হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া হত্যা মামলায় রুপা বেগম ওরফে জান্নাত ও নাজিম হোসেন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (১২ মার্চ) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরখান থানার সাব-ইন্সপেক্টর জাহিদুল হাসান তাদের আদালতে হাজির করেন। আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জেনিফা জেরিনের আদালত রুপার এবং আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
উত্তরখান থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখার সাব-ইন্সপেক্টর বখতিয়ার উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এরআগে মঙ্গলবার ফরিদপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গত ১০ মার্চ সকালে রাজধানীর উত্তরার উত্তরখান থানা এলাকার পুরানপাড়ার একটি বাসার চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে। দুর্বৃত্তরা তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে বাথরুমে আটকে রেখে পালিয়ে যায়।
পরে প্রতিবেশীরা বাথরুমের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সাইফুর রহমান ভূঁইয়া নিহতের ঘটনায় তার ভাই মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান ভূঁইয়া অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ১১ মার্চ সোমবার মামলা দায়ের করেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ মার্চ রাত ২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে খুন হন। নিহত সাইফুর উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় তার স্ত্রীর পৈত্রিক আড়াই শতক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য গত ৩-৪ মাস ধরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। যেখানে ঘটনাস্থল তার সামনেই এই জায়গাটি।
গ্রেফতার দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে উত্তরার ডিসি মহিদুল ইসলাম জানান, রমজানের আগের দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার সঙ্গে গ্রেফতার মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে সাইফুর তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন দম্পতিকে। একপর্যায়ে সাইফুর রহমান রুপাকে তার ফ্ল্যাটে আটকে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করে। হত্যাকাণ্ডের রাতে এক বেডে ছিলেন নিহত সাইফুর রহমান ও দম্পতি রুপা-নাজিম।
সেই রাতে নাজিম ঘুমিয়ে পড়লে সাইফুর রহমান রুপাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে নাজিম ঘুম থেকে জেগে গেলে রান্নাঘর থেকে দা এনে সাইফুর রহমানকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।