ফ্যাসিবাদমুক্ত গণতান্ত্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাসহ আট দফা দাবি তুলে ধরেছে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার পরিষদ।
রবিবার (১৮ আগস্ট) বিকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের নিয়ে নবগঠিত এই পরিষদের পক্ষ থেকে দাবিগুলো তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. তাজনুভা জাবিন আটটি দাবি তুলে ধরে বলেন, হাসিনা সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে ঘটে যাওয়া দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত সব ছাত্র-জনতার চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা, স্বাস্থ্যসেবাকে সুযোগ নয়, অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, দালালমুক্ত হাসপাতাল, টেস্ট ও কমিশন বাণিজ্য বন্ধ এবং ওষুধের দাম কমানো,
তিনি আরও দাবি জানান, বিএমএ, ডেন্টাল সোসাইটিসহ সব মেডিক্যাল-ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালে দলীয় লেজুড়বৃত্তি ও পেশীশক্তির রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন, ট্রেইনি ও রেসিডেন্সি কোর্সে অধ্যয়নরত বেসরকারি ডাক্তারদের যৌক্তিক বেতন কাঠামো প্রণয়ন (ন্যূনতম ৫০ হাজার), ডিজি হেলথসহ স্বাস্থ্য প্রশাসনে নিযুক্ত আওয়ামী সব দোসরদের অপসারণ এবং শূন্য হওয়া পদগুলোতে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের পদায়ন নিশ্চিত করা, জুডিশিয়ারির ন্যায় স্বতন্ত্র 'হেলথ সার্ভিস কমিশন' গঠন ও তার অধীনে সমন্বিত, সুস্পষ্ট, গ্রহণযোগ্য, সর্বজনীন চাকরিবিধি প্রণয়ন, যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ-পোস্টিং, জনবান্ধব চিকিৎসা সেবা, নিয়মতান্ত্রিক রোগী রেফারাল এবং চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়মতান্ত্রিক পদোন্নতি সুনিশ্চিত করা।
ডা. তাজনুভা জাবিন বলেন, একথা অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছরেও এদেশে জনগণের স্বাস্থ্যরক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। সংবিধানে আইন দ্বারা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসাকে অধিকার হিসেবে সংরক্ষিত করা হয়নি। সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত না করে স্বাস্থ্য খাতকে ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। সরকারি চাকরিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নেই। বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট কোনও নিয়ম-নীতি নেই, তদারকি নেই। রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত থেকে হাজার কোটি টাকার লুটপাট হয়, অথচ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ে না, যে বরাদ্দ আসে তাও সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডা. হেমন্ত হিম।