X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নূর হোসেন, তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২২ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৫৩আপডেট : ২২ আগস্ট ২০১৭, ১৮:৩১

নূর হোসেন, তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও মাসুদ রানা নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় হাইকোর্টের রায়ে সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও মাসুদ রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রয়েছে। এছাড়া, রায়ে ১১ জনের যাবজ্জীবন ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে বিচারিক আদালতের রায়ে ৩৫ জন আসামির মধ্যে নূর হোসেন, তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

মৃত্যুদণ্ড বহালের আদেশপ্রাপ্ত বাকি ১১ আসামি হলো হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব আলী, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলিম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন ও সৈনিক তাজুল ইসলাম।

আদালতের রায়ে যে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তারা হলো- সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর, সার্জেন্ট এনামুল কবির, মর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, রহম আলী, আবুল বাশার, সেলিম, সানাউল্লাহ, শাজাহান ও জামাল উদ্দিন। বিচারিক আদালতে এই ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, কয়েকজনের জন্য পুরোবাহিনীকে দোষী করা যাবে না। যারা দোষ করেছে, তাদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার পর গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফ করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিষয়ে আপিল করা হবে কিনা, পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ তিনিও মনে করেন, ‘কয়েকজন ব্যক্তির দায় পুরো বাহিনীকে দেওয়া ঠিক হবে না।’

হাইকোর্টের রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী, নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী বিউটি বলেন, ‘ন্যায়বিচার পেয়েছি।’

রায় ঘোষণার পর ‘ভি’ চিহ্ন দেখাচ্ছেন নজরুলের স্ত্রী ও স্বজনরা আসামি পক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যাশা করেছিলাম আসামিরা খালাস পাবে। কিন্তু কেউ খালাস পায়নি। ন্যায়বিচার হয়েছে বলে আমরা মনে করি না।’

এর আগে, মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষ হয় ২৬ জুলাই। ওই দিন রায় ঘোষণার জন্য ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত। তবে সেদিন রায় ঘোষণা না করে ২২ আগস্টকে নতুন দিন ধার্য করা হয়।

মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ হলো আমাদের রক্ষা করা, সেখানে তারাই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। দেশে যত অপরাধ ঘটেছে, সব অপরাধের পরিসংখ্যান যদি নেওয়া হয় তবে এই অপরাধটি অপরাধ জগতের মাইলফলক হয়ে থাকবে।’
গত ২২মে সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নূর হোসেনসহ আসামিদের নিয়মিত ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেন, তারেক সাঈদসহ আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করে।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট আহসান উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরোয়ার কাজল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
বিচারিক আদালতের রায়ে এ মামলায় দণ্ডিত ৩৫ আসামির মধ্য ২৫ জনই র‌্যাবের সদস্য। তাদের মধ্যে ১৫ জন সেনাবাহিনী, দু’জন নৌবাহিনী ও আটজন পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে ছিলেন। ফৌজদারি অপরাধে একসঙ্গে এত র‌্যাব সদস্যদের সাজা এর আগে আর হয়নি। সাত খুনের মামলা হওয়ার পর তাদের সবাইকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে অপহরণ করা হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, স্বপনের গাড়ি চালক জাহাঙ্গীরকে । ঘটনা দেখে ফেলায় নজরুলের গাড়ির পেছনে থাকা আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমও অপহৃত হন। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে মেলে ছয়জনের লাশ। পরের দিন ভেসে ওঠে আরেকটি লাশ। মৃতদেহগুলো ইটভর্তি দুটি করে বস্তায় বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দু’টি মামলা করেন। একসঙ্গে দুই মামলার বিচার শেষে গত ১৬ জানুয়ারি রায় দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন।

আরও পড়ুন-

সাত খুন মামলার রায় পড়া চলছে

রায় যেন না বদলায়, প্রত্যাশা নিহতদের স্বজনের 

/ইউআই/এসটি/টিআর/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘“সুলতান পদক” পেয়ে আমি গর্বিত ও ধন্য’
‘“সুলতান পদক” পেয়ে আমি গর্বিত ও ধন্য’
বুয়েটকে হিজবুত তাহরীর-মুক্ত করতে ৬ শিক্ষার্থীর স্মারকলিপি
বুয়েটকে হিজবুত তাহরীর-মুক্ত করতে ৬ শিক্ষার্থীর স্মারকলিপি
বরুণের স্পিনের পর সল্ট ঝড়ে দিল্লিকে হারালো কলকাতা
বরুণের স্পিনের পর সল্ট ঝড়ে দিল্লিকে হারালো কলকাতা
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে