X
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

১৪ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ চৌধুরী আলম, এখনও অপেক্ষায় স্ত্রী-সন্তান

আরমান ভূঁইয়া
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:০০আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:১৬

‘কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। সরকারের ভয়ে আত্মীয়রাও কাছে আসেনি। তখন আমার চার সন্তানের দুই সন্তানই ছোট ছিল। তাদের পড়াশোনাও অনিশ্চিত হয়ে যায়। স্বামীকে খুঁজবো নাকি সন্তানদের খাবার জোগাবো? এভাবেই কেটে গেছে ১৪ বছর। আমার সন্তানদের মুখের হাসি বন্ধ হয়ে গেছে। গত ১৪ বছর তারা হাসতে ভুলে গেছে। একজন মায়ের কাছে এর চেয়ে বড় কষ্ট আর কিছুই হতে পারে না।’

১৪ বছর আগে ‘নিখোঁজ’ হওয়া স্বামী চৌধুরী আলমকে নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে এই কথাগুলো বলেন তার স্ত্রী হাসিনা চৌধুরী।

২০১০ সালের ২৫ জুন গুমের শিকার হন তৎকালীন ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৫৬ নম্বর (বর্তমান ঢাকা দক্ষিণের ২০) ওয়ার্ড কমিশনার চৌধুরী আলম। তাকে ফার্মগেট ইন্দিরা রোড থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও তার খোঁজ পাননি পরিবার। কেউ জানে না তিনি জীবিত আছেন নাকি মৃত। তবুও তার স্ত্রী-সন্তানরা মনে আশা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন, তিনি ফিরবেন, তাদের বুকে জড়িয়ে নেবেন।

হাসিনা চৌধুরী বলেন, ‘আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সরকার আমাদের সব সম্পত্তি নিয়ে যায়। তার সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে ফেলে। তখন আমাদের কাছে কোনও টাকাপয়সা ছিল না। শুধু থাকার মতো একটা বাড়ি ছিল। আমি চার ছেলে-মেয়েকে (দুই ছেলে ও দুই মেয়ে) নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি।’

‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চাওয়া, আমরা তার খোঁজ চাই। তিনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, আমরা জানতে চাই। কারা এর সঙ্গে জড়িত, সেই দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখী করা হোক। আমাদের এটাই দাবি’, বলেন হাসিনা চৌধুরী।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে চৌধুরী আলম (ডানে)

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের বেশ কয়েকজন নেতার গুমের অভিযোগ ওঠে। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরের বছর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে এ ধরনের গুমের অভিযোগ উঠতে থাকে।

চৌধুরী আলম বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির প্রথম যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই বছর জেলে ছিলেন তিনি। এরপর তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা করা হয়।

পরিবারের অভিযোগ, ২০১০ সালের ২০ জুন গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে র‌্যাব পরিচয়ে কয়েকজন চৌধুরী আলমের ওপর হামলা করে। পরে স্থানীয়রা র‌্যাব-১-এর বিল্লাল নামে এক সদস্যকে ধরে গুলশান থানায় সোপর্দ করে। সেদিন রাতেই র‌্যাব সদর দফতর বিল্লালকে তাদের জিম্মায় নিয়ে যায়। এরপর ২৫ জুন রাতে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে এসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে আলমকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তখন তার গাড়িচালককে মারধর করে গাড়িও নিয়ে যায় তারা।

চৌধুরী আলমের মেয়ে মাহফুজা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনার পরদিন কাওরান বাজারের ওয়াসা ভবনের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় আমার বাবার গাড়িটা পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির করি বাবাকে। ঘটনার পাঁচ দিন পর ৩১ জুন নিখোঁজ উল্লেখ করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। পরদিন ১ জুলাই শেরেবাংলা নগর থানায় একটি এফআইআর (মামলা) করেন আমার ভাই আবু সাঈদ চৌধুরী।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৫ জুন রাতে আমার বাবা চৌধুরী আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এমন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল একাধিক টেলিভিশন ও পত্রিকায়।’

মামলা করার পর পুলিশ কোনও তদন্ত করেনি অভিযোগ করে চৌধুরী আলমের বড় ছেলে আবু সাঈদ হিমু বলেন, ‘বাবাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার বিষয়টি একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছিল। এরপরও পুলিশ আমাদের অভিযোগ গ্রহণ করতে চায়নি। আমরা অনেক ঘোরাঘুরির পর পুলিশ কারও নাম উল্লেখ না করে একটা এজাহার গ্রহণ করেছিল। তবে এ ব্যাপারে তারা কোনও সুষ্ঠু তদন্ত করেনি।’

পরিবার বলছে, চৌধুরী আলমকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তারা ঢাকা মহানগর ডিবি কার্যালয়, সিআইডি ও র‌্যাবসহ সম্ভাব্য সব জায়গা খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু কোথাও কোনও তথ্য পাননি।

বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম

এ বিষয়ে মাহফুজা বলেন, ‘প্রতিদিন বাবার সন্ধান করেছি। কিন্তু প্রতিটা জায়গা গিয়ে আমরা হয়রানির শিকার হয়েছি। আমাদের সঙ্গে যা ইচ্ছে তা-ই ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সদস্য আমাদের বলেছেন, ‘এটা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি কইরেন না। এটা ওপরের নির্দেশ’। আরও বলেছেন যে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করলে আমাদের অবস্থাও বাবার মতো হবে।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশ বা র‌্যাব সহযোগিতা করবে তো দূরে থাক, বরং টানা ১৪ বছর তারা আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। প্রতিনিয়ত আমাদের বাসায় এসে বলেছে, ‘দরজা খুলুন, চৌধুরী আলম বাসায় আছেন কি? তাকে খুঁজতে এসেছি।’ এ সময় তারা (পুলিশ) বাসায় ঢুকে প্রতিটা জিনিস ভাঙচুর ও এলোমেলো করে যেতো।’

‘আমার বাবা একজন মুক্তযোদ্ধা (সনদ নম্বর ম-১১০০০৫)। তিনি ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় গ্যারিলা যুদ্ধ করেছেন। আমার বাবা দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। বাবা খালেদা জিয়ার খুবই আস্থাভাজন কর্মী ছিলেন। কিন্তু রাজনীতি করার কারণেই আমার বাবার জীবনে আজ এই অবস্থা। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জন্য সারা জীবন কাজ করে গেছেন। আজ সেই দল আবার উজ্জীবিত হলেও আমার বাবার ছায়াও নেই।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আপনারা কি বলতে পারেন কোথায় গেলে বাবাকে পাবো? বাবাকে একটু জড়িয়ে ধরতে পারবো? বাবা আমাদের মাথায় একটু হাত রাখবেন। দুচোখ ভরে আমাদের দেখবেন। বলবেন, কতকাল তোদের দেখি না। আয় বুকে আয়!’

আয়নাঘরের বিষয়ে মাহফুজা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে আমরা দেখেছি ডিজিএফআইয়ের কথিত ‘আয়নাঘর’ থেকে তিনজন বেরিয়ে এসেছেন। আমরাও কয়েক দিন অপেক্ষায় ছিলাম যে আমার বাবাও আসবেন কিন্তু আজও এলেন না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মাহফুজা বলেন, ‘আমরা গত ১৬ বছর বিচার চাইতে পারিনি, কথা বলতে পারিনি। তাই বর্তমান সরকারের কাছে এইটুকু চাওয়া, আমার বাবা কোথায় আছেন, কেমন আছে, আয়নাঘরে আছেন নাকি অন্য কোথাও আছেন এটা জানান। তিনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, আমরা জানতে চাই। কারা এর সঙ্গে জড়িত, দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখী করা হোক। আমাদের এটাই দাবি।’

চৌধুরী আলমের গুমের ব্যাপারে ২০১০ সালে ১ জুলাই রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানা একটি মামলা করেছিলেন তার বড় ছেলে আবু সাঈদ চৌধুরী হিমু। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল আদালেতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন তৎকালীন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরে বাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামরুজ্জামান ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকা মেট্রোপলিটনের (উত্তর) পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহানুর বারী। তদন্ত প্রতিবেদনে তারা উল্লেখ করেছিলেন, বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণে চৌধুরী আলম অপহরণের বিষয়টি সত্য প্রমাণিত হলেও তাকে কে বা কারা অপহরণ করেছে, যে সম্পর্কে কোনও তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।

বিএনপির রাজনৈতিক মিছিলের অগ্রভাগে চৌধুরী আলম (মাঝখানে)

চৌধুরী আলমের মামলার তদন্তের অগ্রতি সম্পর্কে জানতে তৎকালীন মালমার তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ সুপার (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) ছত্রধর ত্রিপুরা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা বরাবরই তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ তদন্ত করে থাকি। এ মামলার ব্যাপারেও ব্যতিক্রম নয়। এটা অনেক পুরোনো মামলা। এর আগেও এই মামলার একটি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশে আবার মামলাটি তদন্ত করা হবে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।

২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে কমিশন অব ইনকোয়ারি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, সিআইডি, বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের অন্য যেকোনও আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী সংস্থার কোনও সদস্যের মাধ্যমে গুম হওয়া ব্যক্তিদের বিষয়ে কমিশনে অভিযোগ করা যাবে। আগামী ১৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অভিযোগ নেওয়া হবে। কমিশনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অথবা ডাকে বা কমিশনের ই-মেইলে অভিযোগ জমা দেওয়া যাবে।

জানতে চাইলে গুম কমিশনের সচিব ও অতিরিক্ত জেলা জজ মো. বুলবুল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিগত সময়ে অপহরণ ও গুম হওয়া ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে হচ্ছে। এরপর আরও কিছু কাজ করা হবে। এখনই এ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। একটু সময় লাগবে।’

/এনএআর/এফএস/
সম্পর্কিত
বাংলাদেশে জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
দ্বিতীয় দিনের মতো যমুনার সামনে ইশরাক সমর্থকরা
মধ্যরাতে লালমনিরহাট সীমান্ত দিয়ে ১১ জনকে ঠেলে দিলো বিএসএফ
সর্বশেষ খবর
সকালেই বৃষ্টিতে নাকাল নগরবাসী, দিনভর যানজটের শঙ্কা
সকালেই বৃষ্টিতে নাকাল নগরবাসী, দিনভর যানজটের শঙ্কা
৭ ঘণ্টা পর জয়পুরহাটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
৭ ঘণ্টা পর জয়পুরহাটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
আনার হত্যাকাণ্ডের এক বছর: ডিএনএ রিপোর্টে আটকে আছে তদন্ত
আনার হত্যাকাণ্ডের এক বছর: ডিএনএ রিপোর্টে আটকে আছে তদন্ত
বাংলাদেশে জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
বাংলাদেশে জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
সর্বাধিক পঠিত
কক্সবাজারে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিলো মার্কিন সেনা-বিমান বাহিনী
কক্সবাজারে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিলো মার্কিন সেনা-বিমান বাহিনী
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ঢাকা ফেরার নির্দেশ
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ঢাকা ফেরার নির্দেশ
যে কারণে কক্সবাজারে মার্কিন বাহিনী
যে কারণে কক্সবাজারে মার্কিন বাহিনী
আন্দোলনে স্থবির রাজধানী, চারপাশে যান চলাচল বন্ধ
আন্দোলনে স্থবির রাজধানী, চারপাশে যান চলাচল বন্ধ
করিডর নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা হয়নি, প্রয়োজনও নাই: নিরাপত্তা উপদেষ্টা
করিডর নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা হয়নি, প্রয়োজনও নাই: নিরাপত্তা উপদেষ্টা