X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশফেরত যাত্রীদের অজ্ঞান করে সবকিছু লুটে নিতো তারা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০২ অক্টোবর ২০২২, ১৪:০৭আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২২, ১৪:০৭

এই অজ্ঞান পার্টির কাজ ছিল দেশের অন্যতম প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ঘিরে। চক্রের মূলহোতা মো. আমির হোসেন। বিমানবন্দর এলাকায় একটি ফাস্টফুডের দোকানে চাকরি করে সে। তবে তার মূল কাজ বিদেশফেরত যাত্রীদের টার্গেট করা।

চক্রটি এমন প্রবাসী যাত্রীদের টার্গেট করতো, যার জন্য অপেক্ষমাণ কোনও আত্মীয়স্বজন বা গাড়ি থাকতো না। তারা কৌশলে বিদেশফেরত ব্যক্তির সঙ্গে কুশল বিনিময় করতো। চক্রের অন্য সদস্যদের তাদের আত্মীয় হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতো। পরে একই এলাকার ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়ে ভুক্তভোগীকে তাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতো। পরে সবাই একসঙ্গে যাত্রা শুরু করতো। বাস বা অন্য গাড়িতে ভ্রমণের সময় চক্রের সদস্যরা টার্গেট করা ব্যক্তিকে কৌশলে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো বিস্কুট খাইয়ে অচেতন করতো। ভুক্তভোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে তার কাছে থাকা সব মালামাল নিয়ে চক্রের সদস্যরা পরবর্তী স্টেশনে নেমে যেতো।

সম্প্রতি এক প্রবাসী অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মামলা করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শনিবার (১ অক্টোবর) রাতে বিমানবন্দর থানা ও কদমতলী থানা এলাকা থেকে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। রবিবার (২ অক্টোবর) র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন রাজধানীর কাওরান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

বিদেশফেরত যাত্রীদের অজ্ঞান করে সবকিছু লুটে নিতো তারা গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন– মো. আমির হোসেন (৫২), মো. লিটন মিয়া ওরফে মিল্টন (৪৮), আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে পারভেজ (৩৫) ও জাকির হোসেন (৪০)।  তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, অজ্ঞান করার কাজে ব্যবহৃত ট্যাবলেট, যাত্রীর ছদ্মবেশ ধারণে ব্যবহৃত লাগেজ ও চোরাই স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমির হোসেন জানায়, সে বিমানবন্দর কেন্দ্রিক একটি অজ্ঞান পার্টির মূলহোতা। সে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। বিমানবন্দর এলাকায় একটি ফাস্টফুডের দোকানে চাকরির আড়ালে ১৫ বছর ধরে অজ্ঞান পার্টি চালাচ্ছে। এই সময়ে তারা প্রায় ৩০০ জনকে অজ্ঞান করে তাদের কাছ থেকে মালামাল ও সম্পদ লুটে নিয়েছে। লুট করা জিনিসপত্র বিক্রির জন্যও এই চক্রের রয়েছে নিজস্ব সিন্ডিকেট।

বিভিন্ন সময় চক্রে আরও ছয়-সাত জন যুক্ত ছিল। তাদের মধ্যে একাধিক সদস্য বর্তমানে কারাগারে। গ্রেফতার আমির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে। সে একাধিকবার কারাভোগও করেছে। বর্তমানে সে জামিনে ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সংঘবদ্ধ এই অজ্ঞান পার্টির সদস্য সংখ্যা এখন ৮ থেকে ১০ জনের মতো। তারা বিভিন্ন পেশার আড়ালে পারস্পারিক যোগসাজসে রাজধানীর বিমানবন্দর টার্মিনালে ওঁত পেতে থাকতো। বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের টার্গেট করার জন্য বিমানবন্দরের টার্মিনাল থেকে পাসপোর্ট ও লাগেজ নিয়ে বিদেশফেরত যাত্রীর ছদ্মবেশ ধারণ করতো। পরে খাতির জমিয়ে বিভিন্ন কৌশলে যাত্রীর সবকিছু লুটে নিতো।

 

 

/আরটি/আরকে/এফএস/
সম্পর্কিত
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
ঢাবির জগন্নাথ হলে বসে প্রাথমিকের প্রশ্নের সমাধান!
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা