রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাকে ‘অবশ্যই উচ্চাভিলাষী’ বলে জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত কর আদায়ের কার্যক্রম নিজেই শুরু করে সফল করার কথাও বলেছেন।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা উচ্চভিলাষী কি না- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই উচ্চাভিলাষী। আমি নিজেই বলেছি উচ্চভিলাষী। গত বছরের রাজস্ব আদায় বেশ নিম্নমানের ছিল। কিন্তু এর আগের বছর দুই ডিজিটের বেশি ছিল। সাত বছর ধরে এ মন্ত্রণালয়ে আছি। সাত বছরে রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা বহুগুণে বাড়ানো হয়েছে। কয়েক হাজার লোক নিয়োগ হয়েছে। নতুন নতুন অফিস করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এনবিআরে সক্ষমতা রয়েছে। এ জন্য আরও অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ কর আদায়ের প্রস্তাব করেছি। কিছু কাজ করতে হবে। জুন মাস থেকে সে কার্যক্রম শুরু হবে। আমি নিজেই এ কার্যক্রম শুরু করবো এবং এটা সফল করবো।
করপোরেট কর কমিয়ে উৎসে কর বাড়ানো হয়েছে, এতে কোনও লাভ হয়েছে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে সন্তুষ্ট। সুতরাং উৎসে কর বাড়ানোর পরিকল্পনা যৌক্তিক।
গত অর্থ বছরে ৮৭টি পণ্যের দাম কমানো হলেও সত্যিই দাম কমেছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, গত সাত বছর ধরে পণ্যের দাম বাড়ে না। এ বছর দাম কমছে। প্রধান কারণ দুটি। তেলের দাম বিশ্ববাজারে কম। ফলে সব পণ্যের দাম কম। এর প্রভাব অবশ্যই বাজারে থাকবে।
মোবাইলে কথা বলার ওপর ট্যাক্স বসানোর বিষয়ে প্রবীণ এ মন্ত্রী বলেন, আগে সিমের মাধ্যমে যে ট্যাক্স আসতো এখন তা আসে না। ১৩ কোটি মানুষের মোবাইল আছে। এর বেশি হবে না। তাই এখান থেকে আর বেশি আয় সম্ভব না। তাই কথা বলার ওপর ১ শতাংশ বেশি ট্যাক্স দিতে কেউ দ্বিমত করবেন না। এর মাধ্যমে একটু বেশি রাজস্ব আয় করতে পারবো।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দুটি দৈনিক পত্রিকার সমালোচনা করে বলেন, মানবজমিনের ১০ পৃষ্ঠায় আছে ‘নারীর উন্নয়নে জিডিপির ৪.৭ শতাংশ’। এর মতো নির্বোধ কমেন্ট আর কেউ করতে পারে না। এখনও মেয়েদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আমাদের দেশে ৫১ শতাংশ নারী। বাজেটে তাদের সেরকম শেয়ার। বাস্তবে সেরকম হয় না। শ্রমশক্তিতে তারা সমান নয়। বাজেটের ৩০ শতাংশ তাদের জন্য সবাই গ্রহণ করবেন।
যুগান্তরের একটি লেকার সমালোচনা করে মুহিত বলেন, দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে আছে। জাতিসংঘের কমিটি ঘোষণা দেয় কখন কোন দেশ মধ্যম আয়ের দেশ হলো। এটার সঙ্গে মধ্যম আয়ের দেশের কোনও সম্পর্ক নেই। কমিটির ২০১৮ সালে সভায় আমাদের অগ্রগতি স্বীকার করে তারা মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করবে।
আরও পড়ুন: প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ৮০ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত বিনিয়োগ লাগবে: সিপিডি
/এসএনএইচ/এজে/