ঢাকার মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতে যাত্রীসেবার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যবহারের সুযোগ চালু করতে যাচ্ছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এমআরটি লাইন-৬ এর ১৬টি স্টেশনের মধ্যে ফার্মগেট ও কাওরান বাজার স্টেশন তিন তলাবিশিষ্ট। এই দুই স্টেশনের দ্বিতীয় তলার প্রায় ২৫ হাজার বর্গফুট ফাঁকা জায়গা বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দেওয়া হবে।
সম্প্রতি ডিএমটিসিএল ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
এতে হয়, এমআরটি লাইন-৬ এর ফার্মগেট ও কাওরান বাজার মেট্রোরেল স্টেশনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ২৫ হাজার বর্গফুটের রিটেইল ফ্লোর ভাড়া দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ডিএমটিসিএল। ডিএমটিসিএলের বাণিজ্যিক স্পেস ভাড়া বা ইজারা নীতিমালা ২০২৩ (প্রথম সংশোধনীসহ) অনুযায়ী এই ফ্লোরগুলো ভাড়া দেওয়া হবে।
ফ্লোর ভাড়া নেওয়ার জন্য আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিএমটিসিএল’র অনুকূলে প্রতি স্টেশনের জন্য ১০ হাজার টাকার পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফট (অফেরতযোগ্য) জমা দিয়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
আবেদনপত্র সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত (অফিস চলাকালীন সময়ে)। উত্তরা দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মেট্রোরেল ভবনের ৭৩১ নম্বর কক্ষ (লেভেল-৭) থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যাবে। জমা দেওয়ার তারিখ ১৫ জুন বেলা ৩টা পর্যন্ত।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য ডিএমটিসিএলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.dmtcl.gov.bd ভিজিট করার আহ্বান জানানো হয়।
জানা গেছে, উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শপিংমল, ডেইলিশপ, ব্যাংক, অফিস বা অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই স্পেস ভাড়া দেওয়া হবে। ভাড়ার প্রস্তাব বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স বা যমুনা ফিউচার পার্কের সমান বা তার চেয়ে বেশি হতে হবে। ইজারা মেয়াদ ধরা হয়েছে ১০ বছর, যা নবায়নযোগ্য নয়।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, ফার্মগেট ও কাওরান বাজার স্টেশনে ২৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের দুটি বড় ফ্লোর রয়েছে। অন্যদিকে, লাইন-৬ এর বাকি স্টেশনগুলোতে গড়ে ১৫০ বর্গফুট আয়তনের তিন থেকে চারটি ছোট কক্ষ রয়েছে, যা ভিন্ন ধরনের ব্যবসার জন্য ইজারা দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে বড় স্পেস ভাড়া দেওয়া হবে, এরপর ছোট কক্ষগুলোর জন্য আবেদন আহ্বান করা হবে।
মেট্রোরেল সীমিত পরিসরে চালু হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এবং ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে পুরো রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ডিএমটিসিএলের আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে টিকিট বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে ২৪৩ কোটি ৯১ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।
তবে এই আয় দিয়েই সব খরচ মেটানো যাচ্ছে না। দৈনন্দিন ব্যয়ের পাশাপাশি জাইকার কাছ থেকে নেওয়া ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে স্টেশনগুলোর ফাঁকা জায়গা ভাড়া দেওয়ার উদ্যোগকে সম্ভাবনাময় বলে মনে করছে ডিএমটিসিএল।