোপনে ভিডিও করার বিষয়টি ভুক্তভোগী তরুণী জেনে যাওয়ায় তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। তরুণীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। হাত-পা ও মুখ বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন চালাতো সান ও তার বন্ধুরা। যার প্রতিটি মুহূর্ত ভিডিও ধারণ করে পাঠানো হতো মাসুদের কাছে।

ডিসি আজিম বলেন, গত ২৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে ভুক্তভোগী তরুণীকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলশ। ওই দিন সন্ধ্যায় তরুণীকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। ভুক্তভোগী তরুণী ঘুমিয়ে গেলে বাইরে যায় সালমা, সান ও অন্যরা। কিছুক্ষণ পর ভুক্তভোগীর ঘুম ভেঙে গেলে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে জানালার কাছে গিয়ে চিৎকার দিলে পথচারীরা ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে জানায়। পুলিশ গিয়ে নবীনগরের একটি বহুতল ভবনের চারতলা থেকে তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আজিমুল হক বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীকে নির্যাতনের বেশিরভাগ ভিডিও ও ছবি সালমার মোবাইলে। কিন্তু সে মোবাইলটি লুকিয়ে ফেলেছে। সেটি পেলে পৈশাচিক নির্যাতনের আসল তথ্য ও ভিডিওর গন্তব্য সম্পর্কে জানা যাবে।

গ্রেফতার চার আসামিকে সোমবার (১ এপ্রিল) আদালতে হাজির করা হলে তাদের তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বিচারক। এদিন দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত সবার নাম যেন অভিযোগপত্রে আসে তদন্ত কর্মকর্তাকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুন- 

২৫ দিন শিকলে বেঁধে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ: যে নির্দেশ দিলেন আদালত

মোহাম্মদপুরে ২৫ দিন শেকলে বেঁধে রেখে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

/কেএইচ/এফএস/
সম্পর্কিত
তীব্র গরমে ক্রেতা সংকট, বন্ধ ফুটপাতের বেশিরভাগ দোকান
মে দিবস: রাজধানীতে জনসভা করবে জাতীয় শ্রমিক লীগ
দূরপাল্লার বাসের জানালার পাশের যাত্রীদের ব্যাগ-মোবাইল ছিনিয়ে পালিয়ে যেত হৃদয়!
সর্বশেষ খবর
স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি দেবে বিশেষ কমিটি, হবে নীতিমালা
স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি দেবে বিশেষ কমিটি, হবে নীতিমালা
বঁটির কোপে দুই বছরের শিশুর মাথা বিচ্ছিন্ন, চাচি আটক
বঁটির কোপে দুই বছরের শিশুর মাথা বিচ্ছিন্ন, চাচি আটক
আইনে স্বীকৃত অনেক অবিচার এখনও আছে: এম এ মান্নান
আইনে স্বীকৃত অনেক অবিচার এখনও আছে: এম এ মান্নান
অফিস টাইমে চিকিৎসক প্রাইভেট প্র্যাকটিসে থাকলে ব্যবস্থা
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিঅফিস টাইমে চিকিৎসক প্রাইভেট প্র্যাকটিসে থাকলে ব্যবস্থা
সর্বাধিক পঠিত
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
সিএনজির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে বিআরটিএ অফিস ঘেরাও
সিএনজির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে বিআরটিএ অফিস ঘেরাও
সিস্টেম লস কমাতে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট চায় পেট্রোবাংলা
সিস্টেম লস কমাতে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট চায় পেট্রোবাংলা