পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ঢাকাকে বসবাসযোগ্য রাখতে আমাদের অন্তত কিছু স্থানকে সবুজায়ন করতে হবে। আমরা যখন রমনায় যাই অথবা ব্যোটানিক্যাল গার্ডেনে যাই, সেখানে অন্যান্য স্থানের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা কম থাকে। সে জন্য আমাদের স্যাটেলাইট ইমেজ তৈরি করে গাছ লাগানোর স্থান নির্ধারণ করতে হচ্ছে। নগর বনায়ন ও জলাভূমি রক্ষায় আমরা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও ঢাকার দুই মেয়রকে নিয়ে আলোচনায় বসে কাজ করবো।
রবিবার (১২ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলি চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ক্লাইমেট একশন প্ল্যানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
উন্নত বিশ্বের দেশগুলোকে উদ্দেশ করে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কার্বন নিঃসরণ শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ। সারা বিশ্বে যে কার্বণ নিসঃরণ সেটাতো আমরা তৈরি করিনি। এটার দায় আমাদের নেওয়ার কথা না। কিন্তু কী করবো! স্বল্পোন্নত দেশ হওয়ায় আমাদের ওপর যা খুশি তা চাপিয়ে দিতে পারে। আজ যদি জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ কোনোভাবে বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশ হতো, তাহলে একটার পর একটা নিষেধাজ্ঞা দিতো।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যে বর্তমান অর্থবছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে ২৫টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। এর জন্যে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এটিও যথেষ্ট নয়, আমাদের সবাইকে যুক্ত হয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে কাজ করতে হবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজ আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারছি কারণ আমরা পরিকল্পনা করি এবং তা বাস্তবায়ন করি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যা কিছু নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়, তা যেন পরিবেশবান্ধব হয়। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। বাংলাদেশে সমস্যা যেমন ঢাকাকে কেন্দ্র করেই হচ্ছে সমাধানও এখান থেকেই হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যে দায়ী, তাদের জলবায়ু নিয়ে পরিকল্পনায় টাকা দিতে হবে। আমাদের দেশ বন্যা-ক্ষরায় ভুগছে তাদের জন্যে। এর সমাধানে তারা কত টাকা দেয় আমরা দেখতে চাই।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তার নেতৃত্ব অনুসরণ করে আমরা পুরো ঢাকা শহরকে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যে প্রস্তুত করবো। ঢাকা সিটি করপোরেশন পরিবেশ রক্ষার জন্যে আলাদা বাজেট করবে এবং আমরা সবার সঙ্গে একসাথে কাজ করে যাবো।’
ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সি ফোরটি ও আইসিএলইআইর আয়োজনে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– গাজিপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং সি ফোরটি ও আইসিএলইআইর প্রতিনিধিরা।