X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

দায়িত্ব ভুলে গেছেন ঢাকা দক্ষিণের ৯ কাউন্সিলর!

শাহেদ শফিক
০১ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৪২আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০১৯, ২৩:৩৩

ওপরে বাঁ থেকে: মো. আশরাফুজ্জামান, এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ, গোলাম আশরাফ তালুকদার, মোস্তফা জামান (পপি), মো. তরিকুল ইসলাম সজীব, নিচে বাঁ থেকে: মো. হাসান, মো. বিল্লাল শাহ, ময়নুল হক মঞ্জু ও রাশিদা পারভীন (মণি)

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-ডিএসসিসি’র ৯ জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে করপোরেশনের বোর্ড সভায় একনাগাড়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি করপোরেশনের বিভিন্ন কাজে তাদের দায়িত্ব পালনে অনীহা দেখা যাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের অনেকেই নিজ নিজ ওয়ার্ডের নাগরিকদের সমস্যায় এগিয়ে আসেন না। কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকেই তারা নিজের দায়িত্বও ভুলে গেছেন।

এছাড়া অনুপস্থিত থাকা এই কাউন্সিলরদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ও জুয়াসহ এলাকায় নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে কাউন্সিলরদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, তাদের কোনও কাজ না দেওয়ায় এবং ঠিকাদারের কাজে স্বাক্ষর দিতে না পারায় তারা অভিমান করে বোর্ড সভায় যোগ দিচ্ছেন না।

জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৮ মার্চ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে ডিএসসিসিতে মোট ১৯টি সভা অনুষ্ঠিত হলেও উল্লিখিত কাউন্সিলররা তাতে একাধারে তিন থেকে আটটি পর্যন্ত বোর্ড সভায় অনুপস্থিত থেকেছেন। কেউ কেউ ১৪-১৫টি সভায় অনুপস্থিত রয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই-একজন দুই-একবার ছাড়া বাকিরা অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে কেউ পূর্বানুমতিও নেননি। এরই মধ্যে একাধারে করপোরেশন সভায় অনুপস্থিত কাউন্সিলরদের একটি তালিকা করেছে ডিএসসিসি। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওই তালিকা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতে পারে। আইন অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকলে তাকে বরখাস্ত করা যাবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পুরনো ৫৭টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মধ্যে ৯ জন করপোরেশনের নিয়মিত বোর্ড সভায় অনুপস্থিত থাকেন। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, তাদের বেশিরভাগই নগরীতে অবৈধ ক্যাসিনো, জুয়ার আসর ও ফুটপাতের অবৈধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। রাতভর তারা এসব অপকর্ম করেন, আর দিনের বেলা ঘুমিয়ে কাটান। করপোরেশনের বোর্ড সভাগুলো যেহেতু দিনে অনুষ্ঠিত হয়, সে কারণেই তারা উপস্থিত থাকতে পারেন না। অভিযোগ আছে, এই কাউন্সিলরদের অনেকেই সরকারের অনুমোদন না নিয়ে একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।

নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করেন না যারা

তারা জনপ্রতিনিধি হলেও নিজেরা নিয়ম মেনে চলেন না। এই কাউন্সিলররা হলেন— ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আশরাফুজ্জামান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাঈদ, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম আশরাফ তালুকদার, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোস্তফা জামান (পপি), ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. তরিকুল ইসলাম সজীব, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. হাসান, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. বিল্লাল শাহ, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জু ও সংরক্ষিত আসনে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাশিদা পারভীন (মণি)।

বোর্ড সভায় অনুপস্থিতির বিষয়ে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আশরাফুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য কয়েকবার দেশের বাইরে ছিলাম। এজন্য আমি কয়েকটি সভায় উপস্থিত থাকতে পারিনি। নানা কারণে সভার কথা জানতেও পারি না।’ তিনি দাবি করেন, ‘আমি কোনও ক্যাসিনো, মদ, জুয়া, দখলবাজিসহ কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত নই।’

ডিএসসিসির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাঈদ করপোরেশনে অনুষ্ঠিত ১৯টি সভার মধ্যে ছয়টি বোর্ড সভায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, সপ্তম থেকে দশম, ১২তম থেকে ১৭তম পর্যন্ত মোট ১৩টি সভায় উপস্থিত ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মন্ত্রণালয়ের পূর্ব অনুমতি ছাড়া অনেকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ২৫ জুন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবরে চিঠি দিয়েছেন। এরপর ১ জুলাই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আ ন ম ফয়জুল হক তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাকে এ নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।

মন্ত্রণালয়ের নোটিশের জবাবে কাউন্সিলর সাঈদ জানান, একনাগাড়ে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি সঠিক নয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত। শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে যে কয়টি সভায় অনুপস্থিত ছিলেন, সেটি নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত। এরপর তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসসিসির সুপারিশে হজ ও চিকিৎসার জন্য কাউন্সিলর সাঈদকে ২৫ দিনের ছুটি দেয় মন্ত্রণালয়।

কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করায় অভিযোগ সম্পর্কে তার বক্তব্য জানা যায়নি।

১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম আশরাফ তালুকদার ১২তম বোর্ড সভা থেকে পরবর্তী ৮টি সভায় অনুপস্থিত রয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনি ডিএসসিসির ১২টি বোর্ড সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় নাগরিকদের অভিযোগ, কাউন্সিলর গোলাম আশরাফ করপোরেশনের কোনও কাজেই আন্তরিকভাবে অংশ নেন না। এলাকার উন্নয়নেও ভূমিকা রাখেন না। বিভিন্ন সনদের জন্য তার কার্যালয়ে গেলেও তার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম আশরাফ তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক সময় দেখা গেছে, যখন বোর্ড সভা ডাকা হয় তখন আমাদের ফোন বন্ধ থাকে, বা জরুরি কাজ থাকে। সে কারণে সভায় উপস্থিত থাকা সম্ভব হয় না। আমিসহ যেসব কাউন্সিলর সভায় নিয়মিত উপস্থিত হতে পারি না, করপোরেশনের উচিত তাদের নোটিশ করে জানিয়ে দেওয়া। তবে স্থানীয়রা যে অভিযোগ করেছে, সেটা সঠিক নয়। কারণ, আমি আমার এলাকার নাগরিকদের যেকোনও সমস্যা সমাধানে কাজ করি।’

১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোস্তফা জামান (পপি) করপোরেশনের ১৯টি বোর্ড সভার মধ্যে ১১টিতে অনুপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকে তার দেখা পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ কাজের সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। কোনও সামাজিক কাজে তাকে পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে জানতে দুই দিন ধরে কাউন্সিলর পপিকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন জানান, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলার পর থেকে মোস্তফা জামান (পপি) আত্মগোপনে রয়েছেন। কারও ফোনও ধরছেন না।

২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. তরিকুল ইসলাম সজীব ডিএসসিসির সপ্তম বোর্ড সভা থেকে শুরু করে ১৩তম বোর্ড সভা পর্যন্ত একনাগাড়ে সাতটিসহ মোট ১১টি সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এলাকায় মাদক, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত আছেন এই জনপ্রতিনিধি। করপোরেশনের কোনও প্রয়োজনে তাকে পাওয়া যায় না। তিনি প্রতিটি কাজে অনাগ্রহ দেখান। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে তিন দিন ধরে একাধিকবার ফোন করেও কাউন্সিলর সজীবের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হাসান একনাগাড়ে প্রথম ৫টি সভায় উপস্থিত থাকলেও পরের ১৪টি সভার মধ্যে মাত্র একটিতে উপস্থিত ছিলেন। সব মিলিয়ে তিনি ১৩টি সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ভাগিনা।

বাংলা ট্রিবিউনকে মো. হাসান বলেন, ‘আমি একজন ব্যবসায়ী। বিভিন্ন সময়ে দেশের বাইরে থাকতে হয়। হঠাৎ করে যখন বোর্ড সভা ডাকা হয়, তখন হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হয় না। তবে কাউন্সিলর হিসেবে আমার যেসব দায়িত্ব রয়েছে, সেগুলো আমি নিয়মিত পালনের চেষ্টা করি। অন্যান্য ওয়ার্ডের চেয়ে আমার ওয়ার্ডে অনেক উন্নয়ন হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘হাজী সেলিম সাহেব আমার মামা। আমাদের একটা পারিবারিক ঐতিহ্য আছে। আমরা সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করছি।’ 

৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. বিল্লাল শাহ করপোরেশনের ১১টি বোর্ড সভায় উপস্থিত ছিলেন না। যদিও বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে আমি মাত্র দুই থেকে তিনটি বোর্ড সভায় অনুপস্থিত ছিলাম। কারণ, আমি একজন অসুস্থ মানুষ। আমার অপারেশন হয়েছে। এখন বাসায় পড়ে আছি।’

৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জু করপোরেশনের ১৯টি বোর্ড সভার মধ্যে মাত্র ৪টি সভায় উপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিতির তালিকায় তার অবস্থান সবার ওপরে। জানা গেছে, ওয়ার্ডের সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে এই কাউন্সিলরের তেমন কোনও সম্পর্ক নেই। ময়নুল হক মঞ্জু এর আগে ১৯৯৪ সালেও ওই ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন।

বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘বোর্ড সভায় উপস্থিত না থাকার বিষয়টি সত্য। তবে আমি অভিমান করেই সভায় উপস্থিত হচ্ছি না। কারণ, ওইসব সভায় গিয়ে কোনও কথা বলা যায় না। এরপরেও আমি এলাকাবাসীর সব কাজে অংশ নিই। এর আগেও আমি কমিশনার ছিলাম। তখন এলাকার উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের বিল ভাউচারে আমাদের সই-স্বাক্ষর নেওয়া হতো। কিন্তু এখন সেসব নেই। ঠিকাদাররা কাজের শেষে বিল নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের যে একটা দায়িত্ব আছে, সেটি পালন করতে পারি না। আর বোর্ড সভায় কোনও কথা বলা যায় না। আমাদের কথা শোনা হয় না। সে কারণেই অনেকটা অভিমান করে যাচ্ছি না।’

সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের পাশাপাশি সংরক্ষিত ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাশিদা পারভীন (মণি) ১১টি সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। তবে কী কারণে তার এই অনুপস্থিতি তা জানতে মণির ব্যবহৃত দুটি নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু দুটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।

স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন আইনে বলা হয়েছে, মেয়র অথবা কাউন্সিলর তার স্বীয় পদ হতে অপসারণযোগ্য হবেন, ‘যদি তিনি যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে সিটি করপোরেশনের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন।’ দেখা যাচ্ছে, উল্লিখিত ৯ জন কাউন্সিলর একাধারে তিনটি থেকে শুরু করে আটটি সভা পর্যন্ত অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এখনও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এছাড়া, বিদেশ ভ্রমণের বিষয়ে ২০১১ সালের ১৯ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জরি করা পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার পরিষদ/পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর সদস্যরা, সিটি করপোরেশনের কমিশনাররা এবং পৌরসভার মেয়ররা বিদেশ ভ্রমণে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর অনুমোদন নেবেন।’ কিন্তু আলোচিত কাউন্সিলররা বিদেশে গেলেও মন্ত্রণালয়ের কোনও অনুমোদন নেননি।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যদি কোনও কাউন্সিলর একাধারে করপোরেশনের তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে প্রথমে তাকে নোটিশ করে পরে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেবে। মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এ কারণে তাদের অপসারণও করা যাবে। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটার পরেও কেন তারা আইনের আওতায় আসছে না, বিষয়টি হতাশাজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিলে সই দেওয়ার ক্ষমতা না থাকার কারণে অভিমান করে বোর্ড সভায় আসবেন না, এটা হতে পারে না। কাউন্সিলররা তো বিলে সই করার কথা না। সই করবেন ইঞ্জিনিয়াররা। বিলে সই করার অর্থ হচ্ছে কমিশনের একটা বিষয় থাকা। তাদের কাজ হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নেওয়া। এলাকার উন্নয়ন বা বাজেট বিষয়ে আলোচনা করা। কিন্তু সেটা হচ্ছে কিনা সেটিও দেখতে হবে।’

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর বোর্ড সভায় নিয়মিত উপস্থিত হন না, এটা সত্য। আমরা এরইমধ্যে তাদের বহুবার সতর্ক করেছি। একজনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়েও লিখিতভাবেও অভিযোগ জানিয়েছি। তিনি যাতে অনুমতি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ করতে না পারেন, সেজন্য আমরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকেও চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। আরও বেশ কয়েকজন করপোরেশনের বোর্ড সভায় নিয়মিত অনুপস্থিত থাকেন।’

স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি সম্পর্কে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি নির্ভর করছে সিটি করপোরেশনের ওপর। করপোরেশন যদি লিখিতভাবে অভিযোগ করে, তাহলে মন্ত্রণালয় সেটি তদন্ত করে দেখবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকে আত্মপক্ষ সমর্পণের সুযোগ দেওয়া হবে। যদি তা গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে তাকে বরখাস্ত করা যাবে।’

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একজন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ এসেছে। আমরা তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও করেছি। তিনি জবাব দিয়েছেন। এছাড়া বাকিদের বিষয়ে করপোরেশন থেকে এখনও কোনও অভিযোগ আসেনি। যদি অভিযোগ আসে, তাহলে আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’

/এপিএইচ/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ