রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার (অব.) বলেছেন, নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য রাজউক ভাড়া ভিত্তিক বিভিন্ন সাইজের বহুতল ভবন নির্মাণ করতে চায়। যেখানে স্বল্প ভাড়ায় নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাবে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অডিটোরিয়ামে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। রাজউক কর্তৃক গৃহীত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের অংশ হিসেবে 'দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবাসন' বিষয়ক একটি দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. শাম্মী আক্তার সেতু। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নগর জনগোষ্ঠীর ৪৭ শতাংশের বাস বস্তিতে। যা ঢাকা শহরের মোট এলাকার ১ শতাংশ জুড়ে আছে। যেখানে মোট জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে আড়াই লাখ।
তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রতি বর্গফুটের হিসাবে উচ্চবিত্তদের তুলনায় বেশি ভাড়া প্রদান করে থাকে। যেখানে পর্যাপ্ত শৌচাগার ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা একেবারেই নেই বললেই চলে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাশ্রয়ী আবাসনের মডেলকে সামনে রেখে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সব ধরণের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন সাশ্রয়ী আবাসন নিশ্চিত করা কথা বলেন শাম্মী আক্তার সেতু।
মুখ্য আলোচক হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকা শহরের ভ্রাম্যমাণ মানুষদের জন্য যে আবাসন বৈষম্য তা অচিরেই দূর করতে হবে। বেঁদে সম্প্রদায়, হরিজন সম্প্রদায়সহ অন্যান্য ভ্রমমাণ জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ ও সাশ্রয়ী আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করনে রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকেই একযোগে কাজ করতে হবে।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্যে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, একটি বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শহর নির্মাণে আজকের কর্মশালার গুরুত্ব অপরিসীম। রাজধানীর উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারদের নিয়ে এই কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
কর্মশালায় বক্তারা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য নির্মিত ভবনগুলোর বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতে কীভাবে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ), সদস্য (এস্টেট ও ভূমি), বিআইপি প্রেসিডেন্ট, আইইবি প্রেসিডেন্ট, রাজউক, বিআইপি, আইইবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।