X
শনিবার, ১০ মে ২০২৫
২৭ বৈশাখ ১৪৩২

এই মুহূর্তে দেশের মানুষ সূক্ষ্ম সুশাসন-গণতন্ত্র চায় না:সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৩ জুন ২০২৪, ০০:০২আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০২

সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণ সূক্ষ্ম সুশাসন, গণতন্ত্র চায় না। তারা চায় আরও বেশি প্রকল্প, আরও ভালো পানি, আরও ভালো রাস্তা, আরও বেশি স্কুল।

বুধবার (১২ জুন) ঢাকার একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বাধীন পর্যালোচনা: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সঞ্চালনায় এতে মূল পর্যালোচনা তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

আলোচনায় বিরোধীদলীয় উপনেতা ব্যারিস্টার আনিসুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপিসহ অনেকে অংশ নেন।

এম এ মান্নান বলেন, গ্রামের দরিদ্র শ্রেণির ভোটাররা টিউবওয়েল, ল্যাট্রিন চায়, ছেলে-মেয়েদের জন্য উপবৃত্তি চায়। এই যখন বাস্তবতা, তখন বিরোধীদলের ভাইয়েরা বলছেন, দেশে গণতন্ত্র নাই, সে কারণে আপনারা আসতে পারছে না। এটা বলে আপনারা জাতির প্রতি দায়িত্ব অবহেলা করছেন।

বর্তমান সরকারের উন্নয়নের রহস্য ধারাবাহিকতা, আর্থসামাজিক ও নীতির স্থিতিশীলতা- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা উন্নয়নের পথে হাঁটবে। এটা আমাদের স্বাধীনতার মূলমন্ত্র, ঘোষণা। আমরা স্বাধীন ও সম্মানিত অর্থনীতির দেশ হতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিরোধী দলের লোকেরা মাঠে থেকেও থাকেন না। তারা কী গণতন্ত্রের, সুশাসনের চর্চা করছেন? আমরা সরকার করছি। আপনি বিরোধীদল মাঠে আসছেন না। আপনি ‘অন অ্যান্ড অফ পলিটিক্স’ করবেন। একবার সংসদে আসলেন, একবার আসবেন না। একবার মাঝ পথে চলে যাবেন। কখনও নির্বাচনের বিরোধিতা করবেন, আগুন দেবেন, রেললাইন উপড়াবেন, পাত উঠাবেন... এসব বর্জন আপনাদের যদি অফিসিয়াল ঐক্য হয় দেশকে অস্থিতিশীল করবেন, আমি বলবো, আনফরচুনেটলি আপনারা এটা পারবেন না। বাংলাদেশের জনগণ এটা গ্রহণ করে নাই।

এম এ মান্নান বলেন, ক্ষমতার রাজনীতির বাইরে রাজনৈতিক দল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভালো চর্চা করবে- এটাই নিয়ম। আমরা যে ন্যায্যতা চাই, আধুনিকতা চাই, অসাম্প্রদায়িকতা চাই, সেগুলো অর্জন করা সম্ভব হবে। এজন্য সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ মাঠে আছে, কখনও ছাড়ে নাই, ভবিষ্যতেও ছাড়বে না। রাজনৈতিক নেতা নয়, একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসাবে বলবো সময় হয়েছে, আসুন, বসুন। সব কিছু সমাধান সম্ভব।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে সমালোচনার জবাবে এমএ মান্নান বলেন, আমাদের মূল্যস্ফীতি আছে। তবে এটা ক্রিপিং-ক্রিপিং মানে পায়ে পায়ে হাঁটছে। এটা যদি সবল হতো, তার ফল হতো অচিন্তনীয়। এই যে দমন করে রাখা এটা আমাদের অর্থনীতির শক্তি, আমার নয়। মূল্যস্ফীতি প্রবৃদ্ধিরই একটি ফল। একটা ছাড়া অন্যটা হয় না। মূল্যস্ফীতি যেমন হচ্ছে, তেমনি বেতন বৃদ্ধিও হচ্ছে। তার মানে ছোবলটা একটু কমছে। কার্ড, সাশ্রয়ী মূল্যে ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য দিয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষকে টার্গেট করে সহায়তা দিচ্ছি। আমাদের মধ্য ও উচ্চবিত্তরা হয়তো সরাসরি এসব অনুভব করতে পারছে না, তবে পরোক্ষভাবে করছেন। যদি নিম্ন আয়ের মানুষদের টার্গেট করে ব্যবস্থা না নিতাম, তাহলে মূল্যস্ফীতি ১৫-১৬ শতাংশ হয়ে যেতো। তার থেকে আমরা রক্ষা পেয়েছি সরকারের উদ্যোগের কারণে। প্রবৃদ্ধি চাইলে মূল্যস্ফীতি সইতে হবে। এক সময় এটা কমে আসবে। এই ঝুঁকি আমাদের নিতে হবে। বড় অর্থনীতিগুলো এভাবে এগিয়েছে।

মেগা প্রকল্পের উচ্চ ব্যয় নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, কথায় কথায় কেউ কেউ বলেন, প্রকল্প ব্যয়ে আমরা নাকি বিশ্বে সর্বোচ্চ। আরে উত্তর প্রদেশের মাটি বা বিহারের মাটি, ঝাড়খণ্ডের মাটি, গুজরাটের মাটি কোথায়? আমাদের তো সড়ক বানাতে গেলে ২০ ফুট উঁচু করতে হয় মাটি দিয়ে। আমি হাওরের ছেলে। তিনবার, চারবার, পাঁচবার মাটি না নিলে মাটি টেকে না। কোথায় এটা ইন্ডিয়াতে আছে? চীন বা বার্মাতে আছে? তাদের তো জমিও কিনতে হয় না। আমাদের জমি কিনতে হয়। এসব নির্মাণ খরচ বিবেচনায় নিলে (আমি গবেষণা করি নাই) মনে করি না বেশি খরচ করছি।

এম এ মান্নান বলেন, উন্নয়নের মূল্যবান অনুষঙ্গ কী? আমরা সম্পূর্ণ কমিউনিস্ট বা সোশালিস্ট ওই সমাজের কথা চিন্তা করছি না। আমরা উদার গণতন্ত্রে, উদার পুঁজিবাদ, আমরা ওয়াশিংটন কনসসাসে, আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে কর্তা মেনে, প্রাইভেট খাতকে গুরু স্বীকার করে চলছি। এর মধ্যে সব কিছু আমাদের চাহিদামতো হবে, আমরা সর্বোচ্চ ন্যায্যতা অর্জন করতে পারবো, তা অসম্ভব বলে আমি মনে করি।

/জিএম/আরআইজে/
সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্রে বছরে ১ বিলিয়ন ডলারের শুল্ক দেয় বাংলাদেশ: সিপিডি
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে খেলাফতে মজলিসের সংলাপ অনুষ্ঠিত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব
সর্বশেষ খবর
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত : চীনের জন্য মূল্যবান গোয়েন্দা সুযোগ
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত : চীনের জন্য মূল্যবান গোয়েন্দা সুযোগ
দীপ্ত স্টার হান্ট বিজয়ী মিষ্টি ও শাকিব
দীপ্ত স্টার হান্ট বিজয়ী মিষ্টি ও শাকিব
সাবেক এমপি সেলিনা ইসলাম গ্রেফতার 
সাবেক এমপি সেলিনা ইসলাম গ্রেফতার 
টেস্ট থেকে অবসর চান কোহলি
টেস্ট থেকে অবসর চান কোহলি
সর্বাধিক পঠিত
সাবেক শিবির নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
সাবেক শিবির নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
কলকাতায় যুদ্ধের প্রস্তুতি মমতা সরকারের
কলকাতায় যুদ্ধের প্রস্তুতি মমতা সরকারের
আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে বিরতি ঘোষণা, শাহবাগেই ঘুমিয়ে পড়েছেন হাসনাত
আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে বিরতি ঘোষণা, শাহবাগেই ঘুমিয়ে পড়েছেন হাসনাত
আ.লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপি সুস্পষ্ট অবস্থান না নেওয়ায় ছাত্রদল নেতার পদত্যাগ
আ.লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপি সুস্পষ্ট অবস্থান না নেওয়ায় ছাত্রদল নেতার পদত্যাগ