দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান থাকায় জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু, তার ছেলে এস এম আসিফ শামস ও এস এম নাফিজ শামসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের উপপরিচালক মো. আল আমিন নিষেধাজ্ঞা ও ব্লকের আবেদন করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি বর্তমানে অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। তিনি ভিন্ন মামলায় কারান্তরীণ রয়েছেন। তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে নিম্নবর্ণিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশ গমন বন্ধ করা প্রয়োজন।
এছাড়া অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যা করতে পারলে অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় মামলা রুজু, আদালতে চার্জশিট দাখিল, আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় হতে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর, আয়কর রিটার্ন দাখিল, পাসপোর্ট ইস্যু-নবায়ন, ব্যাংক হিসাব খোলা-পরিচালনাসহ যাবতীয় কার্যক্রম যেহেতু জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়, সেহেতু তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রটি ব্লক করা হলে, এসব কাজে তারা বাধাগ্রস্ত হবেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, শামসুল হক টুকু ২০০৯ ও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে পাবনা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট তিনি ১১ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।