X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘ডায়মন্ড’ ও ‘দে ধাক্কা’ কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তোলে তারা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:২৮আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:১৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকায় ছিনতাই, মাদক, ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করে আসছিল ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা নামে দুটি কিশোর গ্যাং। চক্র দুটির সদস্যদের ব্যবহার করে ওই এলাকায় অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তোলে জুলফিকার আলী ও তার সহযোগীরা।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে র‍্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে, শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মোহাম্মদপুরের হাউজিং সোসাইটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই দুটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো– মো. জুলফিকার আলী (৩৭), মো. হারুন অর রশিদ (৩৮), মো. শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮), মো. সুরুজ মিয়া (৩৯)। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুটি চাপাতি ও সাতটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জুলফিকার ও তার সহযোগীদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠে ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা। গ্যাং দুটির সদস্যরা নিজেদের আধিপত্য জানান দিতে দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতো। খুবই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতো তারা।’

তিনি বলেন, ‘কিশোর গ্যাং চালানোর জন্য গ্রেফতার ব্যক্তিরা জুলফিকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা গ্রুপের সদস্যদের দেশি-বিদেশি অস্ত্র সরবরাহ করতো জুলফিকার। গ্রুপের সদস্যরা এলাকায় নিয়মিত ছিনতাই, মাদক, ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করে আসছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব জানতে পারে, মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়, চাঁদ উদ্যান, লাউতলা, নবীনগর হাউজিং, বছিলা চল্লিশ ফিট, কাঁটাসুর, তুরাগ হাউজিং, আক্কাস নগর, ঢাকা উদ্যান নদীর পাড়, চন্দ্রিমা হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, বছিলা হাক্কার পাড় এলাকাজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাং সদস্যরা ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। এছাড়াও গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিতো। পথচারীদের মাদক দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতো। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঠিকাদারের কাজ আটকে দিতো।’

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, জুলফিকার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। পরে পড়াশোনা বাদ দিয়ে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করে সে। কিছুদিন পর পিকআপের হেলপারি শুরু করে নারায়ণগঞ্জে। তখন মালামাল চুরির দায়ে জেলার রূপগঞ্জ থানায় তার নামে মামলা হয়। এরপর সে পালিয়ে সৌদি আরব যায়। ২০২১ সালে দেশে আসার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। দুই মাস জেল খেটে জামিনে বের হয়। জেলে বসে হারুনের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে জুলফিকারের। জামিনে মুক্ত হয়ে হারুনকে নিয়ে মোহাম্মদপুরে টিউবওয়েলের মিস্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করে।’

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মোহাম্মদপুরে মাদক সেবনের আড্ডায় কৃষ্ণ শামছুদ্দিন ও সুরুজসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে জুলফিকারের ঘনিষ্ঠতা হয়। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ২০২২ সালে সে ডায়মন্ড নামে ওই কিশোর গ্যাং তৈরি করে। এই গ্যাংয়ের সদস্যদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য দিকনির্দেশনা ও অস্ত্র সরবরাহ করতে থাকে। পরে দে ধাক্কা নামে কিশোর গ্যাং বাহিনী গড়ে তোলে। বাহিনী দুটিকে দিকনির্দেশনা দিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করাতে থাকে। হারুন ২০২১ সালে আদাবর থানার একটি চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার হয়। পরে জামিনে বেরিয়ে জুলফিকারের সঙ্গে কিশোর গ্যাং পরিচালনা শুরু করে।’

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, ‘শামছুদ্দিন বেপারী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। কৃষ্ণ চন্দ্র দাস পেশায় চা-বিক্রেতা। সুরুজ মিয়া প্রাইভেটকার চালক। তারা সবাই মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি এলাকায় বসবাস করতো। এলাকায় মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। দৃশ্যমান পেশার আড়ালে তারা কিশোর গ্যাং পরিচালনা করতো। আসামিদের দ্বারা পরিচালিত কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেফতারে র‍্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা চলমান।’

/কেএইচ/আরকে/
সম্পর্কিত
গুলিস্তানে দুই জনের মৃত্যু, সন্দেহ ‘হিট স্ট্রোক’  
এসি বিক্রি বেড়েছে তিনগুণ, অনেক ব্রাঞ্চে ‘স্টক আউট’
এপি'র সাংবাদিককে গ্রেফতার করলো রাশিয়া
সর্বশেষ খবর
তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলো ইউক্রেন
তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলো ইউক্রেন
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
‘ধর্ষণে’ অসুস্থ স্কুলছাত্রীকে স্বামী পরিচয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে যুবকের পলায়ন
‘ধর্ষণে’ অসুস্থ স্কুলছাত্রীকে স্বামী পরিচয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে যুবকের পলায়ন
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে