X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোতে দুর্বল মেডিক্যাল সেবা

চৌধুরী আকবর হোসেন
১৬ এপ্রিল ২০১৮, ১২:৫৪আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০১৮, ১৮:৫৭

বিমানবন্দরে দুর্বল মেডিক্যাল সেবা গত পাঁচ বছরে যাত্রী পরিবহনের হার দ্বিগুণের বেশি হলেও দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর বাড়েনি সক্ষমতা। বিশেষ করে যেকোনও দুর্ঘটনায় বা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নেই আধুনিক সুবিধার মেডিক্যাল সেন্টার। ফলে যেকোনও দুর্যোগে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়া নিয়ে বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। তবে সিভিল এভিয়েশন জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর সংস্কারসহ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সিভিল এভিয়েশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক সরঞ্জামসহ একটি স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট থাকতে হবে। একইসঙ্গে বিমানবন্দরের স্বাস্থ্যসেবা ইউনিটটি নিকটবর্তী বড় হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হয়। যেন যেকোনও সময়ে বিমানবন্দরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে পাঠানো যায়।’

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘তবে আইকাও কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর নিয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা রাখেনি। অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে দেশের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ যাত্রী পরিবহনের হারে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়। যাত্রী পরিবহনের হার অনুপাতে মেডিক্যাল ব্যবস্থা রাখা জরুরি। যাতে যেকোনও জরুরি মুহূর্তে যাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়।’

সিভিল এভিয়েশনের তথ্যমতে, দেশে সচল বিমানবন্দর রয়েছে আটটি। এরমধ্যে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তিনটি। শুধু অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য পাঁচটি বিমানবন্দর ব্যবহৃত হচ্ছে। এগুলো হলো- কক্সবাজার বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, বরিশাল বিমানবন্দর, রাজশাহীর শাহ মাখদুম বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর।

যশোর বিমানবন্দরে ফার্স্টএইড ব্যবস্থা থাকলেও নেই মেডিক্যাল সেন্টার। বিমানবন্দরটির ব্যবস্থাপক আলমগীর পাঠান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি রয়েছেন, যিনি ফার্স্টএইড কার্যক্রম পরিচালনা করেন। জরুরি কোনও প্রয়োজন হলে যেন প্রাথমিক ব্যবস্থা নিয়ে হাসপাতালে পাঠানো যায়।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অবস্থাও একই রকম। সেখানে একজন চিকিৎসক থাকলেও মেডিক্যাল সেন্টার নেই। বিমানবন্দরটির ব্যবস্থাপক শাহীন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের এখানে একজন চিকিৎসক আছেন। তিনি একটি কক্ষে বসেন। তবে আলাদা করে মেডিক্যাল সেন্টার নেই। তবে সামগ্রিকভাবে বিমানবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে, তখন এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

রাজশাহীর শাহ মাখদুম বিমানবন্দরে একজন মেডিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট ও ফার্স্টএইড ক্রু থাকলেও মেডিক্যাল সেন্টার নেই। বিমানবন্দরটির ব্যবস্থাপক সেতাফুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমান অবকাঠামোতে অনেক কিছু করা সম্ভব নয়। তবে অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তখন একটি বিমানবন্দরে যেসব সুবিধা দরকার তা নিশ্চিত করা হবে।’

সিভিল এভিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছরে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী পরিবহনের হার দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। ২০১৩ সালে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ১২ হাজার ৫২৬টি ফ্লাইটে ছয় লাখ ৪৮ হাজার ১৯ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। ২০১৪ সালে ২৪ হাজার ১২৭টি ফ্লাইটে ছয় লাখ ৮৫ হাজার ১৯৮ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। ২০১৫ সালে ৩২ হাজার ২১২টি ফ্লাইটে নয় লাখ ১২ হাজার ৬৪৪ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। ২০১৬ সালে ৩৮ হাজার ২০টি ফ্লাইটে ১০ লাখ তিন হাজার ৩১ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। আর ২০১৭ সালে ৩৮ হাজার ৫৭টি ফ্লাইটে যাতায়াত করেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ জন যাত্রী।

দ্রুত এসব সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটির সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর সংস্কার কাজ ও নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সব বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বাড়ানোসহ মেডিক্যাল সার্ভিস বৃদ্ধি করা হবে।

 

 

/এইচআই/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নিখোঁজের দুই দিন পর মেঘনায় মিললো যুবকের মরদেহ
নিখোঁজের দুই দিন পর মেঘনায় মিললো যুবকের মরদেহ
আম আদমি পার্টির সাথে জোট, দিল্লি কংগ্রেস প্রধানের পদত্যাগ
আম আদমি পার্টির সাথে জোট, দিল্লি কংগ্রেস প্রধানের পদত্যাগ
কোটালীপাড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কোটালীপাড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
৩৫ হাজার রিকশাচালককে ছাতা দেবে ডিএনসিসি
৩৫ হাজার রিকশাচালককে ছাতা দেবে ডিএনসিসি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে