হত্যার পর মরদেহ তিন টুকরো করে ঢাকার সাভার, ধামরাই এবং ফরিদপুরে ফেলা হয়। এমনকি নিহতের পরিচয় লুকাতে আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয় মুখমণ্ডল। তিন জায়গা থেকে উদ্ধার খণ্ডিত দেহাংশের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) পরীক্ষা করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নিশ্চিত হয়েছে, এগুলো একই নারীর। তবে তার পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। পরিচয় জানার চেষ্টা করছে সংস্থাটি। এ জন্য সংবাদ মাধ্যমের সহযোগিতা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পিবিআই ঢাকা জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা।
সোমবার (১০ জুন) দুপুরে ধানমন্ডির পিবিআই হেডকোয়ার্টারে কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি ফরিদপুরের কোতয়ালির কৈজুরী ইউনিয়নের বিলনালিয়া গ্রামের মাঠে খণ্ডিত দেহের আগুনে পোড়ানো মাথাসহ একটি হাত এবং একইদিনে ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের বড় চন্দ্রাইল গ্রামে নাভির নিচ থেকে পা পর্যন্ত দেহাংশ পাওয়া যায়। তার ছয় দিন পর একটি হাতসহ দেহের মাঝের অংশ উদ্ধার হয় সাভারের সাদাপুর থেকে। পরে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়, উদ্ধার করা মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো একই নারীর। মাথাসহ ডান হাত সম্পূর্ণ আগুনে পোড়ার কারণে চেহারা বোঝা যায় না এবং দেহের মাঝখানের অংশসহ বাম হাত পচে যাওয়ায় আঙুলের ছাপের মাধ্যমেও পরিচয় শনাক্ত সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডটির রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অজ্ঞাত ভুক্তভোগীর পরিচয় শনাক্ত জরুরি। এ জন্য সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে যেন বিষয়টি সবার নজরে আনা হয়।’ কেউ এই ভুক্তভোগীকে চিনে থাকলে পিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘নিহত নারীর মরদেহ পচন ধরায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ৬০ শতাংশ সফল হওয়ায় পাঁচ জন নারীর সঙ্গে মিলে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা সবাই জীবিত, কেউ নিখোঁজ নন।’
তিনি বলেন, ‘মরদেহের সন্ধান পেতে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনকে (বিজিএমইএ) চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা দেশের সব গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে। যদি কোনও প্রতিষ্ঠানের নারীকর্মী নিখোঁজ থাকে তাহলে সেটি পিবিআইকে জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও মরদেহ উদ্ধারের আগে ও পরের দুই মাসে সারা দেশে নারীদের নিখোঁজের জিডি সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।’