X
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
৪ আষাঢ় ১৪৩২
গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্টজনরা

‘আওয়ামী লীগকেই তার সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০১ জুন ২০২৪, ১৭:০৩আপডেট : ০১ জুন ২০২৪, ১৭:০৩

সুশাসনের প্রধান জায়গা অর্থনীতি। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বাজার সচল রাখা সম্ভব। দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স শুধু বললে হবে না, সেই অনুযায়ী কাজও করতে হবে। উদারনীতি অনিবার্য, তবে বাজারের নিয়ন্ত্রণ শুধু ক্ষমতাবানদের হাতেই থাকছে। তাই সাধারণ মানুষ পিছিয়ে থাকছে।

শনিবার (১ জুন) সম্পাদকদের শীর্ষ সংগঠন এডিটরস গিল্ড আয়োজিত ‘সুশাসনের অঙ্গীকার, সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনরা। বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত আলোচনার সভার সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সভাপতি মোজাম্মেল বাবু।

বৈঠকে অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ বলেন, ‘গত ১২ বছরে বিভিন্ন কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে। অর্থনীতির আকার যদিও বেড়েছে, তবে এই অবস্থার জন্য কারা দায়ী, সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেসব ব্যাংক অন্যায় করেছে, তারা কি শাস্তি পেয়েছে? ব্যাংকগুলার পরিচালক পর্ষদের সদস্যদের দায়ী করা যাচ্ছে না। এখন ডলার সংকটের কারণে আমদানি করা যাচ্ছে না অথচ মৌলিক কিছু পণ্য কিন্তু আমদানি করতেই হবে। এখন পর্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থাতেই আছে।’

অর্থনীতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এম এম আকাশ বলেন, ‘বাজার একটা মেকানিজম, সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমাদের বাজারে তিনটা প্লেয়ার। একটা হলো আমলাতন্ত্র, একটা হলো ব্যবসায়ী এবং আরেকটা হলো রাজনীতিবিদ। এখন যদি তারা অসৎ হয়ে পড়েন, তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। তখন ব্যক্তি নয়, পুরো সিস্টেমই পাল্টে যায়। দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স শুধু বললে হবে না, সেই অনুযায়ী কাজও করতে হবে।’

সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বড় ঋণ নিতে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি লাগে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক কেমন যেন অন্তরালে থাকছে আজকাল। এ রকমটা ছিল না আগে। আগে বড় ব্যাংকগুলোর ঘাম ছুটে যেতো বাংলাদেশ ব্যাংককে কীভাবে সন্তুষ্ট করবে। আর বর্তমানে তার কোনও ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।’

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘মাথাপিছু আয় বাড়ছে। বৈষম্যও বাড়ছে। প্রবৃদ্ধিও ৬ শতাংশের ওপরে। আমাদের ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার যদি দুষ্টচক্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাহলে সমস্যা কেটে যাবে। কিন্তু এই দুষ্টচক্রকে ভাঙার চেষ্টা অব্যাহত থাকতে হবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সব সময় ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যাওয়া ব্যাহত হয়। এখন যেমন হচ্ছে, তাই এখন সিদ্ধান্ত নিয়ে এই বাধাগুলোকে দূর করতে হবে। ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগে পুরো বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না।’

বৈঠকে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে আলোচকরা বলেন, ‘ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগে পুরো বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান বলেন, ‘নিশ্চয় জেনারেল আজিজের ব্যাপারে যে অভিযোগ এসেছে, সেটা তাকেই ডিফেন্ড করতে হবে। সরকারের দায়িত্ব এটা নিয়ে তদন্ত করা, কারণ জবাবদিহির প্রয়োজন আছে। ব্যক্তি যারা দোষী, তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। পুরো ব্যবস্থা দোষী নয়।’

তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটা চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রেই শিক্ষার্থীদের প্রহার করা হচ্ছে। সুকৌশলে স্যাংশন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রশ্ন করা হয়। বেনজীরকে দিয়ে পুরো বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সহজ। এই বিতর্কের প্রয়োজন ছিল। কেউ যে বিচারের বাইরে নয়, সেটা জানানোর জন্য এটা প্রয়োজন ছিল।’

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান হোক। সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রীও সাজা ভোগ করছেন। ড. ইউনূসকেও আইনি লড়াই করে যেতে হচ্ছে, যতই বিদেশি চাপ থাকুক। আমরা চাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছভাবে চলুক। গুটি কয়েক মানুষের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানকে যেন প্রশ্নবিদ্ধ করা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘এখন যেহেতু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে এবং তার কাছেই বিচার চাওয়ার সুযোগ আছে। তাই আওয়ামী লীগকেই তার সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।’

/জেডএ/এনএআর/
সম্পর্কিত
ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
খামেনি কোথায় লুকিয়ে জানি, এখনই হত্যা করবো না: ট্রাম্প
ইরানে ‘রেজিম পরিবর্তনের’ স্বপ্ন নেতানিয়াহুর, ট্রাম্প কী করবেন?
সর্বশেষ খবর
ঢাকায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে
ঢাকায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে
ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
টিসিবির কার্ড বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার
টিসিবির কার্ড বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার
রাঙামাটিতে বেড়েছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ, আক্রান্ত ৬৬১
রাঙামাটিতে বেড়েছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ, আক্রান্ত ৬৬১
সর্বাধিক পঠিত
ইসরায়েলি হামলার পর তেহরানের হাসপাতালে ‘রক্তস্নান’
ইসরায়েলি হামলার পর তেহরানের হাসপাতালে ‘রক্তস্নান’
ম্যাক্রোঁকে আক্রমণ ট্রাম্পের, বললেন যুদ্ধবিরতি নয়, বড় কিছু ঘটছে
ম্যাক্রোঁকে আক্রমণ ট্রাম্পের, বললেন যুদ্ধবিরতি নয়, বড় কিছু ঘটছে
সিরিয়ার আকাশ দিয়ে ইরানে বোমা ফেলছে ইসরায়েল: নীরব সরকার, বাড়ছে ক্ষোভ
সিরিয়ার আকাশ দিয়ে ইরানে বোমা ফেলছে ইসরায়েল: নীরব সরকার, বাড়ছে ক্ষোভ
‘ভয় দেখিয়ে জুলাই গণহত্যার বিচার থেকে দূরে সরানো যাবে না’
‘ভয় দেখিয়ে জুলাই গণহত্যার বিচার থেকে দূরে সরানো যাবে না’
জামায়াতের অনুপস্থিতির বিষয়ে যা বললেন প্রেস সচিব
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকজামায়াতের অনুপস্থিতির বিষয়ে যা বললেন প্রেস সচিব